ঢাকা ০৩:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ গড়াল তৃতীয় দিনে : ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪
  • / 25
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে টিএন্ডজেড গ্রুপের ৫ কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। টানা মহাসড়ক অবরোধের কারণে এখনো বন্ধ রয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। সেনাবাহিনী, পুলিশ, প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নানা চেষ্টা করেও শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরাতে পারেনি।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। মহাসড়কের পাশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে রাত জেগে পালাক্রমে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। তবে এখন পর্যন্ত অবরোধে কোনো ধরনের ভাঙচুর ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের কারণে স্থানীয় শাখা রোডগুলোতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ছোট-বড় অনেক গাড়ি অপেক্ষাকৃত সরু রাস্তায় প্রবেশ করায় ওই রাস্তাগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ইকবাল হোসেন নামে মোগরখাল এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, গত ৫০ বছরেও গাজীপুরে এত দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক অবরোধের রেকর্ড নেই। ব্যস্ততম এই মহাসড়ক দিয়ে দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি তিনদিন ধরে অবরোধ করে রাখলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত তিনদিন ধরে অনেক বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যান চালক-হেলপাররা চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আশপাশের বাড়িঘরগুলোতে ভিড় করছেন। তিনদিন ধরে অনেকে গোসল করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

অবরোধে থাকা সালমা আক্তার নামে এক পোশাক শ্রমিক বলেন, কারখানার মালিক প্রশাসনের মাধ্যমে আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য বারবার তারিখ দিলেও তারা কথা রাখেনি। তাই এবার আমরা প্রশাসনসহ কারো কথাই মানবো না। আমরা আমাদের পাওনা টাকা চাই।

অপরদিকে সোমবার সকালে বিক্ষুব্ধ কিছু পোশাক শ্রমিক গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া, বাসন সড়ক, চৌধুরী বাড়ি, ভোগড়া বাইপাস, চান্দপাড়া, মোগরখাল, ছয়দানা, মালেকের বাড়ি, ডেকেরচালা, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের তাদের আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাতে থাকে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এসব এলাকার অন্তত ১৫টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, শ্রমিকরা তাদের দাবির প্রশ্নে অটল। কোনো অবস্থাতেই তারা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।

গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ চলছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ গড়াল তৃতীয় দিনে : ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

আপডেট সময় : ১২:৪৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

 

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে টিএন্ডজেড গ্রুপের ৫ কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। টানা মহাসড়ক অবরোধের কারণে এখনো বন্ধ রয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। সেনাবাহিনী, পুলিশ, প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নানা চেষ্টা করেও শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরাতে পারেনি।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। মহাসড়কের পাশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে রাত জেগে পালাক্রমে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। তবে এখন পর্যন্ত অবরোধে কোনো ধরনের ভাঙচুর ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের কারণে স্থানীয় শাখা রোডগুলোতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ছোট-বড় অনেক গাড়ি অপেক্ষাকৃত সরু রাস্তায় প্রবেশ করায় ওই রাস্তাগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ইকবাল হোসেন নামে মোগরখাল এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, গত ৫০ বছরেও গাজীপুরে এত দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক অবরোধের রেকর্ড নেই। ব্যস্ততম এই মহাসড়ক দিয়ে দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি তিনদিন ধরে অবরোধ করে রাখলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গত তিনদিন ধরে অনেক বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যান চালক-হেলপাররা চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আশপাশের বাড়িঘরগুলোতে ভিড় করছেন। তিনদিন ধরে অনেকে গোসল করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

অবরোধে থাকা সালমা আক্তার নামে এক পোশাক শ্রমিক বলেন, কারখানার মালিক প্রশাসনের মাধ্যমে আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য বারবার তারিখ দিলেও তারা কথা রাখেনি। তাই এবার আমরা প্রশাসনসহ কারো কথাই মানবো না। আমরা আমাদের পাওনা টাকা চাই।

অপরদিকে সোমবার সকালে বিক্ষুব্ধ কিছু পোশাক শ্রমিক গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া, বাসন সড়ক, চৌধুরী বাড়ি, ভোগড়া বাইপাস, চান্দপাড়া, মোগরখাল, ছয়দানা, মালেকের বাড়ি, ডেকেরচালা, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের তাদের আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাতে থাকে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এসব এলাকার অন্তত ১৫টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, শ্রমিকরা তাদের দাবির প্রশ্নে অটল। কোনো অবস্থাতেই তারা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।

গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ চলছে।