ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

মেঘনায় জাহাজে রক্তাক্ত সাত লাশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৮:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 4

মেঘনায় নোঙর করা এই জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার দুজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে

ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করা সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ। এ সময় আরো তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জেলার হাইমচরে মাঝির চর এলাকা চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করা সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ।

এ সময় আরো তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জেলার হাইমচরে মাঝির চর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই জাহাজের বিভিন্ন কেবিন থেকে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন জাহাজের মাষ্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায়নি। আর আহত ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইল জেলায়।

চাঁদপুরের নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান ও কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. ফজলুল হক জানান, দুপুর আড়াইটায় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল করে জানানো হয়, জলদস্যুদের হামলায় এমভি আল বাখেরা নামক কার্গো জাহাজের স্টাফরা নিহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁরা।

ঘটনার পর বিভিন্ন জাহাজের নাবিক ও স্টাফদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ছোট আকারের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়। কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের ধারণা, জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জুয়েলের গলা ও শ্বাসনালি কাটা ছিল।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার করা সজিবুল ও মাজেদুলকে হাসপাতালে আনা হয় মৃত অবস্থায়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোস্ট গার্ড ও পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে। চাঁদপুরের নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, এরই মধ্যে দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে।

এসব ফোনে থাকা কললিস্ট ধরে তদন্ত কাজ চলছে। তবে এখন পর্যন্ত জাহাজ থেকে লুটপাটের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লে. ফজলুল হক জানান, ঘটনার পর থেকে নদীতে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানা থেকে সার বোঝাই করে জাহাজটি চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ি দিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে যাচ্ছিল।

সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন। তিনি জানান, এই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

মেঘনায় জাহাজে রক্তাক্ত সাত লাশ

আপডেট সময় : ০৯:২৮:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করা সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ। এ সময় আরো তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জেলার হাইমচরে মাঝির চর এলাকা চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করা সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ।

এ সময় আরো তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জেলার হাইমচরে মাঝির চর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই জাহাজের বিভিন্ন কেবিন থেকে হতাহতদের উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন জাহাজের মাষ্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায়নি। আর আহত ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইল জেলায়।

চাঁদপুরের নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান ও কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. ফজলুল হক জানান, দুপুর আড়াইটায় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল করে জানানো হয়, জলদস্যুদের হামলায় এমভি আল বাখেরা নামক কার্গো জাহাজের স্টাফরা নিহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁরা।

ঘটনার পর বিভিন্ন জাহাজের নাবিক ও স্টাফদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, ছোট আকারের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়। কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের ধারণা, জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জুয়েলের গলা ও শ্বাসনালি কাটা ছিল।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার করা সজিবুল ও মাজেদুলকে হাসপাতালে আনা হয় মৃত অবস্থায়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোস্ট গার্ড ও পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে। চাঁদপুরের নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানান, এরই মধ্যে দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে।

এসব ফোনে থাকা কললিস্ট ধরে তদন্ত কাজ চলছে। তবে এখন পর্যন্ত জাহাজ থেকে লুটপাটের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লে. ফজলুল হক জানান, ঘটনার পর থেকে নদীতে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের কাফকো সার কারখানা থেকে সার বোঝাই করে জাহাজটি চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ি দিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে যাচ্ছিল।

সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন। তিনি জানান, এই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।