ঢাকা ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

ডেইলি আর্থ অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / 4

পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশন এক বার্তায় জানিয়েছে, “অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৭-২৮ এপ্রিল নির্ধারিত বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছেন। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সফরের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।”

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, কাশ্মীর হামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দার নিজেই ঢাকা ও কাবুল সফর স্থগিতের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার পুনর্বিন্যাস করতে হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ১৬ এপ্রিল দীর্ঘ দেড় দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল সফরকালে ইসহাক দারের ঢাকা সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।

কিন্তু এর মধ্যেই পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ), যা পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা বলে পরিচিত।

এই ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সার্ক ভিসা স্কিমের আওতায় পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি।

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত, এমনকি স্থগিত করা হয়েছে ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তিও।

জবাবে ইসলামাবাদ থেকেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে, বাতিল করেছে কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং আকাশসীমা ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

এই কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই ঢাকা সফর বাতিল করলেন পাকিস্তানের শীর্ষ কূটনীতিক।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের টানা শাসনামলে যুদ্ধাপরাধ বিচারসহ নানা কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়।

তবে শেখ হাসিনার শাসনাবসানের পর অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতিসংঘ অধিবেশনে অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, অতীতের টানাপোড়েন পেছনে ফেলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ‘স্বাভাবিক ও পারস্পরিক সম্মানপূর্ণ সম্পর্ক’ চায়।

তবে কাশ্মীর ইস্যু কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক এই উত্তেজনা সেই প্রচেষ্টাকে আপাতত স্থবির করে দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

আপডেট সময় : ০৮:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশন এক বার্তায় জানিয়েছে, “অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৭-২৮ এপ্রিল নির্ধারিত বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছেন। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সফরের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।”

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, কাশ্মীর হামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দার নিজেই ঢাকা ও কাবুল সফর স্থগিতের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার পুনর্বিন্যাস করতে হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ১৬ এপ্রিল দীর্ঘ দেড় দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল সফরকালে ইসহাক দারের ঢাকা সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।

কিন্তু এর মধ্যেই পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ), যা পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা বলে পরিচিত।

এই ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সার্ক ভিসা স্কিমের আওতায় পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লি।

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত, এমনকি স্থগিত করা হয়েছে ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তিও।

জবাবে ইসলামাবাদ থেকেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে, বাতিল করেছে কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং আকাশসীমা ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

এই কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই ঢাকা সফর বাতিল করলেন পাকিস্তানের শীর্ষ কূটনীতিক।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের টানা শাসনামলে যুদ্ধাপরাধ বিচারসহ নানা কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়।

তবে শেখ হাসিনার শাসনাবসানের পর অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতিসংঘ অধিবেশনে অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, অতীতের টানাপোড়েন পেছনে ফেলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে ‘স্বাভাবিক ও পারস্পরিক সম্মানপূর্ণ সম্পর্ক’ চায়।

তবে কাশ্মীর ইস্যু কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক এই উত্তেজনা সেই প্রচেষ্টাকে আপাতত স্থবির করে দিয়েছে।