কে এই ভোলে বাবা, যার সৎসঙ্গে শতাধিক প্রাণহানি
- আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
- / 63
ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাসে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ভোলে বাবা নামে এক ধর্মগুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ভক্তরা।সেখানেই ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা।
হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, তীব্র গরমের মধ্যে চলছিল সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। তখন তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই পদপিষ্টের ঘটনা।
এত মানুষের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্যান্যরা।
যে জায়গায় ভোলে বাবা নামে ওই ধর্মগুরুর ভাষণ শোনার জন্য অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, সেটি ইটাহ ও হাথরাস জেলা দুটির সীমান্তে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিং জানান। হাথরাস জেলার মুঘলগড়ি গ্রামে ভোলে বাবার অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে।
জেলার প্রধান মেডিকেল অফিসার উমেশ কুমার বলেন, আহতদের অনেককে পার্শ্ববর্তী জেলা ইটাহ জেলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিকান্দ্রারাউ শহরের একটি ট্রমা সেন্টারে।
সেখানে নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। হতাহতদের বিভিন্ন যানে করে ট্রমা সেন্টারে নেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রমা সেন্টারের বাইরে মেঝেতে পড়ে আছে দু নারীর দেহ। ট্রমা সেন্টারের বাইরে বিশৃঙ্খলা রয়েছে এবং লোকেরা তাদের নিকটাত্মীয়দের সন্ধানে সেখানে আসছেন।
কে এই ভোলে বাবা?
ভোলে বাবা একজন ধর্মপ্রচারক। তিনি উত্তর প্রদেশের হাথরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সেখানেই মঙ্গলবার পদদলিত হয়ে শতাতিক ব্যক্তির প্রাণ যায়। আলোচিত এ ভোলে বাবা আগে রাজ্য পুলিশে চাকরি করতেন। পুলিশে তিনি প্রায় ১৮ বছর চাকরি করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করতেন ভোলে বাবা। চাকরি ছাড়ার পর তিনি লোকজনকে উপদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য সৎসঙ্গ আয়োজন শুরু করেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। নিজেকে নারায়ণ সরকার হরি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন তিনি। তার ভক্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
এই ভোলে বাবা পাতিয়ালির বিশ্ব হরি বাবা নামে বেশি পরিচিত। জনসমক্ষে তিনি আসেন সাদা কাপড়ে। উপদেশ অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে থাকেন স্ত্রী। বাবার ভক্তদের বেশিরভাগই আসেন আগ্রা ও আলিগড় জেলা থেকে। তার ভক্তদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের।
বাবা কোনো গুরুর অনুসারী নন বলে বিশ্বাস করা হয়। তার দাবি, যেসব উপদেশ তিনি দেন, সেগুলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা।
ফেসবুকে বাবার অনুসারীর সংখ্যা তিন লাখের বেশি। তার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে অনেক সংসদ সদস্য ও বিধানসভার সদস্য যোগ দেন বলে মনে করা হয়। এ অনুষ্ঠান মঙ্গলবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এত জনপ্রিয়তার পরও গণমাধ্যম থেকে দূরে রাখা হয় বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। বাবার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যও সামনে আসে না।
ভোলে বাবার লোকেরা গোলাপি রঙের শার্ট প্যান্ট এবং সাদা ক্যাপ পরেন। অনুষ্ঠানে ট্রাফিক সামলানো এবং আয়োজনের বিষয় তারা দেখভাল করেন।
নিউজটি শেয়ার করুন