তীব্র গরমে ত্বকের যত্নে যা যা করতে পারেন
- আপডেট সময় : ১১:২০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
সারাদেশে তাবদাহ চলছে। তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। চলমান এই তাপপ্রবাহে অফিস বা ক্লাসে যাওয়ার সময় ত্বক ও শরীরের যত্নে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরী। এজন্য এসময় নিতে হবে ত্বকের বিশেষ যত্ন। চলুন দেখে নিই কিভাবে এই গরমেও কিছু প্রসাধনী ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক ভালো রাখবেন।
প্রসাধনী ব্যবহার
ক্লিনজার : এই গরমে ক্লিনজার ব্যবহার করা খুবই জরুরী। বিশেষ করে বাইরে থেকে এসে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে হবে। তৈলাক্ত ত্বক এই গরমে আরো বেশি তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। এই জমে থাকা তেল দূর করার জন্য ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া প্রয়োজন। এতে ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
টোনার : ক্লিনজারের পরবর্তী স্টেপ হলো টোনার। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ক্লিনজার ব্যবহারের পর ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ টোনার ব্যবহার করা উত্তম।
সিরাম : ত্বকের যত্নে সিরাম ব্যবহার করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য নায়াসিনামাইড সিরাম কিংবা শুষ্ক ত্বকের জন্য হায়ালুরনিক অ্যাসিড বা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ সিরাম ব্যবহার করা ভালো।
ময়েশ্চরাইজার : গরম কিংবা শীত সব সিজনেই ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী। চাইলে জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ ময়েশ্চরাইজারও ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক হাইড্রেটেড দেখাবে ও ভালো থাকবে।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করা : তাপপ্রবাহের এই সময় নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সানস্ক্রিনের বিকল্প আর কিছুই হয়না। চেষ্টা করবেন বেশি এসপিএফ-যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করার। শুধু তাই-ই না, ২-৩ ঘণ্টা পরপর আবার লাগাতে হবে যদি, পুরোপুরি রোদ থেকে সুরক্ষা পেতে চান।
এজন্য ব্যাগে সবসময় সানস্ক্রিন রাখতে পারেন। নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে রোদে পোড়া ভাব থেকে ত্বক রক্ষা পাবে, এমনকি সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি থেকে সৃষ্ট ত্বকের ক্যানসার হতেও মিলতে পারে সুরক্ষা।
করণীয়
ত্বক তরতাজা ও উজ্জ্বল রাখতে অতিরিক্ত সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। এ জন্য বাইরে বেরোলে ছাতা বা বড় কিনারাযুক্ত টুপি ব্যবহার করা যায়।
ভেজা কাপড় পরে থাকলে ত্বকে দাদ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই ঘামে ভেজা কাপড় পাল্টে শুষ্ক ও পাতলা কাপড় পরে নিতে হবে।
ছায়ায় অবস্থান করা : বাইরে থাকা অবস্থায় চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকা। বিশেষ করে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকার ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত রোদের তেজ প্রখর থাকে। এ সময় রোদে বেশিক্ষণ থাকলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। সবসময় ছায়া না-ও পেতে পারেন বাহিরে, এক্ষেত্রে ব্যাগে ছাতা রাখতে পারেন।
হাইড্রেটেড থাকা : তাপপ্রবাহের এই সময়টায় হাইড্রেটেড থাকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে পানির ঘাটতি কিছুতেই করা যাবেনা। এতে ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়ার পাশাপাশি শরীরও খারাপ করে ফেলতে পারে। এমনকি পানিশূন্যতা থেকে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে।
ত্বক শীতল রাখা : ত্বক যতটা সম্ভব শীতল রাখার চেষ্টা করুন। বাহিরে চাইলে মুখে পানির ঝাপটা দিতে পারেন, আবার গোসল করে বের হতে পারেন। ত্বক শীতল না থাকলে অ্যালার্জি, র্যাশ ইত্যাদি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ত্বক ও ঠোঁট আর্দ্র রাখা : অনেকেরই এই তীব্র তাপপ্রবাহে ত্বক ও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে পড়ে। এতে করে ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়। তাই নিয়মিত ত্বক ও ঠোঁট ময়েশ্চার রাখতে হবে। চাইলে জেল বেসড ময়েশচরাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
আরামদায়ক পোশাক পরা : সুতির আরামদায়ক ঢোলাঢালা পোশাক পরে বের হওয়ার চেষ্টা করুন। এ জাতীয় কাপড়ের মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে করে তীব্র তাপপ্রবাহে কম অস্বস্তি হবে।
সতর্কতা
গোসলের পর শরীরের ভাঁজগুলোয় যেন পানি জমে না থাকে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট হোন। এসব স্থান ভেজা থাকলে সহজে ছত্রাক জন্মায়।
ভাঁজযুক্ত স্থানে পাউডার ব্যবহার না করাই ভালো। পাউডারের সঙ্গে ঘাম মিশে ভেজা স্যাঁতসেঁতে অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, যা ছত্রাক জন্মানোর পক্ষে আরও সহায়ক হতে পারে।
গরমকালে তেল ব্যবহার না করাই ভালো।
এছাড়াও সপ্তাহে দুএকবার ত্বকের ধরণ বুঝে ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি এক্সফোলিয়েটের জন্য স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার