ঢাকা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

কড়া নিরাপত্তায় খুলেছে আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 53
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পোশাক কারখানাগুলোতে পুরোদমে উৎপাদন চলছে। মাত্র ২৮টি ব্যতীত সব কারখানায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন শ্রমিকরা।

আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় শ্রমিকদের সংঘর্ষ রোকেয়া বেগম নামের এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শিল্পাঞ্চলজুড়ে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক হাজার ৮৬৩ কারখানার মধ্যে এক হাজার ৬৭০টি খোলা থাকলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত ২৮টি কারখানা এখনও খোলেনি। এ নিয়ে শিল্পাঞ্চলে বন্ধ রয়েছে ১৯৩টি কারখানা।

শ্রম আইনের ১৩ এর ১ ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা কোনো বেতন পাবেন না।

বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, টানা অস্থিরতার কারণে যেসব কারখানা বন্ধ করা হয়েছিল, আস্থার‌ অভাবে মালিকরা আর খোলেননি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তবেই কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভারতীয় মালিকানাধীন পাল গার্মেন্টস ৭৫ শ্রমিককে বরখাস্ত করায় অসন্তোষ বিরাজ করছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, অসাধারণ এর অভিযোগে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকরা বলছেন, দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করার কারণে তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম।

শিল্পাঞ্চল ঘিরে রয়েছে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র‍্যাব বিজিবি ও সেনা সদস্যদের তৎপরতা।

সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের সমিতি বিজিএমইএ।

সংগঠনটির সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন। বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদেশ দান ও শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্পণ করায় তৈরি পোশাক খাত আরও সুরক্ষিত হবে।

এদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়ন রয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র‍্যাব, পুলিশের রায়ট কার ও জলকামান। পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল অস্থিতিশীলতার নেপথ্যে থাকা ইন্ধনদাতাদের বিষয়েও বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স।

এদিকে, মঙ্গলবারের সংঘর্ষ নিহত তৈরি পোশাক শ্রমিক রোকেয়া বেগমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহিল রাকিব।

এদিকে, আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় বন্ধ থাকা মাসকট গার্মেন্টস আগামী শনিবার খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নিহত রোকেয়া বেগম ছিলেন মাসকট নিটস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর। গতকাল মঙ্গলবার কাজে যোগ দিতে এসে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মাসকট নিটস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তারা পার্শ্ববর্তী রেডিয়েন্স ও সাউদার্ন কারখানায় হামলা চালালে তিন কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষে মারা যান রোকেয়া বেগম।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

কড়া নিরাপত্তায় খুলেছে আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানা

আপডেট সময় : ১২:১৩:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পোশাক কারখানাগুলোতে পুরোদমে উৎপাদন চলছে। মাত্র ২৮টি ব্যতীত সব কারখানায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন শ্রমিকরা।

আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় শ্রমিকদের সংঘর্ষ রোকেয়া বেগম নামের এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শিল্পাঞ্চলজুড়ে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক হাজার ৮৬৩ কারখানার মধ্যে এক হাজার ৬৭০টি খোলা থাকলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত ২৮টি কারখানা এখনও খোলেনি। এ নিয়ে শিল্পাঞ্চলে বন্ধ রয়েছে ১৯৩টি কারখানা।

শ্রম আইনের ১৩ এর ১ ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা কোনো বেতন পাবেন না।

বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, টানা অস্থিরতার কারণে যেসব কারখানা বন্ধ করা হয়েছিল, আস্থার‌ অভাবে মালিকরা আর খোলেননি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তবেই কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভারতীয় মালিকানাধীন পাল গার্মেন্টস ৭৫ শ্রমিককে বরখাস্ত করায় অসন্তোষ বিরাজ করছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, অসাধারণ এর অভিযোগে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকরা বলছেন, দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করার কারণে তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ আশুলিয়া জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম।

শিল্পাঞ্চল ঘিরে রয়েছে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র‍্যাব বিজিবি ও সেনা সদস্যদের তৎপরতা।

সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের সমিতি বিজিএমইএ।

সংগঠনটির সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন। বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদেশ দান ও শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্পণ করায় তৈরি পোশাক খাত আরও সুরক্ষিত হবে।

এদিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়ন রয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র‍্যাব, পুলিশের রায়ট কার ও জলকামান। পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল অস্থিতিশীলতার নেপথ্যে থাকা ইন্ধনদাতাদের বিষয়েও বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স।

এদিকে, মঙ্গলবারের সংঘর্ষ নিহত তৈরি পোশাক শ্রমিক রোকেয়া বেগমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহিল রাকিব।

এদিকে, আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় বন্ধ থাকা মাসকট গার্মেন্টস আগামী শনিবার খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নিহত রোকেয়া বেগম ছিলেন মাসকট নিটস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর। গতকাল মঙ্গলবার কাজে যোগ দিতে এসে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মাসকট নিটস লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তারা পার্শ্ববর্তী রেডিয়েন্স ও সাউদার্ন কারখানায় হামলা চালালে তিন কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষে মারা যান রোকেয়া বেগম।