ঢাকা ০৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

কুড়িগ্রামে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
  • / 83
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কুড়িগ্রামে চিলমারী ও হাতিয়া পয়েন্টে বহ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৫ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খবারের সংকট দেখা দিয়েছে। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশু নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকাল সাড়ে ৯টার তথ্যে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পযেন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার, তালুকশিমুলবাড়ী পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের অনেক বাসিন্দা পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু এলাকায় ও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। নিম্নাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিতে তলিয়ে থাকায় বন্ধ রয়েছে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য প্রাথমিক ও মাধ্যামিক বিদ্যালয়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঘনেশেমপুর এলাকার হবিবর রহমান বলেন, ‘গত ৪ দিন ধরে পানিতে অবস্থান করছি। গরু ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে এসে বাড়িতে থাকার জায়গা উচু করে পরিবার নিয়ে কষ্টে করে আছি। নলকূপ তলিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি।’

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জের বালাডোবার চরের বাসিন্দা শেফালী বলেন, ‘চরটি নিচু হওয়ায় ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। গবাদি পশু, ছেলে-মেয়েসহ মোল্লার হাট এলাকায় উঁচু জায়গায় অবস্থান করছি। খাওয়া দাওয়ার খুব কষ্ট চলছে।’ ‍

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর গতকাল শুক্রবার জানান, তার ইউনিয়নে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তাদের সবধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, আরও দুইদিন পর্যন্ত বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা কবলিতদের জন্য ২৯১ মেট্রিক টন চাল, ২০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও সাড়ে ১৫ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেখানে যেভাবে ক্রাণ পৌঁছানো প্রয়োজন সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

কুড়িগ্রামে পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

আপডেট সময় : ১০:২৮:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

 

কুড়িগ্রামে চিলমারী ও হাতিয়া পয়েন্টে বহ্মপুত্র নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৫ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খবারের সংকট দেখা দিয়েছে। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশু নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকাল সাড়ে ৯টার তথ্যে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্ট ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পযেন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার, তালুকশিমুলবাড়ী পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের অনেক বাসিন্দা পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু এলাকায় ও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। নিম্নাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিতে তলিয়ে থাকায় বন্ধ রয়েছে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য প্রাথমিক ও মাধ্যামিক বিদ্যালয়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঘনেশেমপুর এলাকার হবিবর রহমান বলেন, ‘গত ৪ দিন ধরে পানিতে অবস্থান করছি। গরু ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে এসে বাড়িতে থাকার জায়গা উচু করে পরিবার নিয়ে কষ্টে করে আছি। নলকূপ তলিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি।’

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জের বালাডোবার চরের বাসিন্দা শেফালী বলেন, ‘চরটি নিচু হওয়ায় ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। গবাদি পশু, ছেলে-মেয়েসহ মোল্লার হাট এলাকায় উঁচু জায়গায় অবস্থান করছি। খাওয়া দাওয়ার খুব কষ্ট চলছে।’ ‍

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর গতকাল শুক্রবার জানান, তার ইউনিয়নে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তাদের সবধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, আরও দুইদিন পর্যন্ত বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ‘বন্যা কবলিতদের জন্য ২৯১ মেট্রিক টন চাল, ২০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও সাড়ে ১৫ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেখানে যেভাবে ক্রাণ পৌঁছানো প্রয়োজন সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’