অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে ঘরোয়া টিপস
- আপডেট সময় : ১২:১৩:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪
- / 92
নির্দিষ্ট বয়সে একজন কিশোরী কিংবা তরুণীর নিয়মিত ও সময়মতো পিরিয়ড বা মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক। তা না হয়ে মাসিক যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তখন বুঝতে হবে আপনার শারীরিক কোনো সমস্যা আছে। এ ক্ষেত্রে কোনো অসুস্থতা শরীরে ভর করেছে কিনা বা জীবনচর্চায় কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস যুক্ত হয়েছে কিনা, তার দিকে নজর দেয়া উচিত।
নানারকম সমস্যার কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়। এটি অন্য কোনো রোগের লক্ষণও হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত কাজের চাপ, ওজন হ্রাস, থাইয়রেড সমস্যা, মানসিক চাপ, ওভারির সমস্যা, অতিরিক্ত ব্যায়াম, হরমোন ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি কারণে সাধারণত মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
পিরিয়ড অনিয়মিত হলে দুশ্চিন্তা না করে এর কারণ বের করুন। আর এমন হলে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে এটি নিয়মিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
হঠাৎ আপনার মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়লে সেটিকে নিয়মিত করার উপায়ও আছে। চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে আপনি মাসিক নিয়মিত করতে পারে। জেনে নেয়া যাক ঘরোয়া টিপস-
ব্যায়াম : নিয়মিত ব্যায়াম করলে এই সমস্যা থাকে না। তবে নিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে, সেগুলো করলে অনেক সময় মাসিক হয়ে যায়। ব্যায়ামের ধরন রয়েছে। যেটা পিরিয়ডের আগে-পরে কিংবা ওই সময় করার জন্য আলাদাভাবে বলা থাকে কোন ব্যায়ামটি কোন সময়ের জন্য।
টকজাতীয় ফল : যেমন- তেঁতুল, মাল্টা, জলপাই পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে থাকে। চিনি মেশানো পানিতে তেঁতুল এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এর পর এর সঙ্গে লবণ, চিনি ও জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এটি দিনে দুবার পান করুন। নিয়মিত পিরিয়ডের জন্য এই পানীয় কাজে দেবে।
আদা : মাসিকের চক্রকে নিয়মিত করতে আদা বেশ কার্যকর। ১ কাপ পানিতে ১/২ চা চামচ আদা কুচি দিয়ে ৫-৭ মিনিট সিদ্ধ করে পানিতে মিশিয়ে নিন। খাবার খাওয়ার পর তিনবেলা এটি পান করুন। নিয়মিত এক মাস এটি পান করুন।
তিল : তিল একটি উপকারী উপাদান। এটি আপনার অনিয়মিত মাসিককে নিয়মিত করতে সাহায্য করবে। তিলের উপাদান হরমোন উৎপাদন করে থাকে। অল্প পরিমাণের তিল ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ গুড় মিশিয়ে নিন। এটি রোজ খালি পেটে এক চা চামচ করে খান। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।
আপেল সাইডার ভিনেগার : খাবার খাওয়ার আগে ২ টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এটি রক্তের ইনসুলিন ও ব্লাড সুগার কমিয়ে দিয়ে থাকে, যা মাসিক নিয়মিত করে থাকে।
স্বাস্থ্যকর জীবন : যেসব নারীর মেনোপজের বয়স হয়ে এসেছে, তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আরও বেশি জরুরি। কারণ মেনোপজের পর পরই অনেক রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
কাঁচা পেঁপে : কাঁচা পেঁপে পিরিয়ডের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হয়। কারণ এটি জরায়ুতে পেশী তন্তুকে সংকুচিত করতে সাহায্য করে। কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেঁপের রস পান করলে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দূর হবে। তবে পিরিয়ড চলাকালীন এটি পান করবেন না।
হলুদ : হলুদকে সেরা ঔষধি ভেষজগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয় যা বেশ উষ্ণতাদায়ক। এটি পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। অ্যান্টিস্পাসমোডিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য মাসিকের ব্যথা উপশম করে। দুধ, মধু বা গুড়ের সঙ্গে এক-চতুর্থাংশ চা চামচ হলুদ খান। কয়েক সপ্তাহের জন্য বা অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এটি প্রতিদিন খান।
অ্যালোভেরার ব্যবহার : অ্যালোভেরা হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিকভাবে অনিয়মিত পিরিয়ডের চিকিৎসা করতে সাহায্য করে। সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়ার জন্য একটি অ্যালোভেরা পাতা থেকে তাজা অ্যালোভেরা জেল বের করুন, এরপর এক চা চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালের নাস্তা করার আগে এটি খান। আপনার পিরিয়পের সময় এই প্রতিকারটি ব্যবহার করবেন না।
জিরা : জিরায় রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। অনিয়মিত পিরিয়ডের চিকিৎসায় ভেজানো জিরা ব্যবহার করা যেতে পারে। ২ চামচ জিরা নিয়ে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে জিরা ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু পান করুন। পিরিয়ড নিয়মিত করার জন্য প্রতিদিন এই পানি পান করুন।
দারুচিনি : দারুচিনি শুধু খাবারের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে না, এটি মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এটি শরীরে উষ্ণতা বজায় রাখতে কাজ করে। এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে তাতে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে পান করুন। এটি অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী।
মনে রাখবেন একবার মাসিক দেরিতে হলে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তবে পিরিয়ডের দিকে খেয়াল রাখুন। তিন মাস টানা পিরিয়ড না হলে, বছরে ৯ বারের কম পিরিয়ড হলে বা প্রতিবার পিরিয়ড হওয়ার মাঝে ৩৫ দিনের বেশি বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
নিউজটি শেয়ার করুন