নাইজেরিয়ায় নামাজের সময় মসজিদে তালা দিয়ে অগ্নিসংযোগ, নিহত ১১
- আপডেট সময় : ১২:২২:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
- / 70
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কানো প্রদেশের নামাজের সময় একটি মসজিদে এক ব্যক্তির আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অন্তত ১১ জন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এতে আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার কানো প্রদেশের গেজাওয়া এলাকায় মুসল্লিরা ফজরের নামাজে অংশ নেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এক ব্যক্তি মসজিদে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগানোর আগে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং এতে মসজিদের ভেতরে প্রায় ৪০ জন মুসল্লি আটকা পড়েন।
পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় ৩৮ বছর বয়সী সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উত্তরাধিকার এবং সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে সন্দেহভাজন ব্যক্তি এ ঘটনা ঘটায় বলেও জানায় পুলিশ।
স্থানীয়রা বলেছেন, হামলার পর মসজিদে আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় মুসল্লিদের কান্নার আওয়াজ শোনা যায় এবং তারা ভেতর থেকেই তালাবদ্ধ দরজা খুলতে চেষ্টা করেন। পরবর্তীরেত একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর প্রতিবেশীরা ভেতরে আটকে পড়াদের সাহায্য করতে ছুটে আসেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
এদিকে কানো ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লাগার পরপরই তাদের ডাকা হয়নি, তারা আরও দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারতেন।
কানো ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র সামিনু ইউসুফ বিবিসিকে বলেছেন, স্থানীয়রা আগুন নেভানোর পরেই তাদের জানানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে, লোকেদের আমাদের কল করার কথা ছিল কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা লোকেশন থেকে কোনও কল পাইনি।’
পুলিশ বলেছে, সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে বিরোধের অংশ হিসেবে এই ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করেছে সন্দেহভাজন ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির দাবি, সে মসজিদের ভেতরে থাকা পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর স্থানীয় পুলিশ প্রধান উমর সান্দা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যা ঘটেছে তা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, বরং এটি সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তি বর্তমানে আমাদের কাছে আছে এবং দরকারী তথ্য দিচ্ছে।’
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলেই একজন মারা গেছেন এবং বাকিরা কানোর মুরতালা মুহাম্মাদ স্পেশালিস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুসহ আরও অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
দেশটির ইসলামী ধর্মগুরু শেখ দাউদা সুলাইমান বলেছেন, নামাজরত অবস্থায় মুসল্লিদের হত্যা করা সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় পাপগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই পাপের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হওয়া ছাড়াও অপরাধীকে যারা মারা গেছে তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা উচিত।
এদিকে পুরো গ্রামে এখন শোকের মাতম চলছে।
নিউজটি শেয়ার করুন