ঈদের আগে লাগামছাড়া মাংসের বাজার
- আপডেট সময় : ১২:২৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪
- / 152
ঈদুল ফিতরের আগে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে মাংসের বাজার। রোজার শেষ সপ্তাহে আবার বেড়েছে সব ধরনের মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি আড়াই শ টাকায় উঠেছে। সোনালি মুরগির দাম ছাড়িয়েছে কেজি ৩৫০ টাকা। আর বাজারে গরুর মাংস আবারও ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসও কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি দামে।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদ উৎসবের সময় মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়, বেশি বাড়ে মুরগির চাহিদা। এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে মাংসের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। গত তিন দিনে বাজারে প্রতিদিনই কোনো না কোনো মাংসের দাম বেড়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের কারণে বাজারে মাংসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এই সুযোগে খামারিরাই গরু ও মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি মানভেদে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের দাম আরও বেড়ে ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা।
রোববার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা, মালিবাগ বাজার ঘুরে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে মুরগি ও গরুর মাংসের দোকানগুলোতে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি ছিল। একই রকম বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম।
গত সপ্তাহে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। তবে গোটাকয়েক দোকানে এখনো ৭৫০ টাকায়ও গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার টাকা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একজন মুরগি বিক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষে খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে এখন মুরগির সরবরাহও কম। তাই নতুন করে মুরগির দাম বেড়ে গেছে।
মালিবাগ বাজারে ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, রমজান মাসজুড়ে মাছ ও মাংস বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। ঈদের আগে মাংসের দাম আবার বাড়ল। বাজার করতে গেলে তাল পাওয়া যায় না।
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, করপোরেট গ্রুপগুলোর কৃত্রিম সংকটে মুরগির বাচ্চা কিনতে না পেরে উৎপাদন থেকে বাধ্য হয়ে সরে যাচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা। এখন বেশির ভাগ মুরগি করপোরেট গ্রুপগুলোর, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারাই। ফলে বাজারে মুরগির দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা। অথচ প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা কিনতে হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের সেই ফিড কিনতে হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, বেশির ভাগ জায়গায় গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে কেউ কেউ ৮০০ টাকায়ও বিক্রি করছেন।
নিউজটি শেয়ার করুন