ফিলিস্তিনিদের ত্রাণের ট্রাক লুট করছে ইসরায়েলিরা
- আপডেট সময় : ০৩:৪৪:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
- / 72
ফিলিস্তিনের গাজায় টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি নির্মম আগ্রাসন মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের। অবরুদ্ধ উপত্যকাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করতে শুধু গোলা-বারুদই নয়, তাদের ক্ষুধা-তৃষ্ণাকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে দখলদার রাষ্ট্রটি। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার ত্রাণ তৎপরতাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নেতানিয়াহুর সেনারা।
একদিকে সুপেয় পানির অভাব, অন্যদিকে দিনের পর দিন খেয়ে না খেয়ে বাঁচতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। ছড়িয়ে পড়ছে রোগ, মৃতের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে আহতের সংখ্যা, অথচ ওষুধ মিলছে না কথাও। এই যখন পরিস্থিতি, দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের ওপর আঘাত হানছে বেসামরিক ইসরায়েলিরাও। নেতানিয়াহু প্রশাসনের কড়াকড়ির মাঝে যে যৎসামান্য ত্রাণ তৎপরতা চলছে, তাতেও পানি ঢেলে দিচ্ছে তারা; আটকে দিচ্ছে ট্রাক, লুট করে নষ্ট করছে ত্রাণ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীদের বাধায় গাজায় পৌঁছাতে পারেনি ত্রাণবাহী ট্রাক। গতকাল সোমবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য যেতে থাকা ট্রাক অবরোধ করেছে তারা। ট্রাক থেকে ত্রাণের প্যাকেজগুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে রাস্তায় এবং ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে শস্যের প্যাকেট।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়া এ ত্রাণগুলো হেবরনের পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে জর্ডান থেকে এসেছিল। অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সংকটে থাকা হাজার হাজার মানুষের জন্য পাঠানো হচ্ছিল এগুলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা লরি থেকে ত্রাণের বাক্স ফেলে দিচ্ছে। এ ছাড়া এগুলো পড়ে যাওয়ার পর তারা তা আবার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া কিছু ভিডিওতে সন্ধ্যার দিকে গাড়িতে আগুন দিতে দেখা গেছে। যদিও এগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এ বিক্ষোভের জন্য দেশটির ডানপন্থি গোষ্ঠী টিজাভ ৯ দায়ী। বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক বিক্ষোভকারী বলেন, তিনি সোমবার চেকপয়েন্টে ছিলেন, কারণ তিনি শুনেছেন যে হামাসের জন্য ত্রাণবাহী ট্রাক আসছে। তাদের হাতে ইসরায়েলি সেনাসহ নাগরিকরা হত্যার শিকার হয়ে আসছে।
হানা গিয়েত নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, জিম্মিরা সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় ইসরায়েলে না ফেরা পর্যন্ত গাজায় কোনো ধরনের খাবার প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এদিকে ত্রাণের ট্রাক লুটের এ ঘটনাকে ইসরায়েলিদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, বিক্ষোভকারীদের এই আচরণ ‘সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য’। হোয়াইট হাউস ইসরায়েল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
নিউজটি শেয়ার করুন