বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষে ফের রণক্ষেত্র হাজীগঞ্জ : আহত ৩০
- আপডেট সময় : ১২:১৮:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 8
বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজার ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে যৌথবাহিনী লাঠি চার্জ করেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিএনপির একাংশ ও ছাত্রদলের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। এতে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহতরা বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর থেকে হাজীগঞ্জ বাজারে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় মিছিল বের করে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদল। মিছিলে শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জি. মমিনুল হকের পক্ষে স্লোগান দেয়।
অপরদিকে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনের সমর্থনে বিজয় দিবসের আরেকটি মিছিলের বেলা আড়াইটার দিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ব্যানারে বের হয়। এ সময় দুইপক্ষের মিছিলকে কেন্দ্র করে বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় নেতাকর্মীরা একে অপরের বিরুদ্ধে ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল ছুড়ে মারে।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ দুইপক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে দুইপক্ষের নেতাকর্মী ও পথচারীসহ অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন খাঁন বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বানচালের উদ্দেশ্যে ইঞ্জি. মমিনুল হকের লোকজন আমাদের বিজয় মিছিলে হামলা করে।
এতে আমাদের ১৫/২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় মিজানুর রহমান নামের একজনকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আকতার হোসেন দুলাল বলেন, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিতে বিএনপির কোন গ্রুপ নেই।
গত ৫ আগস্টের পূর্বে যারা মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ করেছে, এখনো তারাই মিছিল-মিটিং করছে। সুতরাং এখানে সবাই এক, দলে কোন বিভক্তি নেই। যারা বিশৃঙ্খলা করে, তারা বিএনপির কেউ নয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (মঙ্গলবার) হাজীগঞ্জ বাজারে বিজয় মিছিল করে ছাত্রদল। এই মিছিলটি গতকাল (সোমবার) হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন (সোমবার) আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম (বিজয় র্যালী) থাকার কারণে ছাত্রদল মিছিলটি করতে পারেন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব ইমাম হোসেন বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমরা রাজপথে মিছিল-মিটিং করেছি। এখনো করে যাচ্ছি। কিন্তু আজকে যারা দলের নাম ভাকয়ে হাজীগঞ্জে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তারা এতোদিন কোথায় ছিল?
দলীয় ব্যানারে যারা শান্ত হাজীগঞ্জকে অশান্ত করেছে এবং তারা যে ভাষায় কথা বলেছে, আমি-এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দলীয় ব্যানারে এবং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না। কারো অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য ইঞ্জি. মমিনুল হকের বিরুদ্ধে বিষোদাঘার করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমেদ তানভীর হাসান বলেন, হাসপাতালে ৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য একজনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও স্বাভাবিক রয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন