যেসব কারণে বাড়ে মাইগ্রেনের ব্যথা, যা জানা উচিত
- আপডেট সময় : ১২:০২:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
- / 76
মাথাব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। অন্য সব রোগের মতো মাথাব্যথাকে ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যত্যয় ঘটায়। মাইগ্রেন সে রকমেরই মাথাব্যথা। টেনশন টাইপ মাথাব্যথার মতো মাইগ্রেনের মাথাব্যথা প্রায় প্রতিদিনই হয়।
তবে মাইগ্রেন অ্যাটাক করে সাধারণত হঠাৎ করে; মাঝেমধ্যে যাকে পিরিয়ডিক অ্যাটাক বলে। দেখা যায়, মাসে একবার, সপ্তাহে একবার বা দু-তিন মাস পরপর এ তীব্র মাথাব্যথা হয়। ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে এটি তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। অতিরিক্ত টেনশন, দুশ্চিন্তা-অস্থিরতা হতে পারে মাইগ্রেনের কারণ।
এটি মাথার একদিকে বা দুদিকেও হতে দেখা গেছে। যাদের মাইগ্রেন হওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য ও কিছু খাবারের (চকলেট, আঙুরের রস, পনির) প্রভাবে পুনরায় নতুন করে ভয়ংকর মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। মাইগ্রেন প্রতি পাঁচ জন নারীর মধ্যে একজনের এবং প্রতি ১৫ জন পুরুষের মধ্যে একজনের থাকে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, পরিশ্রম, রোদে ঘোরাঘুরির কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম, আর্দ্রতার তারতম্যে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় পেট খালি থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা বা সমস্যা শুরু হয়।
মাইগ্রেনের যন্ত্রণা অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তীব্র মাথা যন্ত্রণার পাশাপাশি তাদের বমি বমি ভাব, শরীরে এবং মুখে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এই ব্যথা টানা বেশ কয়েকদিন থাকে। তাই যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তাদের এই ব্যথার জন্য দায়ী কিছু কাজ বা অভ্যাস এড়িয়ে চলাই ভাল। এতে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
প্রায় প্রতিটি পরিবারেই একজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগের মূল উপসর্গ হলো প্রচণ্ড মাথাব্যথা। সেই ব্যথার যন্ত্রণা সহ্য করা কখনো কখনো হয়ে যায় মুশকিল। খেতে হয় ওষুধ। তবে মাইগ্রেনের ব্যথায় ওষুধও অনেক সময় কাজ করে না। এ ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াও ব্যথা কমানোর কিছু উপায় আছে।
আবহাওয়া: অতিরিক্ত রোদে ঘোরাঘুরির কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত আর্দ্রতার তারতম্যে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে থাকে।
পেট খালি রাখা: পেট খালি থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা বা সমস্যা শুরু হতে পারে। এর কারণ হলো- খালি পেটে থাকলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় যা মাইগ্রেনের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
নসিক চাপ: যারা অনেক বেশি চাপ নিয়ে একটানা কাজ করে চলেন এবং নিজের ঘুম ও খাওয়া-দাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় মেনে চলতে পারেন না, তাদের বেশি মাইগ্রেনে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তাই মানসিক চাপ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খুব মানসিক চাপে থাকলে এক কাপ লেবু চা খেয়ে নিন। এতে মস্তিষ্ক কিছুটা রিলাক্স হবে।
অতিরিক্ত আওয়াজ: অতিরিক্ত আওয়াজ, খুব জোরে গান শোনা ইত্যাদির কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। প্রচণ্ড জোরে আওয়াজের কারণে প্রায় দু’দিন টানা মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অতিরিক্ত ঘুমানো: মাত্র এক দিনের ঘুমের অনিয়মের কারণে শরীরের উপরে খারাপ প্রভাব পড়তে পাড়ে। যেমন- যারা নিয়মিত মোটামুটি ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা করে ঘুমান, তারা যদি হুট করে একদিন একটু বেশি ঘুমিয়ে ফেলেন, সেক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
এ সমস্যা সমাধানে কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করতে পারেন। ওষুধ খাওয়া ছাড়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর জন্য যেসব উপায় অবলম্বন করতে পারেন–
বাঁধাকপির ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা ৩ ও ফাইবার, বাঁধাকপির স্যুপ ও স্মুথি বা সালাদ। এসব খাবার মাইগ্রেনের ব্যথা কমায়। এ ছাড়া রয়েছে গাজর ও মিষ্টি আলু। গাজর ও মিষ্টি আলুতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। আরও রয়েছে ভিটামিন সি, বি২, বি৬, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস, যা ব্যথা দূর করে।
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে চেরি ফলের জুসও বেশ উপকারী। চেরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনলস নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। চেরি স্ট্রেস দূর করে, মাথাব্যথা কমায়।
মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আরেকটি বিশেষ খাবার হচ্ছে মাশরুম। মাশরুমে ম্যাগনেশিয়াম ও রিবোফ্লোবিন থাকায় মাইগ্রেন কমে।
চকলেট, অ্যালকোহল, ডিম, দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য, পেঁয়াজ, টমেটো, ময়দার রুটি মাইগ্রেনের অ্যাটাকের সময় ভুলেও খাবেন না। ব্যথা হলে প্রচুর পরিমাণে পানি খান।
নিউজটি শেয়ার করুন