বাজার মনিটরিংয়ে শিক্ষার্থীরা
নেই চাঁদাবাজি, কমছে নিত্যপণ্যের দাম
- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪
- / 71
স্বস্তি ফিরছে নিত্যপণ্যের বাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম আরো কমেছে। দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসও। তবে চালের দাম কমেনি।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পণ্য পরিবহনে গত কয়েক দিন ধরে তাদের কোনো চাঁদা দিতে হচ্ছে না। এমনকি বাজারে আগে বিভিন্ন সংগঠনকে চাঁদা দিতে হতো, এখন সেসবেরও উৎপাত নেই।
এছাড়া, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পণ্যের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলেও এখন তা নেই। এসব কারণে পণ্যের দাম কমছে। এদিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিংয়ে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙানো হয়েছে কিনা, ব্যবসায়ীরা
যৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি করছে কিনা এসব দেখার পাশাপাশি ট্রেড লাইসেন্স ও দোকানের সামনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি তদারকি করছেন। বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ কাজকে বিক্রেতাদের পাশাপাশি বাজার করতে আসা ক্রেতারাও বেশ প্রশংসা করছেন।
শিক্ষার্থীদের এই সচেতনতামূলক বাজার মনিটরিং কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান। তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে আমাদের। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার সময় এখনই।
বাজার মনিটরিংয়ে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরিফ এ প্রসঙ্গে গতকাল জানান, বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজিসহ বিভিন্ন কারণে ভোক্তারা কষ্ট পান।
আমরা চাই, দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিবর্তনের পাশাপাশি বাজারেও পরিবর্তন আসুক। যাতে ভোক্তারা স্বস্তি পান। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে আমরা দেখেছি, সুপারশপে ও খুচরা বাজারে পণ্যের দামে বেশ ব্যবধান রয়েছে। কেন এই ব্যবধান তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতিমধ্যে সবজিসহ কিছু কিছু পণ্যের দাম কমে আসছে বলে তিনি জানান।
গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে পেঁপে, পটোল, ঢ্যাঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া, করল্লা, কচুমুখি, বেগুন, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। কাঁকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, টম্যাটো ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঝিঙা ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত এক মাসের ব্যবধানে সবজিভেদে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কম।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ৪০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া, পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, আগে পণ্য পরিবহনে রাস্তাঘাটে চাঁদা দিতে হতো। কিন্তু এখন চাঁদাবাজি নেই। সবজির দাম কমার এটি একটি বড় কারণ।
সবজির পাশাপাশি খুচরা বাজারে ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দামও কমেছে। গতকাল বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৫০ টাকা ও সাদা ডিম ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা গত সপ্তাহেও ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ডজন বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া, কেজিতে ১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। যা দুই সপ্তাহ আগে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে চাষের রুই ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১৫০০ টাকা, পাঙাশ ১৬০ থেকে ২১০ টাকা, মাগুর ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা ও এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজার মনিটরিংয়ে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরিফ বলেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা ব্যবসায়ীদের মাছ কিনতে আড়তদারি দিতে হয়।
এটা মাছভেদে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আড়তদারি কমানো হলে মাছের দাম কমবে।
নিউজটি শেয়ার করুন