ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতি হতে যাচ্ছে ইতালি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:০১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪ ৭২ বার পড়া হয়েছে
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউরোপের জন্য ইতালি এত দিন ছিল ‘প্রবলেম চাইল্ড’। এক কালের সেই যন্ত্রণা দেওয়া শিশুই এখন ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। ইউরোপের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি অচিরেই জার্মানিকে পেছনে ফেলতে পারে। জার্মানির অর্থনীতি স্থবির হয়ে থাকলেও ইতালির অর্থনৈতিক শক্তি বেড়েই চলেছে।

জার্মানির কমার্জ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ার্গ ক্রেমার বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ইতালির অর্থনীতি ৩.৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। ফ্রান্সের অর্থনীতির চেয়ে যা দ্বিগুণ এবং জার্মানির অর্থনীতির চেয়ে যা পাঁচ গুণ বেশি। গত প্রান্তিকে ইতালির অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.৬ শতাংশ। বিপরীতে একই সময়ে জার্মানির অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ০.৩ শতাংশ।

ইতালির আগের প্রান্তিকের ফলাফলও সন্তোষজনক। অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী হওয়ায় ইতালির নাগরিকরাও এর সুফল ভোগ করতে পারছে। উদাহরণ হিসেবে ৫০ বছর বয়সী আর্কিটেক্ট মাউররো কনজেইতোর কথা বলা যেতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব ইতালির সালেন্তো অঞ্চলে ২৫ বছর ধরে ঐতিহাসিক স্থাপনা খুঁজে বের করে সেগুলো সংস্কার করে আসছেন।

সমুদ্রঘেরা এই উপদ্বীপের ভেতরের দিকে এখন হঠাৎ করেই বিদেশিরা বাড়ি কিনছেন এবং সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন। এসব বাড়ি কিনছেন মূলত জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা। একসঙ্গে আটটি কাজ পেয়ে যাওয়ায় কনজেইতো বেশ খুশি। তাঁর মতে, আগের সোনালি দিন ফিরতে শুরু করেছে। করোনা মহামারির সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল তা কাটতে শুরু করেছে।

দেশটির শেয়ারবাজারও চাঙা হয়েছে। গত বছর এফটিএসই এমআইবি মানদণ্ড সূচক (৪০টি বড় কম্পানি অন্তর্ভুক্ত) বেড়েছে ২৮ শতাংশ। ইউরোপের যেকোনো শেয়ার মার্কেট সূচকের চেয়ে যা বেশি।

প্রতিবেশী দেশ জার্মানির অবস্থা চনমনে তো নয়ই, বরং তাদের অর্থনীতিকে এখন হিমশীতল আবহাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়। জার্মানির শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের মতে, এ বছর প্রবৃদ্ধি আসবে ০.১ শতাংশ মাত্র। ইতালির বিষয়ে ওইসিডির আশা, এ বছর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ০.৭ শতাংশ।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ক্ষমতায় আসেন ২০২২ সালের অক্টোবরে। তাঁর রাজনৈতিক দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত করে ‘মেড ইন ইতালি’ স্লোগান। তবে এতে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির অর্থনৈতিক নীতির তেমন কোনো অবদান নেই বলে মনে করেন ইয়ার্গ ক্রেমার।

তাঁর মতে, ইতালির অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার পেছনে শিথিল অর্থনৈতিক নীতির সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ ইতালির অর্থনীতির সম্প্রসারণ ঘটছে জমি ও ভবনের ওপর ঋণ দেওয়ার কারণে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইউরোপের শীর্ষ অর্থনীতি হতে যাচ্ছে ইতালি

আপডেট সময় : ১২:০১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪

ইউরোপের জন্য ইতালি এত দিন ছিল ‘প্রবলেম চাইল্ড’। এক কালের সেই যন্ত্রণা দেওয়া শিশুই এখন ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। ইউরোপের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি অচিরেই জার্মানিকে পেছনে ফেলতে পারে। জার্মানির অর্থনীতি স্থবির হয়ে থাকলেও ইতালির অর্থনৈতিক শক্তি বেড়েই চলেছে।

জার্মানির কমার্জ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ার্গ ক্রেমার বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ইতালির অর্থনীতি ৩.৮ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। ফ্রান্সের অর্থনীতির চেয়ে যা দ্বিগুণ এবং জার্মানির অর্থনীতির চেয়ে যা পাঁচ গুণ বেশি। গত প্রান্তিকে ইতালির অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.৬ শতাংশ। বিপরীতে একই সময়ে জার্মানির অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ০.৩ শতাংশ।

ইতালির আগের প্রান্তিকের ফলাফলও সন্তোষজনক। অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী হওয়ায় ইতালির নাগরিকরাও এর সুফল ভোগ করতে পারছে। উদাহরণ হিসেবে ৫০ বছর বয়সী আর্কিটেক্ট মাউররো কনজেইতোর কথা বলা যেতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব ইতালির সালেন্তো অঞ্চলে ২৫ বছর ধরে ঐতিহাসিক স্থাপনা খুঁজে বের করে সেগুলো সংস্কার করে আসছেন।

সমুদ্রঘেরা এই উপদ্বীপের ভেতরের দিকে এখন হঠাৎ করেই বিদেশিরা বাড়ি কিনছেন এবং সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন। এসব বাড়ি কিনছেন মূলত জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা। একসঙ্গে আটটি কাজ পেয়ে যাওয়ায় কনজেইতো বেশ খুশি। তাঁর মতে, আগের সোনালি দিন ফিরতে শুরু করেছে। করোনা মহামারির সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল তা কাটতে শুরু করেছে।

দেশটির শেয়ারবাজারও চাঙা হয়েছে। গত বছর এফটিএসই এমআইবি মানদণ্ড সূচক (৪০টি বড় কম্পানি অন্তর্ভুক্ত) বেড়েছে ২৮ শতাংশ। ইউরোপের যেকোনো শেয়ার মার্কেট সূচকের চেয়ে যা বেশি।

প্রতিবেশী দেশ জার্মানির অবস্থা চনমনে তো নয়ই, বরং তাদের অর্থনীতিকে এখন হিমশীতল আবহাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়। জার্মানির শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের মতে, এ বছর প্রবৃদ্ধি আসবে ০.১ শতাংশ মাত্র। ইতালির বিষয়ে ওইসিডির আশা, এ বছর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ০.৭ শতাংশ।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ক্ষমতায় আসেন ২০২২ সালের অক্টোবরে। তাঁর রাজনৈতিক দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত করে ‘মেড ইন ইতালি’ স্লোগান। তবে এতে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির অর্থনৈতিক নীতির তেমন কোনো অবদান নেই বলে মনে করেন ইয়ার্গ ক্রেমার।

তাঁর মতে, ইতালির অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ার পেছনে শিথিল অর্থনৈতিক নীতির সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ ইতালির অর্থনীতির সম্প্রসারণ ঘটছে জমি ও ভবনের ওপর ঋণ দেওয়ার কারণে।