ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪
  • / 52
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ স্পেশাল ট্রেনে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর, চট্টগ্রাম রেলওয়ে অফিস এবার ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে রুটটিতে নিয়মিত রেল সেবা চালু করতে চাইছে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় দপ্তর (ডিআরএম) থেকে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। একটি ট্রেনকে দুই ট্রিপ, অর্থাৎ দিনে দুইবার যাতায়াতের কথা বলা হয় ওই প্রস্তাবে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ বিশেষ ট্রেনটি গত ৮ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত মোট ২৫ দিনে (৩দিন চলাচল বন্ধ ছিল) ৫১ লাখ ২৫ হাজার ৩৬২ টাকার রাজস্ব আয় করেছে।

ওই ট্রেনে ১০টি বগিতে মোট আসন ছিল ৪৩৮টি। তবে যাত্রীর চাহিদা বিবেচনায় অতিরিক্ত বগি সংযোজন করে ৫০০-৫৫০ আসনের ব্যবস্থাও করা হতো। এরপরও যাত্রীদের চাহিদা থাকতো। ঈদের পরে অন্যান্য রুটের বিশেষ ট্রেন বন্ধ করা হলেও চাহিদা থাকায় এটি ২০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

ডিআরএম দপ্তরের প্রস্তাবে বিশেষ ট্রেনটি নিয়মিত করে এক ট্রিপের পরিবর্তে দুই ট্রিপ (দুই জোড়া) চালানো কথা বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের ভ্রমণের সুবিধার্থে বর্তমানে ১০ বগির পরিবর্তে ১৮ বগিতে নিয়মিত চালুর পাশাপাশি আরো এক জোড়া ট্রেন পরিচালনা অতীব প্রয়োজন। এতে করে যাত্রী চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রেলওয়ের ভাবমূর্তি ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।’

প্রস্তাবটি রেল ভবনে গিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। ১৮ বগিসহ ট্রেন চালু হলে প্রায় সাড়ে ৮০০ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন প্রতি ট্রিপে।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “এই রুটের যাত্রী বেশি। আয়ও ভালো। বিষয়গুলো বিবেচনা করে একটি ট্রেন, দিনে দুইবার যাতায়াতের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবের সঙ্গে আয়ের হিসাবও যুক্ত করেছি। আশা করছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনা করবে।”

অবহেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল রুট
নয় দশকের অপেক্ষার পর চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের রেলসংযোগ স্থাপনের বিষয়টি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হলেও শুরু থেকেই উপেক্ষিত হয় চট্টগ্রাম।

প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথ গত বছরের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ডিসেম্বর থেকে দুই ধাপে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে দুটি বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন চালু করে রেলওয়ে।

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চালু না হওয়ায় সমালোচনা মুখে প্রতিটি ট্রেনের দুটি কোচের মাত্র ১১০টি আসন চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রুট নিয়ে মানুষের প্রচুর আগ্রহ রয়েছে। প্রতিদিন গড় ৪০ হাজার মানুষ কক্সবাজারে যাতায়াত করে। ১০ হাজার মানুষও যদি ট্রেনে ওঠেন, তবে এটি হবে সবচেয়ে লাভজনক রুট। কিন্তু ইঞ্জিন সংকটের কারণে অপেক্ষার পালা দীর্ঘ হচ্ছে।

এদিকে রেলওয়ের নতুন মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর বিষয়টি সংস্থাটির এক নম্বর অগ্রাধিকারে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।

গত ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিআরবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “আমরা নীতিগতভাবে একমত; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন দিতে হবে। এটা এক নম্বর প্রায়োরিটি।”

“আমরা জানি, এই রুটে ট্রেন চালু হলে মানুষের কষ্ট কমবে। রেলওয়ের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। সমস্যা হচ্ছে জনবল ও ইঞ্জিন সংকট,” যোগ করেন তিনি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর প্রস্তাব

আপডেট সময় : ১১:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ স্পেশাল ট্রেনে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর, চট্টগ্রাম রেলওয়ে অফিস এবার ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে রুটটিতে নিয়মিত রেল সেবা চালু করতে চাইছে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় দপ্তর (ডিআরএম) থেকে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। একটি ট্রেনকে দুই ট্রিপ, অর্থাৎ দিনে দুইবার যাতায়াতের কথা বলা হয় ওই প্রস্তাবে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ঈদ বিশেষ ট্রেনটি গত ৮ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত মোট ২৫ দিনে (৩দিন চলাচল বন্ধ ছিল) ৫১ লাখ ২৫ হাজার ৩৬২ টাকার রাজস্ব আয় করেছে।

ওই ট্রেনে ১০টি বগিতে মোট আসন ছিল ৪৩৮টি। তবে যাত্রীর চাহিদা বিবেচনায় অতিরিক্ত বগি সংযোজন করে ৫০০-৫৫০ আসনের ব্যবস্থাও করা হতো। এরপরও যাত্রীদের চাহিদা থাকতো। ঈদের পরে অন্যান্য রুটের বিশেষ ট্রেন বন্ধ করা হলেও চাহিদা থাকায় এটি ২০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

ডিআরএম দপ্তরের প্রস্তাবে বিশেষ ট্রেনটি নিয়মিত করে এক ট্রিপের পরিবর্তে দুই ট্রিপ (দুই জোড়া) চালানো কথা বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের ভ্রমণের সুবিধার্থে বর্তমানে ১০ বগির পরিবর্তে ১৮ বগিতে নিয়মিত চালুর পাশাপাশি আরো এক জোড়া ট্রেন পরিচালনা অতীব প্রয়োজন। এতে করে যাত্রী চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রেলওয়ের ভাবমূর্তি ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।’

প্রস্তাবটি রেল ভবনে গিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। ১৮ বগিসহ ট্রেন চালু হলে প্রায় সাড়ে ৮০০ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন প্রতি ট্রিপে।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “এই রুটের যাত্রী বেশি। আয়ও ভালো। বিষয়গুলো বিবেচনা করে একটি ট্রেন, দিনে দুইবার যাতায়াতের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবের সঙ্গে আয়ের হিসাবও যুক্ত করেছি। আশা করছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনা করবে।”

অবহেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল রুট
নয় দশকের অপেক্ষার পর চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের রেলসংযোগ স্থাপনের বিষয়টি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হলেও শুরু থেকেই উপেক্ষিত হয় চট্টগ্রাম।

প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথ গত বছরের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ডিসেম্বর থেকে দুই ধাপে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে দুটি বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন চালু করে রেলওয়ে।

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চালু না হওয়ায় সমালোচনা মুখে প্রতিটি ট্রেনের দুটি কোচের মাত্র ১১০টি আসন চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রুট নিয়ে মানুষের প্রচুর আগ্রহ রয়েছে। প্রতিদিন গড় ৪০ হাজার মানুষ কক্সবাজারে যাতায়াত করে। ১০ হাজার মানুষও যদি ট্রেনে ওঠেন, তবে এটি হবে সবচেয়ে লাভজনক রুট। কিন্তু ইঞ্জিন সংকটের কারণে অপেক্ষার পালা দীর্ঘ হচ্ছে।

এদিকে রেলওয়ের নতুন মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর বিষয়টি সংস্থাটির এক নম্বর অগ্রাধিকারে রয়েছে বলে জানিয়েছেন।

গত ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিআরবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “আমরা নীতিগতভাবে একমত; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন দিতে হবে। এটা এক নম্বর প্রায়োরিটি।”

“আমরা জানি, এই রুটে ট্রেন চালু হলে মানুষের কষ্ট কমবে। রেলওয়ের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। সমস্যা হচ্ছে জনবল ও ইঞ্জিন সংকট,” যোগ করেন তিনি।