ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

কেন খাবেন সজিনা?

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / 101
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সজিনা একটি অতিপরিচিত পুষ্টি ও খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ সবজি। এতে প্রায় ৩০০ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া শরীরের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনের সাথে অত্যাবশ্যকীয় সব এমিনো এসিড সজিনা পাতায় আছে বলে সজিনাকে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ বলা হয়। সজিনার পাশাপাশি সজিনা পাতা পুষ্টি ঘাটতি পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সজিনা বা সাজনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। গবেষকরা সজিনা পাতাকে নিউট্রিশন্স সুপার ফুড বলেছেন। শাক হিসেবে ব্যবহৃত সজিনা পাতায় রয়েছে ভিটামিন-এ’র এক বিশাল উৎস। সজিনা পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি থাকে।

আন্তর্জাতিক সাময়িকী ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফাইটোথেরাপির তথ্য, সজিনা গাছের শুকনো পাতায় কমলালেবুর থেকে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। এতে দইয়ের চেয়ে নয় গুণ বেশি প্রোটিন, গাঁজরের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ভিটামিন এ আছে। এবং কলার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি পটাসিয়াম থাকে সজিনাতে।

চিকিৎসকেরা বলেন, শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে সজিনার শিকড়ের প্রলেপ দিলে ওই ব্যথা ও ফোলা সেরে যায়। সজিনার আঠা দুধের সাথে খেলে ও কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা সেরে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে সজিনার ফুল। এই ফুল খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। সজিনার ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্রথলির পাথর দূর হয়। একইসঙ্গে তা হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রেও বিশেষ উপকারী।

সজিনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে দিলে শিশুদের পেট জমা গ্যাস দূর হয়। এই সবজির চাটনি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। সজিনার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়।

সজিনা পাতার শাক খেলে যন্ত্রণাধায়ক জ্বর ও সর্দি সেরে যায়। সজিনার ফল নিয়মিত রান্না করে খেলে গেঁটে বাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সজিনা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। এছাড়াও শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারি ধাতু অপসারণ করে ফেলে। তা ছাড়া শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, মাথা ধরা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস এবং চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় ও সজিনা কার্যকর ভূমিকা রাখে।

উল্লেখ্য, থাইরয়েডের চিকিৎসার সময় অন্য কোনো ওষুধের সাথে মেশালে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা খুবই কমিয়ে দিতে পারে। রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সাথে এটি খেলে তা রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে। এবং যাদের কিডনিতে সমস্যা আছে তাদের সজিনা না খাওয়াই উত্তম।

সজিনায় প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এতে ৩৬টির মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে।

এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সজিনায় প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্য উপযোগী পুষ্টি উপাদানের মধ্যে জ্বলীয় অংশ ৮৩.৩ গ্রাম, খনিজ ১.৯ গ্রাম, আঁশ ৪.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬০ কিলো-ক্যালোরি, প্রোটিন ৩.২ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ১১.৪ গ্রাম, ক্যালশিয়াম ২১.০ মিলিগ্রাম, লোহা ৫.৩ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-এ ১-০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ১-০.০২ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন-সি ৪৫.০ মিলিগ্রাম বিদ্যমান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

কেন খাবেন সজিনা?

আপডেট সময় : ১১:৩৬:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

 

সজিনা একটি অতিপরিচিত পুষ্টি ও খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ সবজি। এতে প্রায় ৩০০ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া শরীরের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনের সাথে অত্যাবশ্যকীয় সব এমিনো এসিড সজিনা পাতায় আছে বলে সজিনাকে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ বলা হয়। সজিনার পাশাপাশি সজিনা পাতা পুষ্টি ঘাটতি পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সজিনা বা সাজনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। গবেষকরা সজিনা পাতাকে নিউট্রিশন্স সুপার ফুড বলেছেন। শাক হিসেবে ব্যবহৃত সজিনা পাতায় রয়েছে ভিটামিন-এ’র এক বিশাল উৎস। সজিনা পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি থাকে।

আন্তর্জাতিক সাময়িকী ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফাইটোথেরাপির তথ্য, সজিনা গাছের শুকনো পাতায় কমলালেবুর থেকে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। এতে দইয়ের চেয়ে নয় গুণ বেশি প্রোটিন, গাঁজরের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ভিটামিন এ আছে। এবং কলার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি পটাসিয়াম থাকে সজিনাতে।

চিকিৎসকেরা বলেন, শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে সজিনার শিকড়ের প্রলেপ দিলে ওই ব্যথা ও ফোলা সেরে যায়। সজিনার আঠা দুধের সাথে খেলে ও কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা সেরে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে সজিনার ফুল। এই ফুল খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। সজিনার ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্রথলির পাথর দূর হয়। একইসঙ্গে তা হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রেও বিশেষ উপকারী।

সজিনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে দিলে শিশুদের পেট জমা গ্যাস দূর হয়। এই সবজির চাটনি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। সজিনার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়।

সজিনা পাতার শাক খেলে যন্ত্রণাধায়ক জ্বর ও সর্দি সেরে যায়। সজিনার ফল নিয়মিত রান্না করে খেলে গেঁটে বাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সজিনা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। এছাড়াও শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারি ধাতু অপসারণ করে ফেলে। তা ছাড়া শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, মাথা ধরা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস এবং চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় ও সজিনা কার্যকর ভূমিকা রাখে।

উল্লেখ্য, থাইরয়েডের চিকিৎসার সময় অন্য কোনো ওষুধের সাথে মেশালে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা খুবই কমিয়ে দিতে পারে। রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সাথে এটি খেলে তা রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে। এবং যাদের কিডনিতে সমস্যা আছে তাদের সজিনা না খাওয়াই উত্তম।

সজিনায় প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এতে ৩৬টির মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে।

এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সজিনায় প্রতি ১০০ গ্রামে খাদ্য উপযোগী পুষ্টি উপাদানের মধ্যে জ্বলীয় অংশ ৮৩.৩ গ্রাম, খনিজ ১.৯ গ্রাম, আঁশ ৪.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬০ কিলো-ক্যালোরি, প্রোটিন ৩.২ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ১১.৪ গ্রাম, ক্যালশিয়াম ২১.০ মিলিগ্রাম, লোহা ৫.৩ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-এ ১-০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি ১-০.০২ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন-সি ৪৫.০ মিলিগ্রাম বিদ্যমান।