ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১ ব্যাংকে আটকা ৫৭ কোটি টাকা

টিকিট ইস্যুতে ৩ হাজার বাংলাদেশির হজযাত্রা অনিশ্চিত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গত ৯ মে থেকে শুরু হয়েছে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট। বুধবার (২৯ মে) ভোর পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৯৮৫ জন হজ পালনে সৌদিতে পৌঁছেছেন। আগামী ১২ জুন শেষ হবে ফ্লাইট। হজের শেষ সময় এসে প্রায় ৩ হাজার হজপ্রত্যাশীর হজযাত্রায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ১১টি ব্যাংকের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হয়েছে। সেই টাকা থেকে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বিমানের টিকিট কাটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু ১১টি ব্যাংক ২ হাজার ৯৩৮ ব্যক্তির বিমানের টিকিট কাটার টাকা আটকে রেখেছে। এসব ব্যক্তির জমা করা টাকা এয়ারলাইন্সের বাবদ পে অর্ডার করার জন্য কয়েক দফা চিঠি দিলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো সেই অর্থ ছাড় করছে না। ফলে সব প্রস্তুতি থাকার পরও এসব হাজপ্রত্যাশীদের বিপরীতে বিমানের টিকিট ইস্যু করতে পারছে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভারে যুগ্ম সচিব মনজুরুল হক এক চিঠি দিয়েছে ব্যাংকগুলোকে। বৃহস্পতিবারের (৩০ মে) মধ্যে এ অর্থ ছাড় করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

পে অর্ডার ইস্যু করেনি সেই ১১টি ব্যাংক হলো— আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, এক্মিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি হাজযাত্রীর পে অর্ডার ইস্যু করেনি প্রিমিয়াম ব্যাংক। এ ব্যাংক মোট ৫৮৬ জন ব্যক্তির টাকা আটকে রেখেছে। এরপর শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আটকে রেখেছেন ৫১৪ জনের টাকা।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মোট ২৯৩৮জন হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের জন্য মোট ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার মতো আটকে রয়েছে। এই টাকা ছাড় করার জন্য কয়েক দফা চিঠি দিলেও টাকা ছাড় করেনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। এতে হাজযাত্রীদের ভিসাসহ সব ব্যবস্থা থাকলেও এখন তাদের টিকিট কাটা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আগামীকালের মধ্যে এ টাকা ছাড় করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। অন্যথায় এসব হাজযাত্রীর চলতি বছর হজে যেতে কোন সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দায় নিতে হবে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে চিঠিতে বলা হয়েছে, যে সব হজযাত্রীর টিকিট কেনার জন্য পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়নি সে সক হজযাত্রীর হজ এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসগুলোকে গত ২৬ মে’র মধ্যে পে-অর্ডার সম্পন্ন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজকে (বুধবার) পর্যন্ত অনেক হজযাত্রীর বিমান টিকিট ক্রয়ের পে-অর্ডার ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমনে অনিশ্চয়তা আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামীকালকের (৩০ মে) মধ্যে এয়ারলাইন্স বরাবরে পে-অর্ডার ইস্যু করার জন্য পুনরায় বলা হলো। এর ব্যত্যয় হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও হজ এজেন্সিকে বহন করতে হবে বলে জানানো হয় মন্ত্রণালয় থেকে।

জানা গেছে, প্রাথমিক নিবন্ধন বাবদ যাত্রী প্রতি ২ লাখ ৫ হাজার টাকা করে টাকা জমা দিতে হয়। সেই টাকা থেকে জনপ্রতি ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা প্লেনের টিকিট বাবদ রাখা হয়। মোট ২,৯৩৮ জন হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের জন্য ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার ৪০০ টাকা ব্যাংকগুলো আটকে রেখেছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার হজযাত্রীর হজে গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

১১ ব্যাংকে আটকা ৫৭ কোটি টাকা

টিকিট ইস্যুতে ৩ হাজার বাংলাদেশির হজযাত্রা অনিশ্চিত

আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

গত ৯ মে থেকে শুরু হয়েছে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট। বুধবার (২৯ মে) ভোর পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৯৮৫ জন হজ পালনে সৌদিতে পৌঁছেছেন। আগামী ১২ জুন শেষ হবে ফ্লাইট। হজের শেষ সময় এসে প্রায় ৩ হাজার হজপ্রত্যাশীর হজযাত্রায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ১১টি ব্যাংকের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হয়েছে। সেই টাকা থেকে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বিমানের টিকিট কাটার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু ১১টি ব্যাংক ২ হাজার ৯৩৮ ব্যক্তির বিমানের টিকিট কাটার টাকা আটকে রেখেছে। এসব ব্যক্তির জমা করা টাকা এয়ারলাইন্সের বাবদ পে অর্ডার করার জন্য কয়েক দফা চিঠি দিলেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো সেই অর্থ ছাড় করছে না। ফলে সব প্রস্তুতি থাকার পরও এসব হাজপ্রত্যাশীদের বিপরীতে বিমানের টিকিট ইস্যু করতে পারছে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলো।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভারে যুগ্ম সচিব মনজুরুল হক এক চিঠি দিয়েছে ব্যাংকগুলোকে। বৃহস্পতিবারের (৩০ মে) মধ্যে এ অর্থ ছাড় করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

পে অর্ডার ইস্যু করেনি সেই ১১টি ব্যাংক হলো— আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, এক্মিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি হাজযাত্রীর পে অর্ডার ইস্যু করেনি প্রিমিয়াম ব্যাংক। এ ব্যাংক মোট ৫৮৬ জন ব্যক্তির টাকা আটকে রেখেছে। এরপর শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আটকে রেখেছেন ৫১৪ জনের টাকা।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মোট ২৯৩৮জন হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের জন্য মোট ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার মতো আটকে রয়েছে। এই টাকা ছাড় করার জন্য কয়েক দফা চিঠি দিলেও টাকা ছাড় করেনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। এতে হাজযাত্রীদের ভিসাসহ সব ব্যবস্থা থাকলেও এখন তাদের টিকিট কাটা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আগামীকালের মধ্যে এ টাকা ছাড় করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। অন্যথায় এসব হাজযাত্রীর চলতি বছর হজে যেতে কোন সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দায় নিতে হবে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে চিঠিতে বলা হয়েছে, যে সব হজযাত্রীর টিকিট কেনার জন্য পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়নি সে সক হজযাত্রীর হজ এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসগুলোকে গত ২৬ মে’র মধ্যে পে-অর্ডার সম্পন্ন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজকে (বুধবার) পর্যন্ত অনেক হজযাত্রীর বিমান টিকিট ক্রয়ের পে-অর্ডার ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমনে অনিশ্চয়তা আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামীকালকের (৩০ মে) মধ্যে এয়ারলাইন্স বরাবরে পে-অর্ডার ইস্যু করার জন্য পুনরায় বলা হলো। এর ব্যত্যয় হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও হজ এজেন্সিকে বহন করতে হবে বলে জানানো হয় মন্ত্রণালয় থেকে।

জানা গেছে, প্রাথমিক নিবন্ধন বাবদ যাত্রী প্রতি ২ লাখ ৫ হাজার টাকা করে টাকা জমা দিতে হয়। সেই টাকা থেকে জনপ্রতি ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা প্লেনের টিকিট বাবদ রাখা হয়। মোট ২,৯৩৮ জন হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের জন্য ৫৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার ৪০০ টাকা ব্যাংকগুলো আটকে রেখেছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার হজযাত্রীর হজে গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।