দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ মিথ্যা: আইসিজের শুনানিতে ইসরায়েল
- আপডেট সময় : ১০:৪৬:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
- / 48
দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের (আইসিজে) সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা বাস্তবতাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের শুনানিতে ইসরায়েল এমন প্রতিক্রিয়া জানায়।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ এনে এবং রাফা অভিযানের ওপর জরুরি স্থগিতাদেশ চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলার শুনানি গত বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের হেগে আইসিজেতে শুরু হয়। প্রথম দিনের শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতকে জানায়, ইসরায়েল পৃথিবী থেকে ফিলিস্তিনিদের মুখ মুছে দিতে চায়।
রাফা অভিযানকে ইসরায়েলের ‘চূড়ান্ত অবস্থান’ বলে আখ্যায়িত করে প্রিটোরিয়া। গতকাল ইসরায়েলের আইনজীবীরা নিজেদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
জাতিসংঘের শীর্ষ এই আদালত এর মধ্যেই গাজায় গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে গত জানুয়ারিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে করা দক্ষিণ আফ্রিকার মামলার বিষয়ে বিবেচনা করছে। যদিও ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে গাজায় ত্রাণকর্মী, সাংবাদিক ও তদন্তকারীদের নির্বিঘ্নে প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে আদালতকে নির্দেশ দেওয়ার অনুরোধের বিষয়ও বলা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের মামলায় অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযানকে বাড়িয়ে তুলছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী ভন লো কেসি আদালতকে বলেন, রাফা অভিযান গাজা এবং এর ফিলিস্তিনি জনগণকে ধ্বংসের সর্বশেষ ধাপ। তিনি জানান, রাফার বিষয়টি আদালতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে ধরেছে।
তবে এটি আদতে জাতীয়, নৃগোষ্ঠী ও জাতিগতভাবে সব ফিলিস্তিনিরই বিষয়, যাদের গণহত্যা থেকে সুরক্ষা দরকার, যা কি না আদালত নির্দেশ করতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এমন বক্তব্যকে বাস্তবতার পুরো উল্টো বলে ইসরায়েলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গিলাড নোয়াম প্রতিক্রিয়া জানান। শীর্ষ এই আইনজীবী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশন ভঙ্গের অভিযোগকে ‘বিদ্রুপ’ বলে আখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতের সামনে চতুর্থবারের মতো যে চিত্র উপস্থাপন করেছে তা প্রকৃত ঘটনা এবং পরিস্থিতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
রাফা অভিযান তীব্র করার হুঁশিয়ারি ইসরায়েলের
দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে আরো সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল।
শহরটিতে স্থল অভিযান তীব্র করতে চাইছে তারা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গত বৃহস্পতিবার জানান, রাফা এলাকায় অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হবে এবং এতে স্থল অভিযান আরো তীব্র হবে। গত ৭ মে থেকে দক্ষিণ গাজার রাফায় আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েল। শহরটি থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখ ৩০ হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে বলে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ।
গাজার জনাকীর্ণ রাফা শহরে বড় মাত্রায় অভিযান না চালাতে ইসরায়েলের প্রতি আবেদন জানিয়েছে ১৩ দেশ। এসব দেশ হলো অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেন। এসব দেশের অনেকেই ইসরায়েলের সমর্থক। তা সত্ত্বেও এসব দেশের পরররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সই করা এক বিবৃতিতে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কায় রাফা অভিযানের বিরোধিতা করার কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়। বিবৃতিটি ইসরায়েলের কাছে পাঠিয়েছেন তাঁরা।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি, আলজাজিরা
নিউজটি শেয়ার করুন