ঢাকা ১২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

ট্রেনে উঠেছিলেন ১১ বন্ধু, লাশ হয়ে ফিরলেন তিনজন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / 130
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঈদের কেনাকাটার জন্য ১১ বন্ধু একসঙ্গে কুমিল্লার হাসানপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রেনে উঠেন। উঠার আগে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেন। কিন্তু কেনাকাটা সেরে একসঙ্গে ১১ জন বাড়ি ফিরতে পারলেন না। তিনজনের মরদেহ নিয়ে গ্রামে যেতে হলো ৯ বন্ধুকে। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে ফেনীর ফাজিলপুরে বালুভর্তি ট্রাকের সঙ্গে ট্রেনটির সংঘর্ষে নিহত হন তারা। এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে এই তিন যুবক হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের সাততলা গ্রামের রিফাত, সাজ্জাদ, দ্বীন মোহাম্মদ। নিহত অন্য তিনজন হলেন: বরিশালের উজিরপুর এলাকার আবুল হাওলাদের ছেলে ও চালক মো. মিজান (৩২) এবং কুমিল্লার মো. আশিক, আবুল খায়ের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম মেইল আসা মাত্রই ১১ বন্ধু ট্রেনে উঠে কেউ বসে বগিতে, আবার কেউ বসে ট্রেনের ইঞ্জিনে। ট্রেন ছেড়ে যায় বন্দর নগরীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু ফেনীর ফাজিলপুর পৌঁছা মাত্রই মুহুর্তে শেষ হয়ে যায় তাদের সব স্বপ্ন। রেললাইনে লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকায় একটি বালুভর্তি ট্রাক রেললাইনে উঠে যাওয়ায় চট্টগ্রামগামী ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রাকটিকে দুমড়েমুচড়ে প্রায় ১০০ হাত দূরে ঠেলে নিয়ে যায়। মুহূর্তে কেড়ে নেয় ট্রেনে থাকা রিফাত, সাজ্জাদ, দ্বিন মোহাম্মদসহ ছয়জনের প্রাণ। এরপর সঙ্গে থাকা ৯ বন্ধু তিনজনের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রেন চলাচলের সময় গেট না ফেলায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, ফেনী সদর উপজেলার পূর্ব ফাজিলপুর মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ই/৩২(১) নং রেলগেটে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গেটম্যান দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন না। এ সময় বালুবাহী ট্রাক রেললাইন পার হতে লাইনে উঠে পড়ে। তখন চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেন রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রাকে ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে রেললাইনের ওপর পড়ে থাকা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মরদেহ সরিয়ে নেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

এরইমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. হাসান চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনার কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে জেনেছি গেটম্যান ছিল না।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম জানান, বালুবাহী ট্রাক রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রাকের পিছনের অংশে ট্রেনের ধাক্কা লাগে। এতে এ পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার পর থেকে গেটম্যান মো. সাইফুল পলাতক রয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

ট্রেনে উঠেছিলেন ১১ বন্ধু, লাশ হয়ে ফিরলেন তিনজন

আপডেট সময় : ১১:২৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

 

ঈদের কেনাকাটার জন্য ১১ বন্ধু একসঙ্গে কুমিল্লার হাসানপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রেনে উঠেন। উঠার আগে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেন। কিন্তু কেনাকাটা সেরে একসঙ্গে ১১ জন বাড়ি ফিরতে পারলেন না। তিনজনের মরদেহ নিয়ে গ্রামে যেতে হলো ৯ বন্ধুকে। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকালে ফেনীর ফাজিলপুরে বালুভর্তি ট্রাকের সঙ্গে ট্রেনটির সংঘর্ষে নিহত হন তারা। এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে এই তিন যুবক হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের সাততলা গ্রামের রিফাত, সাজ্জাদ, দ্বীন মোহাম্মদ। নিহত অন্য তিনজন হলেন: বরিশালের উজিরপুর এলাকার আবুল হাওলাদের ছেলে ও চালক মো. মিজান (৩২) এবং কুমিল্লার মো. আশিক, আবুল খায়ের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম মেইল আসা মাত্রই ১১ বন্ধু ট্রেনে উঠে কেউ বসে বগিতে, আবার কেউ বসে ট্রেনের ইঞ্জিনে। ট্রেন ছেড়ে যায় বন্দর নগরীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু ফেনীর ফাজিলপুর পৌঁছা মাত্রই মুহুর্তে শেষ হয়ে যায় তাদের সব স্বপ্ন। রেললাইনে লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকায় একটি বালুভর্তি ট্রাক রেললাইনে উঠে যাওয়ায় চট্টগ্রামগামী ‘চট্টগ্রাম মেইল’ ট্রাকটিকে দুমড়েমুচড়ে প্রায় ১০০ হাত দূরে ঠেলে নিয়ে যায়। মুহূর্তে কেড়ে নেয় ট্রেনে থাকা রিফাত, সাজ্জাদ, দ্বিন মোহাম্মদসহ ছয়জনের প্রাণ। এরপর সঙ্গে থাকা ৯ বন্ধু তিনজনের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্রেন চলাচলের সময় গেট না ফেলায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, ফেনী সদর উপজেলার পূর্ব ফাজিলপুর মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ই/৩২(১) নং রেলগেটে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গেটম্যান দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন না। এ সময় বালুবাহী ট্রাক রেললাইন পার হতে লাইনে উঠে পড়ে। তখন চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেন রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ট্রাকে ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে রেললাইনের ওপর পড়ে থাকা দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মরদেহ সরিয়ে নেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর ছাগলনাইয়া থানা পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

এরইমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. হাসান চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনার কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে জেনেছি গেটম্যান ছিল না।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম জানান, বালুবাহী ট্রাক রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রাকের পিছনের অংশে ট্রেনের ধাক্কা লাগে। এতে এ পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার পর থেকে গেটম্যান মো. সাইফুল পলাতক রয়েছে।