ঢাকা ০১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

ঘূর্ণিঝড় রেমাল : সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৫০:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • / 54
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিন্ত্রী বলেন, ৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে তবে ক্লাস বন্ধ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকালকে আমরা বলেছিলাম আজকে ভোর থেকে এটা শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতি কম ছিল বলে আজ ভোরে আসেনি। গতকালকে গতিবেগ ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার। ভোরে এটার গতি কমে দশের নিচে চলে আসে, পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে নিয়ে আসে। যার জন্য এটা সময় মতো এখনো পৌঁছেনি। তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা মহাবিপদ সংকেতে আমাদের পরিণত হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যা লাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ভাগ অতিক্রম শুরু হবে। মধ্যরাতে মূল যে ঝড় সেটা বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।

তিনি বলেন, ঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে। যদি জোয়ার থাকে এটা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজকে সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এখন থেকে ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত যানবাহন লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। এমনকি বঙ্গবন্ধু যে টানেল রয়েছে সেটি আজকে সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে খাবার এবং বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে গেছে। মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। পেছনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়কে আরো শক্তভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করি নির্দেশনাগুলো যেভাবে দিচ্ছি সবাই যদি সে অনুসারে পালন করে, এই দুর্যোগ পূর্বের মতো সক্ষমভাবে মোকাবিলা করতে পারব।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাপবিদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১০ এ বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (২৬ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা/মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

ঘূর্ণিঝড় রেমাল : সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

আপডেট সময় : ০২:৫০:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

 

দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিন্ত্রী বলেন, ৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে তবে ক্লাস বন্ধ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকালকে আমরা বলেছিলাম আজকে ভোর থেকে এটা শুরু হতে পারে। ঝড়ের গতি কম ছিল বলে আজ ভোরে আসেনি। গতকালকে গতিবেগ ছিল ১৬ থেকে ১৭ কিলোমিটার। ভোরে এটার গতি কমে দশের নিচে চলে আসে, পরবর্তীতে ৬ কিলোমিটারে নিয়ে আসে। যার জন্য এটা সময় মতো এখনো পৌঁছেনি। তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা মহাবিপদ সংকেতে আমাদের পরিণত হয়েছে এবং আজ সন্ধ্যা লাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ভাগ অতিক্রম শুরু হবে। মধ্যরাতে মূল যে ঝড় সেটা বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।

তিনি বলেন, ঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্লাবিত হতে পারে। যদি জোয়ার থাকে এটা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রেমালের প্রভাবে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা সবাইকে নিয়ে আজকে সভা করেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এখন থেকে ঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত যানবাহন লঞ্চ-স্টিমার চলাচল করছে সেগুলো বন্ধ থাকবে। এমনকি বঙ্গবন্ধু যে টানেল রয়েছে সেটি আজকে সন্ধ্যা থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে খাবার এবং বিভিন্ন উপকরণ পৌঁছে গেছে। মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের মেডিকেল টিমগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। পেছনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ঘূর্ণিঝড়কে আরো শক্তভাবে মোকাবিলা করার জন্য আমরা সমস্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করি নির্দেশনাগুলো যেভাবে দিচ্ছি সবাই যদি সে অনুসারে পালন করে, এই দুর্যোগ পূর্বের মতো সক্ষমভাবে মোকাবিলা করতে পারব।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাপবিদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১০ এ বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় (১৯.৫০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (২৬ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (রোববার) সন্ধ্যা/মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে।