ঢাকা ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ইসলামের জন্য ছেড়েছিলেন অভিনয় ॥ দেড় বছরের মাথায় ফের অন্তঃসত্ত্বা সানা খান Logo কলার খোসা রোজ লাগান, যৌবন উপচে পড়বে Logo শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরীমনি এবং দ্রুত প্রস্থান Logo যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক দল জানালেন, কেমন পুরুষকে বিয়ে করলে আপনি সুখী হতে পারবেন Logo বিবাহিত অথচ স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘুমান যে দেশে Logo সাভারে কাপড়ের গোডাউনে আগুন, দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে Logo শাকিবের সাক্ষাতে মুগ্ধতা যেন কাটতে চাইছে না সৌমিতৃষার Logo ৫৩ ঘণ্টা পর শ্রমিক অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক Logo পাচার অর্থ উদ্ধারে নিয়োগ হচ্ছে আন্তর্জাতিক ল ফার্ম Logo তিন দিনের সফরে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

 

মণিপুরে তীব্র উত্তেজনা: মুখ্যমন্ত্রী-গভর্নরের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:১৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 51
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ড্রোন-রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় কয়েকজনের প্রাণহানির পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে তৈরি হওয়া চরম উত্তেজনার মাঝে গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সাথে দ্বিতীয় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং। রোববার রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকারের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের সাথে নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং, একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়কদের সাথে নিয়ে গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক করেছেন। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া ওই বৈঠক চলে প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। বৈঠকে রাজ্যের উদ্ভূত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী নেতৃত্ব চান মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা ও চলমান সমস্যা মোকাবিলার প্রচেষ্টাকে জোরদার করার জন্য ইউনিফায়েড কমান্ড অথরিটি দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

বৈঠকের পর বীরেন সিং ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে চলে যান। ওই অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনার মাঝে স্থানীয় সরকারের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে।

মণিপুরের একাধিক সূত্র বলছে, রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে আরও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের ওপর জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।

রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হঠাৎ করে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানোর ঘটনায় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বেগে রয়েছে। চলমান সহিংসতায় মণিপুরে প্রথম ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বর। ওই দিন ইম্ফল পশ্চিম জেলার কৌত্রুক গ্রামের কাছে ড্রোন থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সেদিন ড্রোন থেকে বোমা হামলার পাশাপাশি কৌত্রুকে বন্দুক হামলাও চালানো হয়। এতে অন্তত দু’জন নিহত ও ৯ জন আহত হন।

পরের দিন কৌত্রুক থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের সেনজাম চিরাং এলাকায় আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত তিনজন। এদিকে, পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মণিপুরের জিরিবাম জেলায় শনিবার রাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সরকারের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা চলাকালীন পাঁচজন বা তার বেশিসংখ্যক মানুষ একসঙ্গে কোথাও জমায়েত হতে পারবেন না।

শনিবার কেবল জিরিবামেই হামলা-পাল্টা হামলায় এক সৈন্যসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। মণিপুর পুলিশ বলছে, শনিবার জিরিবামে বাড়িতে ঢুকে ঘুমের মধ্যে গুলি চালিয়ে একজনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, আসাম ট্রিবিউন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

মণিপুরে তীব্র উত্তেজনা: মুখ্যমন্ত্রী-গভর্নরের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

আপডেট সময় : ১০:১৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ড্রোন-রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় কয়েকজনের প্রাণহানির পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে তৈরি হওয়া চরম উত্তেজনার মাঝে গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সাথে দ্বিতীয় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং। রোববার রাজ্যের ক্ষমতাসীন সরকারের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের সাথে নিয়ে গভর্নরের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং, একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়কদের সাথে নিয়ে গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সাথে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক করেছেন। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে শুরু হওয়া ওই বৈঠক চলে প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। বৈঠকে রাজ্যের উদ্ভূত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী নেতৃত্ব চান মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা ও চলমান সমস্যা মোকাবিলার প্রচেষ্টাকে জোরদার করার জন্য ইউনিফায়েড কমান্ড অথরিটি দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।

বৈঠকের পর বীরেন সিং ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে চলে যান। ওই অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনার মাঝে স্থানীয় সরকারের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে।

মণিপুরের একাধিক সূত্র বলছে, রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে আরও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের ওপর জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।

রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হঠাৎ করে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানোর ঘটনায় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বেগে রয়েছে। চলমান সহিংসতায় মণিপুরে প্রথম ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বর। ওই দিন ইম্ফল পশ্চিম জেলার কৌত্রুক গ্রামের কাছে ড্রোন থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সেদিন ড্রোন থেকে বোমা হামলার পাশাপাশি কৌত্রুকে বন্দুক হামলাও চালানো হয়। এতে অন্তত দু’জন নিহত ও ৯ জন আহত হন।

পরের দিন কৌত্রুক থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের সেনজাম চিরাং এলাকায় আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত তিনজন। এদিকে, পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মণিপুরের জিরিবাম জেলায় শনিবার রাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সরকারের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা চলাকালীন পাঁচজন বা তার বেশিসংখ্যক মানুষ একসঙ্গে কোথাও জমায়েত হতে পারবেন না।

শনিবার কেবল জিরিবামেই হামলা-পাল্টা হামলায় এক সৈন্যসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। মণিপুর পুলিশ বলছে, শনিবার জিরিবামে বাড়িতে ঢুকে ঘুমের মধ্যে গুলি চালিয়ে একজনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, আসাম ট্রিবিউন।