বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত
- আপডেট সময় : ১২:৪৮:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারপাশে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে এক নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ শুক্রবার (২৪ মে) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক।
তিনি বলেন, ‘সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ সকালে নিম্নচাপ হয়ে গেছে। আজ সন্ধ্যার দিকে নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরবর্তীতে সময় গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে এটি আরো শক্তিমত্তা অর্জন করতে পারে।’
এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) আজ সকালে জানিয়েছে, ‘নিম্নচাপটি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং আগামীকাল সকাল ৬টার মধ্যে আরো ঘনীভূত হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
পরে এটি কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং আগামীকাল রাত ১২টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।’
নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘রিমাল’। আরবি রিমাল শব্দের অর্থ বালি।এটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া নাম।
আইএমডি বলছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ এবং বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার ওপর সরাসরি আছড়ে পড়তে পারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রিমাল। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া বেগে ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টায় জারিকৃত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়।
এদিকে বৃষ্টি একেবারেই কমে যাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে পুরো দেশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজও তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজও সারা দেশে বৃষ্টি কম থাকতে পারে। আজ খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তবে আগামীকাল শনিবার থেকে সারাদেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। এদিন ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
পরদিন রবিবার আরো বাড়তে পারে ঝড়-বৃষ্টি। এদিন দেশের অধিকাংশ অঞ্চলেই বৃষ্টি ঝরতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে পাঁচ ডিগ্রি কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে এক থেকে তিন ডিগ্রি।