ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানালেন লিওনেল মেসি Logo তিন মাসে মানসিক চাপ কমানোর কার্যকর গাইডলাইন: বিশেষজ্ঞের পরামর্শ Logo বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব Logo পরকীয়ার জেরে স্বামীকে তালাক, প্রেমিকের বাড়িতে অনশন Logo ঈশ্বরগঞ্জে এসএসসি কেন্দ্রে অনিয়ম: কেন্দ্র সচিবসহ ৪ জনকে অব্যাহতি Logo চীনা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের Logo জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্থায়ন বন্ধের প্রস্তাব ট্রাম্প প্রশাসনের Logo ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট ভেন্যু চূড়ান্ত Logo জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করবে ইসি Logo ইতিহাস গড়ল কেটি পেরি ও পাঁচ নারী, সফল ‘অল-ফিমেল’ মহাকাশযাত্রা

কঙ্গনাকে চড় মেরে আলোচনায় আসা কে এই কনস্টেবল কুলবিন্দর

বিনোদন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৯:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪
  • / 142

কঙ্গনা রনৌত ও কুলবিন্দর কৌর

ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত সদ্য লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। চারপাশে জয়ের সুবাস থাকলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে হরিষে বিষাদ অবস্থা তার। তাকে সপাটে চড় মেরে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন কুলবিন্দর কৌর নামে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের একজন নিরাপত্তারক্ষী। সারাভারত উত্তাল হয়ে যাওয়া বিতর্কে জড়ানোর কারণে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

কঙ্গনার চড়কাণ্ডে সরগরম নেটদুনিয়া। তাকে থাপ্পড় দেওয়া কুলবিন্দর কৌরকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত নেটিজেনরা। কেউ তাকে সমর্থন জানিয়েছেন, কেউবা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জেরে একজন জনপ্রতিনিধিকে চড় দেওয়ায় তার নিন্দা করেছেন। কারও মন্তব্য, কর্তব্যরত অবস্থায় এমন কাজ ক্ষমতার অপব্যবহার। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র কৌতূহল দেখা দিয়েছে। অনেকে তার ব্যক্তিজীবনের কথা জানতে আগ্রহী। কেন তিনি চড় মারলেন, সেই উত্তর জানতে উদগ্রীব সবাই।

কুলবিন্দর কৌর পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। ২০০৯ সালে সিআইএসএফে (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স) যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে বিমান নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিন বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত ৩৫ বছর বয়সী এই নারী। তার স্বামী সিআইএসএফ-এর একজন জওয়ান। তিনিও চণ্ডীগড় বিমানবন্দরেই কর্মরত। তাদের সংসারে আছে দুই সন্তান।

কুলবিন্দরের ভাই শের সিং একজন কৃষক নেতা। কিষান মজদুর সংগ্রাম কমিটি নামের একটি সংগঠনের সম্পাদক তিনি। কৃষকদের অবমাননা করায় ক্ষোভ উগরে দিতে কঙ্গনাকে চড় মেরেছেন বলে দাবি কুলবিন্দরের। কারণ কৃষক আন্দোলনের সময়ে কঙ্গনার একটি মন্তব্য তিনি মানতে পারেননি। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে এই তারকাকে সামনে পেয়ে দপ করে রাগ জ্বলে ওঠায় ইচ্ছাকৃতভাবেই থাপ্পড় মেরেছেন।

কৃষক আন্দোলন চলাকালীন কঙ্গনা মন্তব্য করেন, ১০০ টাকার বিনিময়ে আন্দোলন করতে বসেছেন কৃষকেরা। তার এমন মন্তব্যে কৃষকদের অপমান হয়েছে বলে মনে করেন কুলবিন্দর। কারণ তার মা-ও কৃষক আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন।

গত ৬ জুন বিকালে চণ্ডীগড় থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন কঙ্গনা। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে পৌঁছে নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য একটি ট্রে-তে মোবাইল ফোন রাখতে বলা হলে নবনির্বাচিত এই সাংসদ নাকি অস্বীকৃতি জানান। তখন কুলবিন্দরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার। এর জের ধরে তাকে থাপ্পড় মারেন নিরাপত্তাকর্মী। দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেই অভিযোগ জানান নায়িকা। এরপর কুলবিন্দরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাসপেন্ড করা হয়। নেটিজেনদের প্রশ্ন, কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে একজন নারীর গায়ে কি হাত তুলতে পারেন?

চড়কাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন কঙ্গনা। তার অভিযোগ, কৃষক আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে তাকে আক্রমণ করেছেন কুলবিন্দর। তিনি বলেন, ‘আমি ভালো আছি, নিরাপদে আছি। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশির পর যখন বের হলাম, পাশের একটি কেবিন থেকে একজন নারী নিরাপত্তারক্ষী বেরিয়ে এসে আমার গালে থাপ্পড় মারে, গালিগালাজও করে। কেন এমন করলো জানতে চাইলে সে নিজেকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থক জানিয়েছে।’

হিমাচল প্রদেশের মণ্ডী থেকে বিজেপির টিকিটে এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন কঙ্গনা। মণ্ডীর এই মেয়ে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৭০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন হিমাচল কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা বিক্রমাদিত্য সিংহ। প্রথমবার ভোটে লড়েই বিক্রমাদিত্যকে হটিয়ে জয়ের মালা পরেছেন কঙ্গনা। মণ্ডীতে পাঁচ লক্ষাধিক ভোট পেয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় ভারতের বিনোদন অঙ্গন থেকে টুকটাক প্রতিক্রিয়া এসেছে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কঙ্গনার সমর্থনে হাতেগোনা কয়েকজন মুখ খুলেছেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন রবিনা ট্যান্ডন, অভিনেত্রী দেবলীনা ভট্টাচার্যসহ কয়েকজন তারকা। ভারতের বাঙালি তারকারা মনে করেন, প্রতিবাদ করার অনেক ধরন আছে। কারও গায়ে হাত তুলে অপরাধের জবাব দেওয়া ঠিক নয়।

কুলবিন্দর কৌরের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুরকার-গায়ক বিশাল দাড়লানি। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশ্বাস দিয়েছেন, সিআইএসএফ কোনও কড়া পদক্ষেপ নিলে অর্থাৎ ওই নারীকে বরখাস্ত করা হলে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। বিশাল জানান, কুলবিন্দরের জন্য কাজের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করে রেখেছেন। তিনি চাইলেই নতুন কাজে যোগ দিতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কঙ্গনাকে চড় মেরে আলোচনায় আসা কে এই কনস্টেবল কুলবিন্দর

আপডেট সময় : ০২:১৯:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত সদ্য লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। চারপাশে জয়ের সুবাস থাকলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে হরিষে বিষাদ অবস্থা তার। তাকে সপাটে চড় মেরে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন কুলবিন্দর কৌর নামে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের একজন নিরাপত্তারক্ষী। সারাভারত উত্তাল হয়ে যাওয়া বিতর্কে জড়ানোর কারণে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

কঙ্গনার চড়কাণ্ডে সরগরম নেটদুনিয়া। তাকে থাপ্পড় দেওয়া কুলবিন্দর কৌরকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত নেটিজেনরা। কেউ তাকে সমর্থন জানিয়েছেন, কেউবা ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জেরে একজন জনপ্রতিনিধিকে চড় দেওয়ায় তার নিন্দা করেছেন। কারও মন্তব্য, কর্তব্যরত অবস্থায় এমন কাজ ক্ষমতার অপব্যবহার। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র কৌতূহল দেখা দিয়েছে। অনেকে তার ব্যক্তিজীবনের কথা জানতে আগ্রহী। কেন তিনি চড় মারলেন, সেই উত্তর জানতে উদগ্রীব সবাই।

কুলবিন্দর কৌর পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। ২০০৯ সালে সিআইএসএফে (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স) যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে বিমান নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিন বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত ৩৫ বছর বয়সী এই নারী। তার স্বামী সিআইএসএফ-এর একজন জওয়ান। তিনিও চণ্ডীগড় বিমানবন্দরেই কর্মরত। তাদের সংসারে আছে দুই সন্তান।

কুলবিন্দরের ভাই শের সিং একজন কৃষক নেতা। কিষান মজদুর সংগ্রাম কমিটি নামের একটি সংগঠনের সম্পাদক তিনি। কৃষকদের অবমাননা করায় ক্ষোভ উগরে দিতে কঙ্গনাকে চড় মেরেছেন বলে দাবি কুলবিন্দরের। কারণ কৃষক আন্দোলনের সময়ে কঙ্গনার একটি মন্তব্য তিনি মানতে পারেননি। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে এই তারকাকে সামনে পেয়ে দপ করে রাগ জ্বলে ওঠায় ইচ্ছাকৃতভাবেই থাপ্পড় মেরেছেন।

কৃষক আন্দোলন চলাকালীন কঙ্গনা মন্তব্য করেন, ১০০ টাকার বিনিময়ে আন্দোলন করতে বসেছেন কৃষকেরা। তার এমন মন্তব্যে কৃষকদের অপমান হয়েছে বলে মনে করেন কুলবিন্দর। কারণ তার মা-ও কৃষক আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন।

গত ৬ জুন বিকালে চণ্ডীগড় থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন কঙ্গনা। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে পৌঁছে নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য একটি ট্রে-তে মোবাইল ফোন রাখতে বলা হলে নবনির্বাচিত এই সাংসদ নাকি অস্বীকৃতি জানান। তখন কুলবিন্দরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার। এর জের ধরে তাকে থাপ্পড় মারেন নিরাপত্তাকর্মী। দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেই অভিযোগ জানান নায়িকা। এরপর কুলবিন্দরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাসপেন্ড করা হয়। নেটিজেনদের প্রশ্ন, কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে একজন নারীর গায়ে কি হাত তুলতে পারেন?

চড়কাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন কঙ্গনা। তার অভিযোগ, কৃষক আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে তাকে আক্রমণ করেছেন কুলবিন্দর। তিনি বলেন, ‘আমি ভালো আছি, নিরাপদে আছি। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশির পর যখন বের হলাম, পাশের একটি কেবিন থেকে একজন নারী নিরাপত্তারক্ষী বেরিয়ে এসে আমার গালে থাপ্পড় মারে, গালিগালাজও করে। কেন এমন করলো জানতে চাইলে সে নিজেকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থক জানিয়েছে।’

হিমাচল প্রদেশের মণ্ডী থেকে বিজেপির টিকিটে এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন কঙ্গনা। মণ্ডীর এই মেয়ে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৭০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন হিমাচল কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষনেতা বিক্রমাদিত্য সিংহ। প্রথমবার ভোটে লড়েই বিক্রমাদিত্যকে হটিয়ে জয়ের মালা পরেছেন কঙ্গনা। মণ্ডীতে পাঁচ লক্ষাধিক ভোট পেয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় ভারতের বিনোদন অঙ্গন থেকে টুকটাক প্রতিক্রিয়া এসেছে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কঙ্গনার সমর্থনে হাতেগোনা কয়েকজন মুখ খুলেছেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন রবিনা ট্যান্ডন, অভিনেত্রী দেবলীনা ভট্টাচার্যসহ কয়েকজন তারকা। ভারতের বাঙালি তারকারা মনে করেন, প্রতিবাদ করার অনেক ধরন আছে। কারও গায়ে হাত তুলে অপরাধের জবাব দেওয়া ঠিক নয়।

কুলবিন্দর কৌরের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুরকার-গায়ক বিশাল দাড়লানি। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশ্বাস দিয়েছেন, সিআইএসএফ কোনও কড়া পদক্ষেপ নিলে অর্থাৎ ওই নারীকে বরখাস্ত করা হলে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। বিশাল জানান, কুলবিন্দরের জন্য কাজের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করে রেখেছেন। তিনি চাইলেই নতুন কাজে যোগ দিতে পারবেন।