তীব্র গরমে স্বস্তি এনে দেয় এক পশলা বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টির সময়ে সবচেয়ে ভীতিকর বিষয় হচ্ছে বজ্রপাত। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে প্রায় দেড়শোর মতো মানুষ মারা যান।

এর বেশিরভাগ ঘটে হাওর অঞ্চলে। বজ্রপাতে প্রচুর গবাদি পশু মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বজ্রপাত এতটাই আকস্মিক ঘটনা যে এক্ষেত্রে করণীয় কিছু থাকে না। তবে বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হতে হবে।

বজ্রপাতের সময় নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে। জেনে নিন করণীয়-

১. বৃষ্টির সময় অনেকেই বাড়ির বাইরে বা মাঠে থাকেন। এ ক্ষেত্রে বাড়ি বা কাছাকাছি কোনও ঘরে আশ্রয় নেওয়া নিরাপদ।

২. খোলা জায়গায় থাকলে,বজ্রপাতের সময় যতটা সম্ভব নিজেকে সঙ্কুচিত করে বা কুঁজো হয়ে মাটিতে বসে পড়ার চেষ্টা করুন। শুয়ে যতটা সম্ভব নিচু হয়ে মাটির কাছাকাছি থাকলেও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। মনে রাখবেন, বজ্রপাতে সময় কখনওই খোলা জায়গায় বা মাঠে থাকা ঠিক নয়।

৩. বজ্রপাতের সময় গাছের তলায় আশ্রয় নেয়া যাবে না। গাছ থেকে চার মিটার দূরে থাকতে হবে।

৪. কোথাও বজ্রপাত হলে বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সব স্থানে আশ্রয় নেবেন না।

৫. গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হলে গাড়িটি নিয়ে কোনও কংক্রিটের ছাউনির নীচে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করুন। গাড়ির ভিতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। বজ্রপাত চলাকালীন গাড়ির কাচেও হাত দেবেন না।

৬. বজ্রপাতের সময় আপনি যদি কোনও পুকুরে সাঁতার কাটেন বা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন, তা হলে সেখান থেকে দ্রুত সরে পড়ুন। পানি খুব ভাল বিদ্যুৎ পরিবাহী। এ কারণে যতটা সম্ভব সতর্ক থাকুন।

৭. বজ্রপাতের ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।

৮. প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।

৯. কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান।

১০. ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির প্লাগগুলো লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।

১১. বজ্রপাতে আহতদের বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা দিতে হবে।

১২. যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।

১৩. বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না এবং ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।

১৪. ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। বৈদ্যুতিক তারের নিচ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে।

১৫. ঘন-কালো মেঘ দেখা গেলে অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে বের হতে পারেন।

১৬. উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, ধাতব খুঁটি ও মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।

১৭. বজ্রপাতের সময় জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন।

১৯. বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন এবং নিজেরাও বিরত থাকুন।

২০. বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।

নিউজটি শেয়ার করুন