ঢাকা ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তীব্র গরমের ‘বার্তা’ নিয়ে এল এপ্রিল, সঙ্গে থাকবে কালবৈশাখীর দাপট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৯:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪ ৯১ বার পড়া হয়েছে
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সবে শুরু হয়েছে এপ্রিল মাস। প্রথম সপ্তাহ পেরোয়নি এখনও। এরই মধ্যে হাঁসফাঁস গরম। দরদরিয়ে শরীর থেকে ঝরছে ঘাম। সকাল হতে না হতেই রক্তচক্ষু সূর্যের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অসহনীয় হয়ে উঠছে। এই মুহূর্তে আবহাওয়া অধিদপ্তর যে খবর দিচ্ছে, তা মোটেও স্বস্তির নয়। গরম কমার কোনো পূর্বাভাস নেই। বরং এপ্রিলজুড়েই গরমে এমন নাভিশ্বাস উঠবে। হতে পারে বৃষ্টিও।

দিনভর তীব্র দাবদাহ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে রাজধানীবাসী। তবে রাজধানীতে এখনো ‘কাঠফাটা’ গরম না পড়লেও দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের দেখা পাচ্ছে মানুষ।

ঈদের সময় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা থাকবে। এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানের আবহাওয়া অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করবে। এপ্রিলজুড়েই সারাদেশে তাপপ্রবাহ থাকবে।

আগামী রোববার দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা কমবে না। আর ঈদের সময় তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন স্থায়ী হবে– বলছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, দিনভর তীব্র গরমে নাকাল জনজীবন। সকাল থেকেই তাপ ছড়াতে শুরু করে সূর্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপ বাড়তেই থাকে। এমনিতেই রোজার মাস, এর ওপর আবার চৈত্রের তাপদাহ। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস জনজীবনে। আর এমন গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।

গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত বছর রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭ এপ্রিল, ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থা আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণেই আবহাওয়ার এই পরিবর্তন। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও বছরের পর বছর বেরিয়ে আসছে। ২০২৩ সাল এখন পর্যন্ত রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও এক-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বিদ্যমান তাপপ্রবাহের কারণে বাতাসে এখন জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এতে করে মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ বৃদ্ধি হতে পারে। এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এ সময় তাপমাত্রা এমনিতেও বেশি থাকে। কিন্তু এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া দরকার। যখন ঝড় হয়, তখন ভারী বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আর বাড়ে না। কিন্তু ৮-৯ এপ্রিলের আগে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে তাপপ্রবাহ হলে কোনো কোনো এলাকার বায়ুর চাপ কমে যায়। বায়ুর চাপ কমলে সাগর থেকে আসা জলীয়বাষ্প বাতাসের কোথাও জড়ো হতে শুরু করে এবং তখন সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে সেই মেঘ বৃষ্টিপাত ঘটায়।

বাংলাদেশে সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসকে বছরের উষ্ণতম সময় ধরা হয়। এর মধ্যে এপ্রিল মাসেই সাধারণত তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সাল ছিল উত্তপ্ত বছর। কিন্তু এগুলোর মাঝে ২০২৩ সালের কথা আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তীব্র গরমের ‘বার্তা’ নিয়ে এল এপ্রিল, সঙ্গে থাকবে কালবৈশাখীর দাপট

আপডেট সময় : ১০:৩৯:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

সবে শুরু হয়েছে এপ্রিল মাস। প্রথম সপ্তাহ পেরোয়নি এখনও। এরই মধ্যে হাঁসফাঁস গরম। দরদরিয়ে শরীর থেকে ঝরছে ঘাম। সকাল হতে না হতেই রক্তচক্ষু সূর্যের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অসহনীয় হয়ে উঠছে। এই মুহূর্তে আবহাওয়া অধিদপ্তর যে খবর দিচ্ছে, তা মোটেও স্বস্তির নয়। গরম কমার কোনো পূর্বাভাস নেই। বরং এপ্রিলজুড়েই গরমে এমন নাভিশ্বাস উঠবে। হতে পারে বৃষ্টিও।

দিনভর তীব্র দাবদাহ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে রাজধানীবাসী। তবে রাজধানীতে এখনো ‘কাঠফাটা’ গরম না পড়লেও দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের দেখা পাচ্ছে মানুষ।

ঈদের সময় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা থাকবে। এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানের আবহাওয়া অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করবে। এপ্রিলজুড়েই সারাদেশে তাপপ্রবাহ থাকবে।

আগামী রোববার দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। হালকা বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা কমবে না। আর ঈদের সময় তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন স্থায়ী হবে– বলছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, দিনভর তীব্র গরমে নাকাল জনজীবন। সকাল থেকেই তাপ ছড়াতে শুরু করে সূর্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপ বাড়তেই থাকে। এমনিতেই রোজার মাস, এর ওপর আবার চৈত্রের তাপদাহ। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস জনজীবনে। আর এমন গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।

গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত বছর রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭ এপ্রিল, ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ভৌগোলিক অবস্থা আর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণেই আবহাওয়ার এই পরিবর্তন। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও বছরের পর বছর বেরিয়ে আসছে। ২০২৩ সাল এখন পর্যন্ত রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও এক-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বিদ্যমান তাপপ্রবাহের কারণে বাতাসে এখন জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এতে করে মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ বৃদ্ধি হতে পারে। এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এ সময় তাপমাত্রা এমনিতেও বেশি থাকে। কিন্তু এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া দরকার। যখন ঝড় হয়, তখন ভারী বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আর বাড়ে না। কিন্তু ৮-৯ এপ্রিলের আগে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে তাপপ্রবাহ হলে কোনো কোনো এলাকার বায়ুর চাপ কমে যায়। বায়ুর চাপ কমলে সাগর থেকে আসা জলীয়বাষ্প বাতাসের কোথাও জড়ো হতে শুরু করে এবং তখন সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে সেই মেঘ বৃষ্টিপাত ঘটায়।

বাংলাদেশে সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসকে বছরের উষ্ণতম সময় ধরা হয়। এর মধ্যে এপ্রিল মাসেই সাধারণত তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সাল ছিল উত্তপ্ত বছর। কিন্তু এগুলোর মাঝে ২০২৩ সালের কথা আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য।