নারীদের মুখ ঢাকা, পুরুষদের দাড়ি রাখা নিয়ে নতুন আফগান আইন
- আপডেট সময় : ১০:২১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / 43
আফগানিস্তানের আইন অনুযায়ী, এখন থেকে দেশটিতে নারীদের মুখ ঢেকে চলতে হবে, পুরুষদের দাড়ি রাখতে হবে, গাড়ি চালানোর সময় বাজানো যাবে না গান, বাদ দেওয়া যাবে না নামাজ আদায় ও রোজা পালন।
এসব নিয়মসহ নীতি-নৈতিকতা বিষয়ক একগুচ্ছ নিয়মকানুন গত সপ্তাহে আইন হিসেবে নথিভুক্ত ও কার্যকর করা শুরু করেছে দেশটির তালেবান সরকার। দেশটির বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে।
বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বরকতুল্লাহ রাসোলি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদার অনুমোদনের পর ৩৫টি ধারার নৈতিকতা আইনটি গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর ও প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশটির শরিয়া আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব নিয়মকানুন কার্যকর করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে ২০২২ সালে তালেবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার জারি করা এক ডিক্রিতে এসব নিয়মকানুনের কথা জানানো হয়েছিল। এখন সেটাই আইনে রূপ দেওয়া হয়েছে। দেশটির নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এর আগেও একই ধরনের নৈতিকতার নিয়ম প্রয়োগ করেছে।
এসব নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে। তবে নতুন আইন প্রকাশের পর এসব নিয়ম আরো কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে নারীদের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ এবং তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হ্রাস করে। এ কারণে মানবাধিকার সংগঠন এবং বহু বিদেশি সরকার তালেবানের কড়া সমালোচনা করে আসছে।
দেশটির রাজধানী কাবুলের ৩৭ বছর বয়সী হালিমা নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘দিনের পর দিন তালেবান সমাজ থেকে নারীদের মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা তালেবানকে নতুন আইন ও বিধি-নিষেধ তৈরি করতে উৎসাহিত করছে।’
আফগানিস্তানের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনটিতে নারীদের শরীর ও মুখ পুরোপুরি ঢেকে রাখার মতো পোশাক পরিধানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং পুরুষদের দাড়ি কামানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি নামাজ ও রোজা পালন না করার জন্য শাস্তির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
আইন লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির মধ্যে রয়েছে পরামর্শ, আল্লাহর শাস্তির হুঁশিয়ারি, মৌখিক হুমকি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, কারাগারে এক ঘণ্টা থেকে তিন দিন পর্যন্ত আটক রাখা এবং প্রয়োজনীয় যেকোনো শাস্তি।
এসব পদক্ষেপে একজন ব্যক্তির আচরণ সংশোধন না হলে, তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হবে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, নারীদের অধিকার নিশ্চিত না করা এবং মেয়েদের বিদ্যালয়গুলো খুলে না দেওয়ার কারণে তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি অনেকাংশে থমকে আছে। অন্যদিকে তালেবানের ভাষ্য, তারা নারীদের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে সেটা অবশ্যই শরিয়া আইন ও স্থানীয় প্রথার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া যাবে না।
সূত্র : এএফপি, দ্য ডন
নিউজটি শেয়ার করুন