ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জা‌রি

ভ্যাপসা গরমে দুর্বিষহ নগরজীবন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১০:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় গরমের তীব্রতা ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমে বেশি অস্বস্তিতে খেটে খাওয়া মানুষ।

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। শুক্রবার (১৯) এপ্রিল বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আদ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে গরম। প্রখর রোদে অস্বস্তিতে দেখা গেছে হকার, দিনমজুরদের।

রাজধানীর পল্টন মোড়ে এক ভ্যানচালক জানান, সকাল থেকে গরম বেড়েই চলছে। এ প্রখর রোদে গাড়ি (ভ্যান) নিয়ে বাইরে থাকাটাই কষ্ট। আজ রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমের কমতি নেই। তীব্র তাপে ঘেমে জামা ভিজে আবার শুকাচ্ছে। এরপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়।

কাকরাইলের এক বাসিন্দা বলেন, এত গরমে যে বাতাস বইছে সেটাতেও গরম। আজ রাস্তায় যানজট নেই, তবুও লোকাল বাসে উঠে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। একটু বৃষ্টি না হলে আর স্বস্তি নেই।

একই কথা বলেন রিকশাচালক রবিউল ইসলাম। পল্টন মোড়ে কথা হয় রবিউলের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকে শরবত আর আইসক্রিম খেয়েই আছি। গরমে অন্য কোনো খাবার খেতে মন চায় না। আজ ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রী কম, এরপরও পেটের দায়ে আমাদের তো রাস্তায় থাকতে হয়।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। দেশের চার জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এছাড়া বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গতকাল বৃহস্পতিবারও ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জা‌রি

টানা তিনদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। এরমধ্যে আবার চলছে লোডশেডিং। ফলে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থে‌কে হিট অ্যালার্ট জা‌রি করা হ‌য়ে‌ছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৭ এপ্রিল তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। সবশেষ ১৮ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হ‌য় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ১৯ এপ্রিল (শুক্রবার ) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আদ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

টানা এই তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণীকুল। হাসপাতালে বাড়ছে পানিবাহিত ও গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। দিনের বেলায় সাধারণ মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষরা বের হলেও ফাঁকা রাস্তায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা।

এদিকে দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়া তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও জানায় সংস্থাটি।

চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জা‌রি

ভ্যাপসা গরমে দুর্বিষহ নগরজীবন

আপডেট সময় : ০৪:১০:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

দেশজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় গরমের তীব্রতা ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমে বেশি অস্বস্তিতে খেটে খাওয়া মানুষ।

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। শুক্রবার (১৯) এপ্রিল বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আদ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে গরম। প্রখর রোদে অস্বস্তিতে দেখা গেছে হকার, দিনমজুরদের।

রাজধানীর পল্টন মোড়ে এক ভ্যানচালক জানান, সকাল থেকে গরম বেড়েই চলছে। এ প্রখর রোদে গাড়ি (ভ্যান) নিয়ে বাইরে থাকাটাই কষ্ট। আজ রাস্তায় মানুষ কম থাকলেও গরমের কমতি নেই। তীব্র তাপে ঘেমে জামা ভিজে আবার শুকাচ্ছে। এরপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়।

কাকরাইলের এক বাসিন্দা বলেন, এত গরমে যে বাতাস বইছে সেটাতেও গরম। আজ রাস্তায় যানজট নেই, তবুও লোকাল বাসে উঠে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। একটু বৃষ্টি না হলে আর স্বস্তি নেই।

একই কথা বলেন রিকশাচালক রবিউল ইসলাম। পল্টন মোড়ে কথা হয় রবিউলের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকে শরবত আর আইসক্রিম খেয়েই আছি। গরমে অন্য কোনো খাবার খেতে মন চায় না। আজ ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রী কম, এরপরও পেটের দায়ে আমাদের তো রাস্তায় থাকতে হয়।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। দেশের চার জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এছাড়া বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গতকাল বৃহস্পতিবারও ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জা‌রি

টানা তিনদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। এরমধ্যে আবার চলছে লোডশেডিং। ফলে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থে‌কে হিট অ্যালার্ট জা‌রি করা হ‌য়ে‌ছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।

আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৭ এপ্রিল তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। সবশেষ ১৮ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হ‌য় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ১৯ এপ্রিল (শুক্রবার ) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আদ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

টানা এই তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণীকুল। হাসপাতালে বাড়ছে পানিবাহিত ও গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। দিনের বেলায় সাধারণ মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষরা বের হলেও ফাঁকা রাস্তায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা।

এদিকে দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়া তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও জানায় সংস্থাটি।

চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।