ভোগান্তিতে যাত্রীরা
আগারগাঁও–মতিঝিল অংশে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ
- আপডেট সময় : ১২:০০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 58
রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আজ বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আসছে মেট্রোরেল। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল যাচ্ছে না। তাই যাত্রীরা আগারগাঁও স্টেশনে নেমে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এরপর তাঁরা হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
রাজধানীর দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেলের রেলপথের ভায়াডাক্টের একটি অংশে স্প্রিং সরে যাওয়ার ঘটনায় আংশিক রুটে বন্ধ রয়েছে মেট্রোরেল চলাচল। স্প্রিং সরে যাওয়ায় ভায়াডাক্টের রুট অ্যালাইনমেন্ট কিছুটা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। ফলে মেট্রোরেল চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, রাজধানীর ফার্মগেট ও বিজয় সরণির মাঝামাঝি এলাকায় মেট্রোরেলের রেলপথের একটি অংশের ভায়াডাক্ট দেবে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে আগারগাঁও-মতিঝিল-আগারগাঁও রুটের মেট্রো ট্রেন চলাচল। এটি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এ রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশনের পরে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের সামনের একটি পিলারের ওপরের ভায়াডাক্টের চারটি স্প্রিং থেকে একটি স্প্রিং সরে গেছে। ফলে সেখানে রুট অ্যালাইনমেন্ট উঁচু-নিচু হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, এটিকে স্প্রিং নয়, বিয়ারিং প্যাড বলা হয়। কোনো কারণে বিয়ারিং প্যাডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে বা বিয়ারিং প্যাড সেখান থেকে পড়ে গেছে। না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না।
এ বিষয়ে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের একটা টেকনিক্যাল ফল্ট হয়েছে। সেটি সারানোর কাজ চলছে। ঘণ্টা দেড় থেকে দুই লাগতে পারে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
কী টেকনিক্যাল ফল্ট– জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিলারের ওপরে ভায়াডাক্টে কারিগরিভাবে চারটা স্প্রিং থাকে। এর মধ্যে একটি স্প্রিং ডিসপ্লেস ওয়েতে দেখা যাচ্ছে। আমরা বিষয়টি আইডেন্টিফাই করতে পেরেছি। এর মধ্যে ট্রেন চালানো যায়, তবে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি সমাধান করে তারপর ট্রেন চালানো হবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, হয়ত বিয়ারিং প্যাডের ফাংশন নষ্ট হয়ে গেছে। বিয়ারিং প্যাডের কাজটা হচ্ছে যখন গাড়ি এটির ওপর দিয়ে যায়, তখন কিছুটা সংকুচিত হয়ে গাড়ি চলে যাওয়ার পর সেটি আগের জায়গায় ফিরে আসবে।
যেহেতু ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভায়াডাক্ট আগের জায়গায় ফিরে আসেনি, সেহেতু বিয়ারিং প্যাডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে নয়তো বিয়ারিং প্যাড এখান থেকে পড়ে গেছে। ভায়াডাক্টের সঙ্গে এই জায়গাটা হচ্ছে একটা জয়েন্ট। এখান থেকে যদি বিয়ারিং প্যাড রিলিজ হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু পিলার ভেঙে যাবে। তাই ভায়াডাক্টকে ফ্লেক্সিবল রাখার জন্যই এই বিয়ারিং প্যাড ব্যবহার করা হয়। এই দুটির একটি ঘটনা না ঘটলে এমনভাবে ভায়াডাক্ট বসে যাওয়ার কথা না।
এত অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ারিং প্যাড নষ্ট হয়ে যেতে পারে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টা আমার কাছে একেবারেই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। কারণ বিয়ারিং প্যাড শুধু গাড়ির লোড না, ভূমিকম্পের সময়ও কাজ করে। এই বিয়ারিং প্যাড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি বিয়ারিং প্যাড লার্জ স্কেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই এখানে বসানো হয়েছে। তারপরও এমন ঘটনা কেন ঘটল সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা দরকার।
নিউজটি শেয়ার করুন