ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাছপাকা নাকি কৃত্রিমভাবে পাকানো আম চিনবেন যেভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আমের মরশুম হাজির। বাজারে এখন ভরা আমের পশরা। তার স্বাদে মুগ্ধ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন আমপ্রেমীরা। গাছপাকা হলে ভালো তবে কৃত্রিমভাবে পাকানো আম খেলে ক্যানসার পর্যন্তও হতে পারে।

আম কৃত্রিমভাবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামক রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো হয়। যা একটি কার্সিনোজেন (ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ)। সব ধরনের ফল পাকার নির্দিষ্ট একটি সময় থাকে। ওই সময়ের আগে বেশি লাভে বিক্রির আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা রাসায়নিক ব্যবহার করে ফল পাকান।

ইথানল হলো ফল পাকানোর প্রধান রাসায়নিক। যদিও কৃষকরা ফল পাকার আগেই তা গাছ থেকে সংগ্রহ করেন, নিরাপদ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য।

ফল বিক্রেতারা কাঁচা অবস্থাতেই ফল কেনেন ও পরে তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করেন। তবে এ সময়ের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ীরা আবার রাসায়নিক ব্যবহারের মাধ্যমে ফল পাকান। ঠিক একইভাবে সময়ের আগে আমও পাকানো হয়।

অনেক সময় আসল পাকা আমের চেয়ে ফরমালিনে পাকানো আম দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয়। আর বেশিরভাগ মানুষই আকর্ষণীয় আমগুলোই কেনেন।

গাছপাকা আমের সঙ্গেই মিশে থাকে রাসায়নিকে পাকানো আম। কী করে চিনবেন, তার জন্য জেনে নিন কৌশল-

আমের গায়ে সবুজ ছোপ
কৃত্রিমভাবে পাকা আমের গায়ে সবুজ ছোপ থাকে। এই প্যাচগুলো হলুদ থেকে স্পষ্টভাবে আলাদা করা যায়। অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের গায়ে হলুদ ও সবুজ রঙের সমান মিশেল থাকে। প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের চেয়ে আবার কৃত্রিমভাবে পাকা আম বেশি উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয়।

মুখে হালকা জ্বালা অনুভব করা
কৃত্রিমভাবে পাকা আম খাওয়ার সময় মুখে হালকা জ্বালা অনুভব হয়। এমন আম খাওয়ার পরে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া এমনকি গলায় জ্বালাপোড়ার মতো গুরুতর প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

হালকা বা গাঢ় হলুদ রং
আপনি যখন প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম কাটবেন তখন দেখবেন আমের পাল্পের রং উজ্জ্বল লাল-হলুদ। তবে কৃত্রিমভাবে পাকা আমের ক্ষেত্রে এটি হালকা ও গাঢ় হলুদ।
এমন রং বলে দেয় যে সেটি পুরোপুরিভাবে পাকেনি। এসন আম বাইরে থেকে পুরোপুরি পাকা মনে হবে কিন্তু ভেতরে কাঁচাভাব থাকে।

রস ও মিষ্টিভাব কম
প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম অনেক রসালো ও মিষ্টি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে কৃত্রিমভাবে পাকা আমের ক্ষেত্রে রস ও মিষ্টিভাব দুটোই কম থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমের মৌসুমে যখন প্রচুর পরিমাণে পাকা আম পাওয়া যায় তখন প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম সহজেই পাওয়া যায়। তাই যে মৌসুমের ফল তখনই খাওয়া উচিত।

কৃত্রিমভাবে পাকা আম খেলে কী হয়?
এ বিষয়ে শরণ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ডা. নন্দিতা শাহের মতে, রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে পাকানো আম খেলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েড, পিসিওএস, ডায়াবেটিস ইত্যাদির মতো হরমোনজনিত রোগের সংখ্যা বাড়ায় সেসব রাসায়নিক। এমনকি পারকিনসন ও ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়।

সঠিকভাবে ধুয়ে বা বাইরের চামড়া ফেলে দিলে কী রাসায়নিক পদার্থ থেকে মুক্তি মেলে? এ বিষয়ে ডা. শাহ জানান, যে কোনো ফল কেনার পর তা ঘণ্টাখানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।

তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিন। আমের ক্ষেত্রে অবশ্যই খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে। তবে আম খাওয়ার সময় মুখে জ্বলুনি অনুভব করলে তা খাবেন না। আর অবশ্যই সঠিক মৌসুমেই আম খান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গাছপাকা নাকি কৃত্রিমভাবে পাকানো আম চিনবেন যেভাবে

আপডেট সময় : ১০:৪০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

আমের মরশুম হাজির। বাজারে এখন ভরা আমের পশরা। তার স্বাদে মুগ্ধ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন আমপ্রেমীরা। গাছপাকা হলে ভালো তবে কৃত্রিমভাবে পাকানো আম খেলে ক্যানসার পর্যন্তও হতে পারে।

আম কৃত্রিমভাবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামক রাসায়নিক ব্যবহার করে পাকানো হয়। যা একটি কার্সিনোজেন (ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ)। সব ধরনের ফল পাকার নির্দিষ্ট একটি সময় থাকে। ওই সময়ের আগে বেশি লাভে বিক্রির আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা রাসায়নিক ব্যবহার করে ফল পাকান।

ইথানল হলো ফল পাকানোর প্রধান রাসায়নিক। যদিও কৃষকরা ফল পাকার আগেই তা গাছ থেকে সংগ্রহ করেন, নিরাপদ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য।

ফল বিক্রেতারা কাঁচা অবস্থাতেই ফল কেনেন ও পরে তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করেন। তবে এ সময়ের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ীরা আবার রাসায়নিক ব্যবহারের মাধ্যমে ফল পাকান। ঠিক একইভাবে সময়ের আগে আমও পাকানো হয়।

অনেক সময় আসল পাকা আমের চেয়ে ফরমালিনে পাকানো আম দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয়। আর বেশিরভাগ মানুষই আকর্ষণীয় আমগুলোই কেনেন।

গাছপাকা আমের সঙ্গেই মিশে থাকে রাসায়নিকে পাকানো আম। কী করে চিনবেন, তার জন্য জেনে নিন কৌশল-

আমের গায়ে সবুজ ছোপ
কৃত্রিমভাবে পাকা আমের গায়ে সবুজ ছোপ থাকে। এই প্যাচগুলো হলুদ থেকে স্পষ্টভাবে আলাদা করা যায়। অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের গায়ে হলুদ ও সবুজ রঙের সমান মিশেল থাকে। প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের চেয়ে আবার কৃত্রিমভাবে পাকা আম বেশি উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয়।

মুখে হালকা জ্বালা অনুভব করা
কৃত্রিমভাবে পাকা আম খাওয়ার সময় মুখে হালকা জ্বালা অনুভব হয়। এমন আম খাওয়ার পরে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া এমনকি গলায় জ্বালাপোড়ার মতো গুরুতর প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

হালকা বা গাঢ় হলুদ রং
আপনি যখন প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম কাটবেন তখন দেখবেন আমের পাল্পের রং উজ্জ্বল লাল-হলুদ। তবে কৃত্রিমভাবে পাকা আমের ক্ষেত্রে এটি হালকা ও গাঢ় হলুদ।
এমন রং বলে দেয় যে সেটি পুরোপুরিভাবে পাকেনি। এসন আম বাইরে থেকে পুরোপুরি পাকা মনে হবে কিন্তু ভেতরে কাঁচাভাব থাকে।

রস ও মিষ্টিভাব কম
প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম অনেক রসালো ও মিষ্টি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে কৃত্রিমভাবে পাকা আমের ক্ষেত্রে রস ও মিষ্টিভাব দুটোই কম থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমের মৌসুমে যখন প্রচুর পরিমাণে পাকা আম পাওয়া যায় তখন প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম সহজেই পাওয়া যায়। তাই যে মৌসুমের ফল তখনই খাওয়া উচিত।

কৃত্রিমভাবে পাকা আম খেলে কী হয়?
এ বিষয়ে শরণ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ডা. নন্দিতা শাহের মতে, রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে পাকানো আম খেলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েড, পিসিওএস, ডায়াবেটিস ইত্যাদির মতো হরমোনজনিত রোগের সংখ্যা বাড়ায় সেসব রাসায়নিক। এমনকি পারকিনসন ও ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ায়।

সঠিকভাবে ধুয়ে বা বাইরের চামড়া ফেলে দিলে কী রাসায়নিক পদার্থ থেকে মুক্তি মেলে? এ বিষয়ে ডা. শাহ জানান, যে কোনো ফল কেনার পর তা ঘণ্টাখানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।

তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিন। আমের ক্ষেত্রে অবশ্যই খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে। তবে আম খাওয়ার সময় মুখে জ্বলুনি অনুভব করলে তা খাবেন না। আর অবশ্যই সঠিক মৌসুমেই আম খান।