ঢাকা ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম চুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 88
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই করেছে আর্জেন্ট এলএনজি নামে একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে।

গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই করল।

লুইজিয়ানা ভিত্তিক মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি উৎপাদনের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি শিল্প সহায়ক নীতির প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে এমন দেশগুলোতে, যেগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নেই।

এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তাদের রপ্তানি ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরশনে আর্জেন্ট এলএনজি প্রকল্পটি যদি ঠিকঠাক ভাবে সম্পন্ন হয়, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা এই এলএনজি আমদানি করবে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ বর্তমানে তার দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে এবং এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তাদের বাজার মূল্য-সংবেদনশীল যার কারণে ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর সময় এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ সস্তা কয়লার দিকে ঝুঁকেছিল।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে এই চুক্তি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ নিয়ে ব্যাংকার ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-এর চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ”বাংলাদেশ সরকার আজকে ট্রাম্পের নতুন এনার্জি এক্সপোর্ট ম্যান্ডেট উপর ভিত্তি করে একটা ল্যান্ডমার্ক এগ্রিমেন্ট সাইন করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর আমরাই প্রথম দেশ কোনো ডিল সাইন করলাম। ট্রাম্প এর ইলেকশন প্রমিজের মধ্যে ‘ড্রিল, বেবী ড্রিল’ এই স্লোগানটা বেশ পপুলার ছিলো। সেটা এই এনার্জি এক্সপোর্ট কে ঘিরেই।

আমাদের দেশে গ্যাসের বিশাল সংকট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ, কর্মসংস্থান, ইত্যাদির জন্য আমাদের লং টার্ম গ্যাস সাপ্লাই সলিউশন বের করতেই হবে। মিডল ইস্ট এর বাইরে আমেরিকা একটা ইন্টারেস্টিং অলটারনেটিভ। কিন্তু এই সাইনিং এর গুরুত্ব অন্য জায়গায়।

ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসির অ্যাঙ্গেল থেকে। ট্রাম্প সরকারের স্টাইল খুবই ডিফারেন্ট। তারা জাত ব্যবসায়ী। আঁতেল টাইপের কথাবার্তায় নাই। স্ট্রেইট অ্যাকশন দেখতে চায়।

লুইজিয়ানার সিনেটর বিল ক্যাসিডি সাইনিং-এর কথা শুনে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো! আগামী বছরগুলোতে আমরা যখনই বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে যাবো, আমরা বলতে পারবো যে বাংলাদেশ কিন্তু তার প্রথম পার্টনার ছিল।

তার আমেরিকা ফার্স্ট-এর সাথে আমাদের বাংলাদেশ ফার্স্ট। আর আমাদের জন্য বাংলাদেশের ইন্টারেস্ট ফার্স্ট!

অনেকের কাছে শুনি ট্রাম্প আসার পর নাকি সব শেষ হয়ে যাবে আমাদের। প্রথমত, আমেরিকার ফরেন পলিসি খুব স্টেবল। তারা হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রি টার্ন করে না। আর দ্বিতীয়ত, আমরা সৎ হতে পারি, কিন্তু একদম গাধা না।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম চুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে

আপডেট সময় : ১২:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই করেছে আর্জেন্ট এলএনজি নামে একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে।

গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই করল।

লুইজিয়ানা ভিত্তিক মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন এলএনজি উৎপাদনের একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি শিল্প সহায়ক নীতির প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, বিশেষ করে এমন দেশগুলোতে, যেগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নেই।

এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তাদের রপ্তানি ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরশনে আর্জেন্ট এলএনজি প্রকল্পটি যদি ঠিকঠাক ভাবে সম্পন্ন হয়, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা এই এলএনজি আমদানি করবে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, এই চুক্তি শুধু বাংলাদেশের শিল্প খাতের জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহই নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ বর্তমানে তার দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে এবং এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তাদের বাজার মূল্য-সংবেদনশীল যার কারণে ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর সময় এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ সস্তা কয়লার দিকে ঝুঁকেছিল।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে এই চুক্তি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ নিয়ে ব্যাংকার ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-এর চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ”বাংলাদেশ সরকার আজকে ট্রাম্পের নতুন এনার্জি এক্সপোর্ট ম্যান্ডেট উপর ভিত্তি করে একটা ল্যান্ডমার্ক এগ্রিমেন্ট সাইন করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর আমরাই প্রথম দেশ কোনো ডিল সাইন করলাম। ট্রাম্প এর ইলেকশন প্রমিজের মধ্যে ‘ড্রিল, বেবী ড্রিল’ এই স্লোগানটা বেশ পপুলার ছিলো। সেটা এই এনার্জি এক্সপোর্ট কে ঘিরেই।

আমাদের দেশে গ্যাসের বিশাল সংকট। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ, কর্মসংস্থান, ইত্যাদির জন্য আমাদের লং টার্ম গ্যাস সাপ্লাই সলিউশন বের করতেই হবে। মিডল ইস্ট এর বাইরে আমেরিকা একটা ইন্টারেস্টিং অলটারনেটিভ। কিন্তু এই সাইনিং এর গুরুত্ব অন্য জায়গায়।

ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসির অ্যাঙ্গেল থেকে। ট্রাম্প সরকারের স্টাইল খুবই ডিফারেন্ট। তারা জাত ব্যবসায়ী। আঁতেল টাইপের কথাবার্তায় নাই। স্ট্রেইট অ্যাকশন দেখতে চায়।

লুইজিয়ানার সিনেটর বিল ক্যাসিডি সাইনিং-এর কথা শুনে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো! আগামী বছরগুলোতে আমরা যখনই বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে যাবো, আমরা বলতে পারবো যে বাংলাদেশ কিন্তু তার প্রথম পার্টনার ছিল।

তার আমেরিকা ফার্স্ট-এর সাথে আমাদের বাংলাদেশ ফার্স্ট। আর আমাদের জন্য বাংলাদেশের ইন্টারেস্ট ফার্স্ট!

অনেকের কাছে শুনি ট্রাম্প আসার পর নাকি সব শেষ হয়ে যাবে আমাদের। প্রথমত, আমেরিকার ফরেন পলিসি খুব স্টেবল। তারা হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রি টার্ন করে না। আর দ্বিতীয়ত, আমরা সৎ হতে পারি, কিন্তু একদম গাধা না।”