ঢাকা ০৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

আওয়ামী সরকারের দোসর সচিবদের সারানোর দাবি মির্জা ফখরুলের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪
  • / 50
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বিগত আওয়ামী সরকারের দোসর সচিবদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যে সমস্ত ব্যক্তিরা হাসিনার পাশে থেকে, তার সঙ্গে থেকে, তার দোসর হয়ে মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপীড়ন, লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদেরকে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশে-পাশে দেখতে চাই না।

পত্রিকায় যখন ছবি দেখি যে, এই সমস্ত লোকেরা আবার সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করছেন তখন আমরা উদ্বিগ্ন হই।

শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব চিন্তিত হই যে, আজকে ১৬/১৭ দিন হয়েছে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত সেক্রেটারিরা ওই সরকারকে এতোদিন ধরে চালিয়েছে, তাদের সমস্ত কুবুদ্ধিগুলো দিয়েছে তারা এখনো এই সরকারের সচিবের দায়িত্ব পালন করছে।

এটা আমরা দেখতে চাইনা। আমরা দেখতে চাই যে, অবিলম্বে এই বুরোক্রেসিতে যারা প্রো-পিপল আছেন, যারা জনগণের সাথে সস্পৃক্ত আছেন, আইন মেনে তাদেরকে এই সরকারের পাশে দেখতে চাই। একথাগুলো আমরা বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি এজন্যে যে, আমরা সেগুলো দেখতে পারছি না।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস-চ্যান্সলরগুলো রিজাইন করেছেন। আমরা দেখতে চাই যে, যাদের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিদের ভাইস-চ্যান্সলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

আমরা দেখতে চাই, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেতন। এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বাত্মক সহেযোগিতা দিয়েছি, দেবো।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অতিদ্রুত সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক।

আমরা মনে করি তারা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এই সরকারের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে, জনগণের আস্থা রয়েছে, সকলেরই আস্থা আছে।

কিন্তু অবশ্যই সেটা (নির্বাচন অনুষ্ঠান) সীমিত সময়ের মধ্যেই করতে হবে, একটা সময়ের মধ্যে করতে হবে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই করতে হবে।

অবশ্যই অতিদ্রুত জনগণের চাহিদা পুরণ করার জন্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে একটা নির্বাচন দ্রুত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায় সেজন্য এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি নির্বাচন কথাটার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে সংস্কারের বিষয়টা এসেছে, সবসময় আসছে সেই সংস্কারের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেটা কিভাবে আসবে? সেটা আসবে একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেটা আসতে হবে।

এর কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং কয়েকজন ব্যক্তি একটা সংস্কার করে দিলেন এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি জনগণের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেই সংস্কার আসতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন যারা ইন্টারিম গভার্মেন্টে কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই।

আমরা দেখতে চাই, প্রধান উপদেষ্টা তিনি অতিদ্রুত জনগণের সামনে তিনি কি করতে চান তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন যে, কিভাবে তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ঘটিয়ে তারা জনগণকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ‍এগুবেন নির্বাচন করার জন্য।

তিনি বলেন, ছাত্র নেতৃবৃন্দ যারা আজকে সহযোগিতা করছেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে এই বিষয়গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়ে এই বিপ্লবকে যেন সুসংহত করা যায়, প্রতিবিপ্লব যেন না ঘটে।

ইতোমধ্যে যে চক্রান্তের কথা-বার্তা উঠে আসছে আমাদের মধ্যে সেগুলোকে যেন প্রতিহত করা যায়, সেইগুলোতে পরাজিত করে বিপ্লবের চেতনাকে যেন আমরা সমুন্নত রেখে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই বিষয়ে তাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।

মরহুম কাজী জাফর আহমেদ দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের প্রতি তার অঙ্গীকারের নানা কথা তুলে ধরে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপির নূর মোহাস্মদ খান, জহির উদ্দিন স্বপন, নজমুল হক নান্নু, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

আওয়ামী সরকারের দোসর সচিবদের সারানোর দাবি মির্জা ফখরুলের

আপডেট সময় : ০৮:২০:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

 

বিগত আওয়ামী সরকারের দোসর সচিবদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যে সমস্ত ব্যক্তিরা হাসিনার পাশে থেকে, তার সঙ্গে থেকে, তার দোসর হয়ে মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপীড়ন, লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদেরকে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশে-পাশে দেখতে চাই না।

পত্রিকায় যখন ছবি দেখি যে, এই সমস্ত লোকেরা আবার সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করছেন তখন আমরা উদ্বিগ্ন হই।

শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব চিন্তিত হই যে, আজকে ১৬/১৭ দিন হয়েছে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত সেক্রেটারিরা ওই সরকারকে এতোদিন ধরে চালিয়েছে, তাদের সমস্ত কুবুদ্ধিগুলো দিয়েছে তারা এখনো এই সরকারের সচিবের দায়িত্ব পালন করছে।

এটা আমরা দেখতে চাইনা। আমরা দেখতে চাই যে, অবিলম্বে এই বুরোক্রেসিতে যারা প্রো-পিপল আছেন, যারা জনগণের সাথে সস্পৃক্ত আছেন, আইন মেনে তাদেরকে এই সরকারের পাশে দেখতে চাই। একথাগুলো আমরা বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি এজন্যে যে, আমরা সেগুলো দেখতে পারছি না।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস-চ্যান্সলরগুলো রিজাইন করেছেন। আমরা দেখতে চাই যে, যাদের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিদের ভাইস-চ্যান্সলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

আমরা দেখতে চাই, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেতন। এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বাত্মক সহেযোগিতা দিয়েছি, দেবো।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অতিদ্রুত সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক।

আমরা মনে করি তারা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এই সরকারের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে, জনগণের আস্থা রয়েছে, সকলেরই আস্থা আছে।

কিন্তু অবশ্যই সেটা (নির্বাচন অনুষ্ঠান) সীমিত সময়ের মধ্যেই করতে হবে, একটা সময়ের মধ্যে করতে হবে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই করতে হবে।

অবশ্যই অতিদ্রুত জনগণের চাহিদা পুরণ করার জন্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে একটা নির্বাচন দ্রুত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায় সেজন্য এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি নির্বাচন কথাটার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে সংস্কারের বিষয়টা এসেছে, সবসময় আসছে সেই সংস্কারের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেটা কিভাবে আসবে? সেটা আসবে একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেটা আসতে হবে।

এর কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং কয়েকজন ব্যক্তি একটা সংস্কার করে দিলেন এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি জনগণের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেই সংস্কার আসতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন যারা ইন্টারিম গভার্মেন্টে কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই।

আমরা দেখতে চাই, প্রধান উপদেষ্টা তিনি অতিদ্রুত জনগণের সামনে তিনি কি করতে চান তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন যে, কিভাবে তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ঘটিয়ে তারা জনগণকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ‍এগুবেন নির্বাচন করার জন্য।

তিনি বলেন, ছাত্র নেতৃবৃন্দ যারা আজকে সহযোগিতা করছেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে এই বিষয়গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়ে এই বিপ্লবকে যেন সুসংহত করা যায়, প্রতিবিপ্লব যেন না ঘটে।

ইতোমধ্যে যে চক্রান্তের কথা-বার্তা উঠে আসছে আমাদের মধ্যে সেগুলোকে যেন প্রতিহত করা যায়, সেইগুলোতে পরাজিত করে বিপ্লবের চেতনাকে যেন আমরা সমুন্নত রেখে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই বিষয়ে তাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।

মরহুম কাজী জাফর আহমেদ দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের প্রতি তার অঙ্গীকারের নানা কথা তুলে ধরে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপির নূর মোহাস্মদ খান, জহির উদ্দিন স্বপন, নজমুল হক নান্নু, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।