ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

বিনোদন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 4
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঢাকাই সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র (৮৩) মারা গেছেন। রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রবীর মিত্রের ছেলে মিঠুন মিত্র।

প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে- মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। এর মধ্যে সামিউল মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে।

মিঠুন মিত্র বলেন, শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার দুপুরে বাবার মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হবে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানোর পর মরদেহ চ্যানেল আইতে নেওয়া হবে।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রবীর মিত্র ১৯৪১ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তায়। তবে ঢাকাতেই তার শৈশব জীবন কেটেছে। ঢাকার কোতোয়ালি থানার হরিপ্রসন্ন মিত্র রাস্তাটি প্রবীর মিত্রের দাদার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি বিএসসি পাস করার পরে লেখাপড়ার যবনিকা টানেন।

১৯৬৮ সাল থেকে প্রবীর মিত্রের চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু হয়ে ছিল। স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’। এতে তিনি চরিত্র ছিল প্রহরী চরিত্রে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিলেন।

এরপর পুরনো ঢাকার লালকুঠিতে শুরু হয় তার নাট্যচর্চা। পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ছবির গল্প ও সংলাপ লিখেছিলেন আরেক শক্তিমান অভিনেতা তারই স্কুল জীবনের বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামান।

প্রবীর মিত্র তার বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে নায়ক হিসেবে হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকায় প্রথম ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয়। সেটি ছিল সাদাকালো ছবি। সেই ছবিতে আনোয়ার হোসেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রে অভিনয় করেন।

পরবর্তী সময়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ কয়েক বছর পরে রঙিন ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয় আর এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পান প্রবীর মিত্র। অসাধারণ অভিনয়ের জন্য দেশজুড়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘জলছবি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘রক্তের ডাক’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলঙ্কার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গায়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ প্রভৃতি।

১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রবীর মিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘নৌ চোর’, ‘সুখে থাকো’, ‘ঝুমকা’, ‘সোনারতরী’, ‘সুখের সংসার’, ‘প্রতিহিংসা’, ‘আরশীনগর’, ‘মানসম্মান’, ‘চেনামুখ’, ‘অপমান’, ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘ফেরারী বসন্ত’, ‘আঁখি মিলন’, ‘রসের বাইদানী’, ‘নয়নের আলো’, ‘মন পাগলা’, ‘জিপসি সর্দার’, ‘দহন’, ‘মায়ের দাবি’, ‘ঘর ভাঙা ঘর’, ‘রানী কেন ডাকাত’, ‘বেদেনীর প্রেম’ প্রভৃতি।

প্রবীর মিত্র ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ১৯৮৩ সালে প্রথমবাররে মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার র্অজন করেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

আপডেট সময় : ০৯:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

 

ঢাকাই সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র (৮৩) মারা গেছেন। রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত ১০টা ১০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রবীর মিত্রের ছেলে মিঠুন মিত্র।

প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে- মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। এর মধ্যে সামিউল মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে।

মিঠুন মিত্র বলেন, শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার দুপুরে বাবার মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হবে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানোর পর মরদেহ চ্যানেল আইতে নেওয়া হবে।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রবীর মিত্র ১৯৪১ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তায়। তবে ঢাকাতেই তার শৈশব জীবন কেটেছে। ঢাকার কোতোয়ালি থানার হরিপ্রসন্ন মিত্র রাস্তাটি প্রবীর মিত্রের দাদার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি বিএসসি পাস করার পরে লেখাপড়ার যবনিকা টানেন।

১৯৬৮ সাল থেকে প্রবীর মিত্রের চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু হয়ে ছিল। স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’। এতে তিনি চরিত্র ছিল প্রহরী চরিত্রে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিলেন।

এরপর পুরনো ঢাকার লালকুঠিতে শুরু হয় তার নাট্যচর্চা। পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ছবির গল্প ও সংলাপ লিখেছিলেন আরেক শক্তিমান অভিনেতা তারই স্কুল জীবনের বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামান।

প্রবীর মিত্র তার বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে নায়ক হিসেবে হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকায় প্রথম ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয়। সেটি ছিল সাদাকালো ছবি। সেই ছবিতে আনোয়ার হোসেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রে অভিনয় করেন।

পরবর্তী সময়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ কয়েক বছর পরে রঙিন ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নির্মিত হয় আর এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পান প্রবীর মিত্র। অসাধারণ অভিনয়ের জন্য দেশজুড়ে তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘জলছবি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘রক্তের ডাক’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয়পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলঙ্কার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গায়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ প্রভৃতি।

১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রবীর মিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির তালিকায় রয়েছে ‘নৌ চোর’, ‘সুখে থাকো’, ‘ঝুমকা’, ‘সোনারতরী’, ‘সুখের সংসার’, ‘প্রতিহিংসা’, ‘আরশীনগর’, ‘মানসম্মান’, ‘চেনামুখ’, ‘অপমান’, ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘ফেরারী বসন্ত’, ‘আঁখি মিলন’, ‘রসের বাইদানী’, ‘নয়নের আলো’, ‘মন পাগলা’, ‘জিপসি সর্দার’, ‘দহন’, ‘মায়ের দাবি’, ‘ঘর ভাঙা ঘর’, ‘রানী কেন ডাকাত’, ‘বেদেনীর প্রেম’ প্রভৃতি।

প্রবীর মিত্র ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ১৯৮৩ সালে প্রথমবাররে মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার র্অজন করেন।