চর্ম রোগের প্রাদুর্ভাব
বন্যার পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ
- আপডেট সময় : ১০:১২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
- / 53
দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এতে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও জনসাধারণের দুর্ভোগ কমেনি। দুর্গত এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকটসহ চর্মরোগ এবং নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দিয়েছে।
সিলেট ও গাইবান্ধায় বন্যার পানি নামছে ধীরে ধীরে। এখনও বানভাসীরা বাড়ি ফিরতে পারেনি বরং বেড়েছে দুর্ভোগ। চর্ম রোগসহ পানিবাহিত নানান রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। টাঙ্গাইলে সব নদীর পানি আবারও বেড়েছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সিলেটে বন্যার পানি ধীরে নামছে। তবে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কানাইঘাট, অমলসীদ ও ফেঞ্চুগঞ্জে নদনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
তিস্তা-যমুনা ব্রহ্মপুত্র ঘাঘটসহ গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে চরাঞ্চলের বাড়িঘরে এখনও কোথাও হাঁটু ও কোমরপানি। ফলে গবাদী পশু ও মানুষ কেউ বাড়ি ফিরে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। র্দীঘদিন পানবন্দি থাকায় এসব এলাকায় চর্মরোগসহ পানিবাহিত নানান রোগের প্রার্দুভাব শুরু হয়েছে। দগদগে ঘা ও চর্মরোগ নিয়ে তারা কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছেন।
বৃহস্পতিবার থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে টাঙ্গাইলের সব নদীর পানি আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যমুনা, ঝিনাই, ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার ও বাসাইল উপজেলার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ফসলী জমি তলিয়ে গেছে।
চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষগুলো এবং দেখা দিয়েছে মানুষের নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও নিরাপদ স্যানিটেশন।
জেলার ৬টি উপজেলায় এখনও ৪৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবন যাপন করছেন। এদিকে বন্যার কারণে জেলার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এরমধ্যে গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি দ্রুত কমায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে এখনও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও করতোয়ার পানি ১০ ও তিস্তা নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুর্গত এলাকায় দুই সপ্তাহ ধরে কাদাপানি জমে থাকায় চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে। অধিকাংশ বাড়িঘর ও আঙ্গিনায় এখনও পানি জমে থাকায় ঘরে ফিরতে পারছে না মানুষ।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি গত ১২ দিন ধরে ৩টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দূর্ভোগ কমেনি বানভাসীদের। দুর্গত এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকটে পড়েছে বানভাসীরা। দুই সপ্তাহেরও অধিক সময় ধরে নিম্নাঞ্চলে ৫৫ ইউনিয়নের ৪শতাধিক গ্রামের প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।
সিরাজগঞ্জে কমছে যমুনা নদীর পানি, তবে পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। প্লাবিত এলাকায় বাড়ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়ন এ মুহুর্তে বন্যা কবলিত অবস্থায় রয়েছে। কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙ্গন।
জামালপুরে যমুনা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। দুর্গত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন