গরমে ফলের র সখাবেন নাকি গোটা ফল?
- আপডেট সময় : ১১:২৯:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪
- / 89
সুস্থ থাকতে নিয়ম করে ফল খাওয়ার বিকল্প নেই। পুষ্টিবিদদের মতে, রোজ অন্তত দু’টি করে ফল খাওয়া উচিত। গোটা ফল খাওয়ার পাশাপাশি অনেকে আবার ফলের রসও খান।
গরমের সময় প্রাণ জুড়াতে বিভিন্ন রকম পানীয়ের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তাজা ফলের রস বেশি লোভনীয়। ফলের রসকে অস্বাস্থ্যকর বলার উপায় নেই। কারণ এগুলো সরাসরি ফল দিয়েই প্রস্তুত করা হয়। আবার খাওয়ার পর শরীর-মনও জুড়িয়ে যায়। কিন্তু এই গরমে ফল নাকি ফলের রস, কোনটি বেশি উপকারী? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলের রস নয়, আস্ত ফল খাওয়াই বেশি ভালো। কারণ আস্ত ফলের বদলে ফলের রস খেলে তা শরীরে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অনেকেই মনে করেন ফলের রসেই রয়েছে একটা গোটা ফলের গুণ! কিন্তু উপকারের দিক থেকে কোনটা কম, কোনটা বেশি চলুন জেনে নেওয়া যাক-
গোটা ফল খাওয়ার উপকারিতা
গোটা ফলে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তা ছাড়া ফলে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল। এগুলো রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায়। ক্যানসার, হার্টের সমস্যা কমায়। রোজ পরিমিত পরিমাণে ফল খেলে স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
ওজন কমায়
শরীরের ওজন কমাতে হলে ডায়েটে অবশ্যই রাখতে হবে ফলমূল ও শাকসবজি। ফলে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার উপাদান খুব বেশি। যে কারণে অল্পতেই আমাদের পেট ভরে যায়। বেরি, আপেল, নাশপাতি, আঙুর এবং সাইট্রাস ফলগুলো ওজন কমাতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
ফলের রসের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক
ফল খাওয়ার অত্যন্ত সুবিধাজনক উপায় ফলের রস। তবে ফলের রসে গোটা ফলের তুলনায় ফাইবার অনেকটাই কম থাকে। ফল থেকে রস বের করে নিলে ভিটামিন ও পটাসিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। তা ছাড়া ফলের রসে পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কম এবং চিনি ও ক্যালোরি অনেক বেশি থাকতে পারে। বিশেষ করে প্যাকেটজাত ফলের রস একেবারেই ভালো নয়।
ফাইবারের অনুপস্থিতি
দোকানে তৈরি ফলের রসে চিনি ব্যবহার করা হয়। এটি আপনার শরীরের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এছাড়া গোটা ফলে যে সমস্ত প্রয়োজনীয় ফাইবার থাকে, তা রস করার সময় নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ফলের রস খেলে ফলের পুরো গুণাগুণ পাওয়া যায় না।
ওজন বাড়াতে পারে
যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন তাদের জন্য ফলের রস এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ ফলের রস খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি আপনার শরীরে চলে যায়, যে কারণে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর বদলে যদি আস্ত ফল খাওয়া হয় তবে সেক্ষেত্রে ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না।
পুষ্টিগুণ কম থাকে
ফলে যেমন পুষ্টি থাকে ফলের রসে তা থাকে অনুপস্থিত। ফলে থাকা ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রস তৈরি করার সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই সঠিক পুষ্টি পেতে চাইলে আপনাকে ফলের রস না খেয়ে আস্ত ফলই খেতে হবে।
দাঁত নষ্ট হওয়ার ভয়
দাঁত ভালো রাখতে চাইলে ফলের রসের পরিবর্তে আস্ত ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ ফলের রসে প্রাকৃতিক শর্করার উপস্থিতি থাকে। এটি আমাদের দাঁত নষ্ট করে দিতে পারে। এর বদলে আপনি যদি আস্ত ফল খান তবে আপনার দাঁতের ক্ষয় হবে না এবং আপনার দাঁত ভালো থাকবে।
গোটা ফল নাকি ফলের রস?
ফল এবং ফলের রস উভয়ই ভালো। তবে ফলের রসের চেয়ে গোটা ফল খাওয়াই বেশি স্বাস্থ্যকর, এমনটাই মত পুষ্টিবিদদের। গোটা ফল আপনার শরীরে যে উপকার করবে, ফলের রস সেই পরিমাণ উপকার করতে পারবে না। ফলের রসে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে। আর ফলের রসের উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে তা বেশি দ্রুত শরীরে চলে যায়। তাই পুরো ফল খাওয়াই বেশি ভালো।
এছাড়া অনেক ফলের পাল্প এবং খোসায় ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। শুধুমাত্র রস এই পুষ্টি পুরোপুরি ধারণ করতে পারে না। যেমন কমলা ফ্ল্যাভোনয়েডের একটি সমৃদ্ধ উৎস; তবে বেশিরভাগ ফ্ল্যাভোনয়েড পাল্পে সঞ্চিত থাকে, রসে নয়।
নিউজটি শেয়ার করুন