ঢাকা ০১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

‘শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলে নতুন আন্দোলনের পাঁয়তারা করছে বিএনপি’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৪০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
  • / 67
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চার সপ্তাহে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণ করে আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে যখন বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান, তার প্রতি কোনো প্রকার সম্মান না করে আন্দোলনকারীরা বাংলা ব্লকেড নামে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে আন্দোলনের ব্যর্থতা পেছনে রেখে নতুন আন্দোলন শুরুর পাঁয়তারা করছে তারা। কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন চেষ্টা করছে বিএনপি। ফখরুল বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার দরকার নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের সম্মান নেই। কোটা বিরোধিতা করে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তার প্রমাণ আবারও দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের কার্যকারিতার ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে জারি করা সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি নিয়োগে এই মুহূর্তে কোনো প্রকার কোটা সংরক্ষিত নেই এবং আপিল বিভাগ শুনানি সাপেক্ষে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করবে। আমরা গতকাল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য সহকারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। একই সঙ্গে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এ ধরনের সকল কর্মসূচি পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বিষয়টি নিয়ে যখন উচ্চ আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এ বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে তার প্রতি কোনো প্রকার শ্রদ্ধাশীল না হয়ে আন্দোলনকারীরা পুনরায় তথাকথিত ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে কর্মসূচি দিয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক মহল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের প্ররোচনা দিচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং আমাদের সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক এবং এই পবিত্র সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি, মূল মামলা দায়েরকারী পক্ষসহ সকলের বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ঠিক সেই মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আন্দোলনকারীরা অনেকটা জনজীবনকে জিম্মি করে, আইনি পন্থায় না হেঁটে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে। যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত এবং বেআইনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো কোনো অশুভ মহল ছাত্র-ছাত্রীদের আবেগকে পুঁজি করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে এই ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র বা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। আমাদের সবাইকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বল প্রয়োগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। জন-দুর্ভোগ সৃষ্টির রাজনীতি পরিহার করতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার পরে সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন ও সফলতার হারে পিছিয়ে পড়েছেন নারীরা। গত ৫টি বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল। কোটা যুক্ত বিসিএস-এর তুলনায় কোটামুক্ত বিসিএস-এ নারীরা পিছিয়ে পড়েছে ৩.৪৩ শতাংশ। এমনকি একটি বিসিএস-এ কোটা না থাকায় পুলিশের ক্যাডারে মাত্র ৪ জন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছেন। ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে মাত্র ২ জন নারী। কোটামুক্ত একটি বিসিএস-এ ২৪টি জেলার কোনো প্রার্থী পুলিশ ক্যাডারে চাকরি পায়নি। ৫০টি জেলায় নারীরা সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কোটা পদ্ধতি থাকা অবস্থায় শতকরা ২৬ ভাগের উপরে নারী প্রার্থীরা চাকরি পেয়েছিল। এরপর কোটা তুলে দেওয়ায় এই হার শতকরা ১৯ ভাগে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ নিয়েও যে সমস্ত তথ্য আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে তা অবাস্তব এবং বিভ্রান্তিকর। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কোটাযুক্ত পদ্ধতিতে মেধায় নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল শতকরা ৪৪ ভাগ। কিন্তু বিভিন্ন কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় শতকরা ৬৬.২ ভাগ প্রার্থী মেধাভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছে। বিভিন্ন কোটায় যারা চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে তারাও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একই মানদণ্ডে অর্থাৎ একই প্রিলিমিনারি প্রশ্ন, লিখিত পরীক্ষা দিয়ে সমান যোগ্যতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। কোটা পদ্ধতি বাতিল হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কোনো কোনো পরীক্ষায় ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর একজন প্রার্থীও নিয়োগ লাভের সুযোগ পায়নি। বৈচিত্র্যময় সমতা ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা অর্জনে কোটার গুরুত্ব রয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জন দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সকল প্রকার কর্মসূচি বন্ধ করে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবিলম্বে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পুরোপুরি সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত সকল পক্ষকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আমরা তারুণ্যের শক্তি এবং আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কিন্তু এই শক্তি ও আবেগকে পুঁজি করে কোনো অশুভ মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায় তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যারা কোটা আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে চায় তাদের খায়েশ পূরণ হতে দেব না।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ প্রমুখ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

‘শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলে নতুন আন্দোলনের পাঁয়তারা করছে বিএনপি’

আপডেট সময় : ০৩:৪০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

 

কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চার সপ্তাহে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধারণ করে আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে যখন বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান, তার প্রতি কোনো প্রকার সম্মান না করে আন্দোলনকারীরা বাংলা ব্লকেড নামে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে আন্দোলনের ব্যর্থতা পেছনে রেখে নতুন আন্দোলন শুরুর পাঁয়তারা করছে তারা। কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন চেষ্টা করছে বিএনপি। ফখরুল বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার দরকার নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের সম্মান নেই। কোটা বিরোধিতা করে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী তার প্রমাণ আবারও দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের কার্যকারিতার ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে জারি করা সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি নিয়োগে এই মুহূর্তে কোনো প্রকার কোটা সংরক্ষিত নেই এবং আপিল বিভাগ শুনানি সাপেক্ষে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করবে। আমরা গতকাল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য সহকারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। একই সঙ্গে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এ ধরনের সকল কর্মসূচি পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বিষয়টি নিয়ে যখন উচ্চ আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এ বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে তার প্রতি কোনো প্রকার শ্রদ্ধাশীল না হয়ে আন্দোলনকারীরা পুনরায় তথাকথিত ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে কর্মসূচি দিয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক মহল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের প্ররোচনা দিচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং আমাদের সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক এবং এই পবিত্র সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি, মূল মামলা দায়েরকারী পক্ষসহ সকলের বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ঠিক সেই মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আন্দোলনকারীরা অনেকটা জনজীবনকে জিম্মি করে, আইনি পন্থায় না হেঁটে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে। যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত এবং বেআইনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো কোনো অশুভ মহল ছাত্র-ছাত্রীদের আবেগকে পুঁজি করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে এই ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র বা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। আমাদের সবাইকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বল প্রয়োগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। জন-দুর্ভোগ সৃষ্টির রাজনীতি পরিহার করতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার পরে সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন ও সফলতার হারে পিছিয়ে পড়েছেন নারীরা। গত ৫টি বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল। কোটা যুক্ত বিসিএস-এর তুলনায় কোটামুক্ত বিসিএস-এ নারীরা পিছিয়ে পড়েছে ৩.৪৩ শতাংশ। এমনকি একটি বিসিএস-এ কোটা না থাকায় পুলিশের ক্যাডারে মাত্র ৪ জন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছেন। ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে মাত্র ২ জন নারী। কোটামুক্ত একটি বিসিএস-এ ২৪টি জেলার কোনো প্রার্থী পুলিশ ক্যাডারে চাকরি পায়নি। ৫০টি জেলায় নারীরা সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কোটা পদ্ধতি থাকা অবস্থায় শতকরা ২৬ ভাগের উপরে নারী প্রার্থীরা চাকরি পেয়েছিল। এরপর কোটা তুলে দেওয়ায় এই হার শতকরা ১৯ ভাগে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ নিয়েও যে সমস্ত তথ্য আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে তা অবাস্তব এবং বিভ্রান্তিকর। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কোটাযুক্ত পদ্ধতিতে মেধায় নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল শতকরা ৪৪ ভাগ। কিন্তু বিভিন্ন কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী না থাকায় শতকরা ৬৬.২ ভাগ প্রার্থী মেধাভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছে। বিভিন্ন কোটায় যারা চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে তারাও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একই মানদণ্ডে অর্থাৎ একই প্রিলিমিনারি প্রশ্ন, লিখিত পরীক্ষা দিয়ে সমান যোগ্যতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। কোটা পদ্ধতি বাতিল হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কোনো কোনো পরীক্ষায় ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর একজন প্রার্থীও নিয়োগ লাভের সুযোগ পায়নি। বৈচিত্র্যময় সমতা ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা অর্জনে কোটার গুরুত্ব রয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জন দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সকল প্রকার কর্মসূচি বন্ধ করে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবিলম্বে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পুরোপুরি সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত সকল পক্ষকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আমরা তারুণ্যের শক্তি এবং আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কিন্তু এই শক্তি ও আবেগকে পুঁজি করে কোনো অশুভ মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায় তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যারা কোটা আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে চায় তাদের খায়েশ পূরণ হতে দেব না।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ প্রমুখ।