ঢাকা ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গরমে স্বস্তি দেবে যেসব খাবার

ডেইলি আর্থ অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / 49

গরমে স্বস্তি মিলবে যেসব খাবারে

ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চৈত্রের খরতাপ থেকে শুরু করে বৈশাখের দাবদাহ আর আষাঢ়ের আগের অস্বস্তিকর গরম বাংলাদেশের গ্রীষ্মকাল দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর।

এই সময়ে শরীর ঘামে বেশি, ক্লান্তি বাড়ে এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকিও থাকে।

কেবল ঠান্ডা পানি খেলেই শরীর ঠান্ডা থাকবে এমনটা ভাবা ভুল। বরং প্রয়োজন এমন কিছু খাবার, যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখে, হজমে সহায়ক এবং শক্তির উৎসও বটে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে কোন কোন খাবার হতে পারে আপনার প্রকৃত বন্ধু:

পানিযুক্ত ফল: প্রাকৃতিক শীতলতা
তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, আমড়া, লিচু ও কমলার মতো মৌসুমি ফল গরমের সময় একেবারে আশীর্বাদস্বরূপ।এ ধরনের ফল পানিশূন্যতা রোধ করে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

১. তরমুজ: ৯২% পানি থাকার কারণে শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখে।
২. বাঙ্গি: ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।
৩. কমলা ও মাল্টা: ভিটামিন সি-এর উৎস হিসেবে শরীরকে রিফ্রেশ করে।

এছাড়াও শসা, টমেটো, লেটুস ও ক্যাপসিকামের মতো শাকসবজিও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত এগুলো হজমে সহায়ক এবং পানিযুক্ত।

দই ও প্রোবায়োটিক: ভেতর থেকে প্রশান্তি
গরমে দই খাওয়ার অভ্যাস খুব উপকারী।দইতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া হজমে সহায়ক, পেট ঠান্ডা রাখে এবং গ্যাস্ট্রিক কমাতে সহায়তা করে।

১. এক বাটি ঠান্ডা টকদই বা লবণ-জিরা দেওয়া বাটারমিল্ক হতে পারে দুপুরের এক আদর্শ পানীয়।
২. দই দিয়ে তৈরি ফ্রুট কাস্টার্ড কিংবা হালকা ডেজার্টও হতে পারে স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

হালকা আমিষ, ভারী নয়
গ্রীষ্মকালে বেশি চর্বিযুক্ত খাবার শরীর গরম করে তোলে এবং হজমে সময় নেয়। তাই খেতে পারেন:

১. দেশি মাছ (রুই, কাতলা, পাঙাশ)
২. মসুর ডাল, যা হালকা এবং সহজপাচ্য।
৩. ডিমের সাদা অংশ, প্রোটিন পূরণে সহায়ক ও হালকা।

ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার এ সময় এড়িয়ে চলাই ভালো।বরং পাতলা ভাজি, ডাল-ভাত এবং লেবু বা টক দইয়ের মতো খাবারে মনোযোগ দিন।

শরবত ও ভেষজ পানীয়
চিনিযুক্ত কোমল পানীয় বা ঠান্ডা কফি শরীর ঠান্ডা মনে হলেও পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর বদলে বেছে নিন:

১. বেল, তাল বা খেজুরের শরবত
২. লেবু ও পুদিনার শরবত
৩. তুলসী বা আদা দিয়ে ভেষজ চা

সময় বুঝে খাবার খাওয়া জরুরি

১. দুপুরে সবচেয়ে হালকা খাবার রাখুন দই-ভাত, ডাল-সবজি কিংবা ফলের সালাদ হতে পারে আদর্শ।
২. সকালে বা সন্ধ্যায় খেতে পারেন অপেক্ষাকৃত ভারী খাবার।
৩. ঘুমের আগে এড়িয়ে চলুন ভারী ও অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার।

যেসব অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত

১. অতিরিক্ত চা-কফি বা ক্যাফেইন
২. অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও তেলচিটে খাবার
৩. চিনিযুক্ত পানীয়

গ্রীষ্মে স্বস্তি আনতে কেবল সানস্ক্রিন বা ছাতা নয়, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে আসল সমাধান। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন হালকা, পুষ্টিকর ও ঠান্ডা রাখে এমন খাবার—আপনার শরীরই তখন বলবে, “এই গরমেও আমি কুল!”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গরমে স্বস্তি দেবে যেসব খাবার

আপডেট সময় : ০৯:৪০:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

চৈত্রের খরতাপ থেকে শুরু করে বৈশাখের দাবদাহ আর আষাঢ়ের আগের অস্বস্তিকর গরম বাংলাদেশের গ্রীষ্মকাল দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর।

এই সময়ে শরীর ঘামে বেশি, ক্লান্তি বাড়ে এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকিও থাকে।

কেবল ঠান্ডা পানি খেলেই শরীর ঠান্ডা থাকবে এমনটা ভাবা ভুল। বরং প্রয়োজন এমন কিছু খাবার, যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখে, হজমে সহায়ক এবং শক্তির উৎসও বটে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক, গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে কোন কোন খাবার হতে পারে আপনার প্রকৃত বন্ধু:

পানিযুক্ত ফল: প্রাকৃতিক শীতলতা
তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, আমড়া, লিচু ও কমলার মতো মৌসুমি ফল গরমের সময় একেবারে আশীর্বাদস্বরূপ।এ ধরনের ফল পানিশূন্যতা রোধ করে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

১. তরমুজ: ৯২% পানি থাকার কারণে শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখে।
২. বাঙ্গি: ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।
৩. কমলা ও মাল্টা: ভিটামিন সি-এর উৎস হিসেবে শরীরকে রিফ্রেশ করে।

এছাড়াও শসা, টমেটো, লেটুস ও ক্যাপসিকামের মতো শাকসবজিও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত এগুলো হজমে সহায়ক এবং পানিযুক্ত।

দই ও প্রোবায়োটিক: ভেতর থেকে প্রশান্তি
গরমে দই খাওয়ার অভ্যাস খুব উপকারী।দইতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া হজমে সহায়ক, পেট ঠান্ডা রাখে এবং গ্যাস্ট্রিক কমাতে সহায়তা করে।

১. এক বাটি ঠান্ডা টকদই বা লবণ-জিরা দেওয়া বাটারমিল্ক হতে পারে দুপুরের এক আদর্শ পানীয়।
২. দই দিয়ে তৈরি ফ্রুট কাস্টার্ড কিংবা হালকা ডেজার্টও হতে পারে স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

হালকা আমিষ, ভারী নয়
গ্রীষ্মকালে বেশি চর্বিযুক্ত খাবার শরীর গরম করে তোলে এবং হজমে সময় নেয়। তাই খেতে পারেন:

১. দেশি মাছ (রুই, কাতলা, পাঙাশ)
২. মসুর ডাল, যা হালকা এবং সহজপাচ্য।
৩. ডিমের সাদা অংশ, প্রোটিন পূরণে সহায়ক ও হালকা।

ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার এ সময় এড়িয়ে চলাই ভালো।বরং পাতলা ভাজি, ডাল-ভাত এবং লেবু বা টক দইয়ের মতো খাবারে মনোযোগ দিন।

শরবত ও ভেষজ পানীয়
চিনিযুক্ত কোমল পানীয় বা ঠান্ডা কফি শরীর ঠান্ডা মনে হলেও পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর বদলে বেছে নিন:

১. বেল, তাল বা খেজুরের শরবত
২. লেবু ও পুদিনার শরবত
৩. তুলসী বা আদা দিয়ে ভেষজ চা

সময় বুঝে খাবার খাওয়া জরুরি

১. দুপুরে সবচেয়ে হালকা খাবার রাখুন দই-ভাত, ডাল-সবজি কিংবা ফলের সালাদ হতে পারে আদর্শ।
২. সকালে বা সন্ধ্যায় খেতে পারেন অপেক্ষাকৃত ভারী খাবার।
৩. ঘুমের আগে এড়িয়ে চলুন ভারী ও অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার।

যেসব অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত

১. অতিরিক্ত চা-কফি বা ক্যাফেইন
২. অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও তেলচিটে খাবার
৩. চিনিযুক্ত পানীয়

গ্রীষ্মে স্বস্তি আনতে কেবল সানস্ক্রিন বা ছাতা নয়, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে আসল সমাধান। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন হালকা, পুষ্টিকর ও ঠান্ডা রাখে এমন খাবার—আপনার শরীরই তখন বলবে, “এই গরমেও আমি কুল!”