ঢাকা ০১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

ডুবে গেছে ভোলার অনেক এলাকা, বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৬:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
  • / 82
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ভোলার অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার চরফ্যাশন উপজেলায়। প্লাবিত হয়ে জেলায় ২০ হাজার মানুষ ঘরবন্দি রয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

জানা যায়, সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রামদাসপুর, ভোলার চর, কানিবগার চর, চর মোহাম্মদ; চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়ন; লালমোহন উপজেলার চর কচুয়া, চর শাহাজালাল; তজুমদ্দিন উপজেলার চর মোজাম্মেল, চর জহিরুদ্দিন; বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুরসহ ৭৪টি দুর্গম চরাঞ্চলে ২০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা দুর্যোগকালীন কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ভোলার আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ ও প্রায় দুই হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়।

রাত ৯টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত জেলার কোথাও মাঝারি কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলার কুকরিমুকরি ও ঢালচরে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাত ১২টায় বৃষ্টি না থাকলেও দমকা হাওয়া বইছে। রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে পুরো জেলা অন্ধকারে নিমজ্জিত।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের নগদ ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া চাল রয়েছে ২২২ টন, ঢেউটিন ২১৪ বান্ডিল, গৃহ নির্মাণ বাবদ ছয় লাখ ৪২ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার দুই হাজার ২২৩ প্যাকেট রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি। বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ওই সব উপকূলের মানুষকে নিরাপদে আনা হয়েছে।

‘সিডরের পর এমন ঘূর্ণিঝড় আর দেখিনি’

বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়াদের একজন সীমা আক্তার। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ছোট পোটকাখালী গ্রামের এই বাসিন্দার ঘরে পানি উঠেছে কোমর সমান। তাই প্রাণে বাঁচতে রাতে দেড়টার দিকে কোনরকমে ছুটে এসে আশ্রয় নিয়েছেন পোটকাখালী সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে। তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও তার মন পড়ে রয়েছে বাড়িতে। জলোচ্ছ্বাসে তার ঘর ভাসিয়ে নেয়ার শঙ্কায় ছটফট করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পানির তীব্র স্রোত উপেক্ষা করে কোনরকমে আমি আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। ঘরে সব মালামাল পড়ে রয়েছে। পানির যে চাপ দেখেছি – তাতে বাড়ি গিয়ে আমাদের ঘর আর খুঁজে পাই কিনা সন্দেহ আছে। তাই দুশ্চিন্তায় আছি। সিডরের পর এমন ঘূর্ণিঝড় আমি আর দেখিনি। আমাদের এদিকে এতোবড় ঝড় আর হয়নি।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

ডুবে গেছে ভোলার অনেক এলাকা, বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

আপডেট সময় : ০৩:৪৬:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪

 

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ভোলার অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জেলার চরফ্যাশন উপজেলায়। প্লাবিত হয়ে জেলায় ২০ হাজার মানুষ ঘরবন্দি রয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

জানা যায়, সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রামদাসপুর, ভোলার চর, কানিবগার চর, চর মোহাম্মদ; চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়ন; লালমোহন উপজেলার চর কচুয়া, চর শাহাজালাল; তজুমদ্দিন উপজেলার চর মোজাম্মেল, চর জহিরুদ্দিন; বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুরসহ ৭৪টি দুর্গম চরাঞ্চলে ২০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা দুর্যোগকালীন কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ভোলার আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ ও প্রায় দুই হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়।

রাত ৯টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত জেলার কোথাও মাঝারি কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলার কুকরিমুকরি ও ঢালচরে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাত ১২টায় বৃষ্টি না থাকলেও দমকা হাওয়া বইছে। রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে পুরো জেলা অন্ধকারে নিমজ্জিত।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের নগদ ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া চাল রয়েছে ২২২ টন, ঢেউটিন ২১৪ বান্ডিল, গৃহ নির্মাণ বাবদ ছয় লাখ ৪২ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার দুই হাজার ২২৩ প্যাকেট রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি। বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ওই সব উপকূলের মানুষকে নিরাপদে আনা হয়েছে।

‘সিডরের পর এমন ঘূর্ণিঝড় আর দেখিনি’

বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়াদের একজন সীমা আক্তার। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ছোট পোটকাখালী গ্রামের এই বাসিন্দার ঘরে পানি উঠেছে কোমর সমান। তাই প্রাণে বাঁচতে রাতে দেড়টার দিকে কোনরকমে ছুটে এসে আশ্রয় নিয়েছেন পোটকাখালী সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে। তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও তার মন পড়ে রয়েছে বাড়িতে। জলোচ্ছ্বাসে তার ঘর ভাসিয়ে নেয়ার শঙ্কায় ছটফট করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘পানির তীব্র স্রোত উপেক্ষা করে কোনরকমে আমি আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। ঘরে সব মালামাল পড়ে রয়েছে। পানির যে চাপ দেখেছি – তাতে বাড়ি গিয়ে আমাদের ঘর আর খুঁজে পাই কিনা সন্দেহ আছে। তাই দুশ্চিন্তায় আছি। সিডরের পর এমন ঘূর্ণিঝড় আমি আর দেখিনি। আমাদের এদিকে এতোবড় ঝড় আর হয়নি।’