ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

হ্যাকারদের নতুন কৌশল ফোন কলে, নিরাপদ থাকবেন যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:২৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / 67
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

মোবাইল ফোন বর্তমান যুগে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান, আর্থিক লেনদেন এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। কিন্তু এই সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বেড়েছে। হ্যাকাররা বিভিন্ন নতুন কৌশল ব্যবহার করে ডিজিটাল ডিভাইস ও মোবাইল ফোন হ্যাক করার চেষ্টা করছে।

নতুন কৌশল ফোন কলে: সম্প্রতি হ্যাকাররা একটি নতুন কৌশল ব্যবহার শুরু করেছে যেখানে তারা একজন ব্যবহারকারীর সঙ্গে ফোন কলে কথোপকথন চালিয়ে যায় এবং একই সঙ্গে অন্য একজন হ্যাকার দূর থেকে ‘এক্সপ্লয়েট কমান্ড’ চালায়। এই কমান্ডগুলো ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে, সংবেদনশীল ডেটা চুরি করতে বা ডিভাইসটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

নতুন কৌশলটি যেভাবে কাজ করে: আইপি এড্রেস চুরি: হ্যাকার প্রথমে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনের আইপি এড্রেস চুরি করে। এটি ফিশিং লিঙ্ক, ম্যালওয়্যার বা অন্যান্য প্রতারণামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে।

ফোন কল: হ্যাকাররা ভুক্তভোগীকে ফোন করে কথোপকথনে জড়িয়ে ফেলে। এই কলের মাধ্যমে হ্যাকার ভুক্তভোগীর মনোযোগে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, প্রলোভন দেখাতে পারে এবং আক্রমণ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় নেওয়ার সুযোগ নিতে পারে।

এক্সপ্লয়েট কমান্ড: ফোন কলে একজন হ্যাকারের কথোপকথন চলমান থাকাকালে অন্য একজন হ্যাকার ভুক্তভোগীর মোবাইল ডিভাইস লক্ষ করে দূর থেকে ‘এক্সপ্লয়েট কমান্ড’ পরিচালনা করে। এই কমান্ডগুলো ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে, ডিভাইসের পোর্টগুলোকে খোলা রাখতে, ফায়ারওয়াল ও এন্টিভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে, সংবেদনশীল তথ্য চুরি করতে বা ডিভাইসটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সফল হ্যাকিং: যদি হ্যাকাররা ডিভাইসের দখল নিতে সফল হয়, তাহলে তারা ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনে দূরবর্তী যেকোনো জায়গা থেকে ঢুকে মোবাইল ফোনের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে ও ফোন থেকে ডেটা চুরি করতে, ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে দিতে পারে।

ঝুঁকি: সাম্প্রতিক এই কৌশলটি খুবই বিপজ্জনক। কারণ এটি ভুক্তভোগীকে অবগত না করেই মোবাইল ফোনের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়।

হ্যাকারদের এই ধরনের আক্রমণ যেভাবে কাজ করে:
ফোন কল দিয়ে এই ধরনের আক্রমণ আরআইএসসি প্রসেসর ব্যবহারকারী ডিভাইসগুলোতে বেশি সম্ভব। কারণ এগুলো একইসঙ্গে একাধিক কাজ পরিচালনা করতে পারে না। হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমুতে কল দিয়ে স্মার্টফোনের প্রসেসরকে ব্যস্ত বানিয়ে দেয়া হয় আইপি কলের মাধ্যমে। একইসঙ্গে অন্য একজন হ্যাকার ডিভাইসের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক্সপ্লয়েট চালিয়ে সিস্টেমের ভিতরে প্রবেশ করে এবং নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে শুধু +৯৯, +৯৭ নাম্বার নয়, যেকোনো দেশি বা বিদেশি নাম্বার থেকে গ্রাহককে আইপি কল দিতে পারে। এক্ষেত্রে আইপি অ্যাড্রেস থাকা বাধ্যতামূলক, নয়তো সম্ভব নয়।

অপরিচিত ফোন কল পেলে যা করবেন:
ফোন রিসিভ করে ক্ষতির শিকার হওয়ার বিষয়টি যে একদম সঠিক নয়, এমনটাও বলা যাচ্ছে না। আবার কল রিসিভ করা যাবে না তাও পুরোপুরি ঠিক নয়। এক্ষেত্রে যদি ফোন রিসিভ করার পর অপর প্রান্ত থেকে কোনো কথা না বলে চুপ চাপ থাকে তাহলে ফোনটি কেটে দিন। ফোন দিয়ে যদি অফার বা বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করে তাহলেও কেটে দিন। ফোন দিয়ে যদি কোন প্রলোভন, অ্যাপস ইন্সটল বা গেম খেলে বিজয়ী হওয়ার আমন্ত্রণ জানালেও লাইনটি কেটে দিন।

সন্দেহজনক কল দীর্ঘায়িত করবেন না। আপনাকে ফোন কলে রেখে কেউ যদি এক্সপ্লয়েট চালিয়ে আপনার ডিভাইসে প্রবেশের চেষ্টা করে তবে সংযোগ দীর্ঘায়িত না করলে প্রক্রিয়াটি ভেস্তে যাবে।

অপরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ফোন কলগুলোতে সতর্ক থাকুন এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করবেন না।

সন্দেহজনক ওয়েবলিংকে ক্লিক করবেন না এবং অপরিচিত উৎস থেকে অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করবেন না। এছাড়া আপনার মোবাইল ফোনের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

হ্যাকারদের নতুন কৌশল ফোন কলে, নিরাপদ থাকবেন যেভাবে

আপডেট সময় : ১১:২৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

 

মোবাইল ফোন বর্তমান যুগে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান, আর্থিক লেনদেন এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। কিন্তু এই সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বেড়েছে। হ্যাকাররা বিভিন্ন নতুন কৌশল ব্যবহার করে ডিজিটাল ডিভাইস ও মোবাইল ফোন হ্যাক করার চেষ্টা করছে।

নতুন কৌশল ফোন কলে: সম্প্রতি হ্যাকাররা একটি নতুন কৌশল ব্যবহার শুরু করেছে যেখানে তারা একজন ব্যবহারকারীর সঙ্গে ফোন কলে কথোপকথন চালিয়ে যায় এবং একই সঙ্গে অন্য একজন হ্যাকার দূর থেকে ‘এক্সপ্লয়েট কমান্ড’ চালায়। এই কমান্ডগুলো ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে, সংবেদনশীল ডেটা চুরি করতে বা ডিভাইসটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

নতুন কৌশলটি যেভাবে কাজ করে: আইপি এড্রেস চুরি: হ্যাকার প্রথমে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনের আইপি এড্রেস চুরি করে। এটি ফিশিং লিঙ্ক, ম্যালওয়্যার বা অন্যান্য প্রতারণামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে।

ফোন কল: হ্যাকাররা ভুক্তভোগীকে ফোন করে কথোপকথনে জড়িয়ে ফেলে। এই কলের মাধ্যমে হ্যাকার ভুক্তভোগীর মনোযোগে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, প্রলোভন দেখাতে পারে এবং আক্রমণ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় নেওয়ার সুযোগ নিতে পারে।

এক্সপ্লয়েট কমান্ড: ফোন কলে একজন হ্যাকারের কথোপকথন চলমান থাকাকালে অন্য একজন হ্যাকার ভুক্তভোগীর মোবাইল ডিভাইস লক্ষ করে দূর থেকে ‘এক্সপ্লয়েট কমান্ড’ পরিচালনা করে। এই কমান্ডগুলো ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে, ডিভাইসের পোর্টগুলোকে খোলা রাখতে, ফায়ারওয়াল ও এন্টিভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে, সংবেদনশীল তথ্য চুরি করতে বা ডিভাইসটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সফল হ্যাকিং: যদি হ্যাকাররা ডিভাইসের দখল নিতে সফল হয়, তাহলে তারা ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনে দূরবর্তী যেকোনো জায়গা থেকে ঢুকে মোবাইল ফোনের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে ও ফোন থেকে ডেটা চুরি করতে, ম্যালওয়্যার ইনস্টল করে দিতে পারে।

ঝুঁকি: সাম্প্রতিক এই কৌশলটি খুবই বিপজ্জনক। কারণ এটি ভুক্তভোগীকে অবগত না করেই মোবাইল ফোনের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়।

হ্যাকারদের এই ধরনের আক্রমণ যেভাবে কাজ করে:
ফোন কল দিয়ে এই ধরনের আক্রমণ আরআইএসসি প্রসেসর ব্যবহারকারী ডিভাইসগুলোতে বেশি সম্ভব। কারণ এগুলো একইসঙ্গে একাধিক কাজ পরিচালনা করতে পারে না। হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমুতে কল দিয়ে স্মার্টফোনের প্রসেসরকে ব্যস্ত বানিয়ে দেয়া হয় আইপি কলের মাধ্যমে। একইসঙ্গে অন্য একজন হ্যাকার ডিভাইসের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক্সপ্লয়েট চালিয়ে সিস্টেমের ভিতরে প্রবেশ করে এবং নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে শুধু +৯৯, +৯৭ নাম্বার নয়, যেকোনো দেশি বা বিদেশি নাম্বার থেকে গ্রাহককে আইপি কল দিতে পারে। এক্ষেত্রে আইপি অ্যাড্রেস থাকা বাধ্যতামূলক, নয়তো সম্ভব নয়।

অপরিচিত ফোন কল পেলে যা করবেন:
ফোন রিসিভ করে ক্ষতির শিকার হওয়ার বিষয়টি যে একদম সঠিক নয়, এমনটাও বলা যাচ্ছে না। আবার কল রিসিভ করা যাবে না তাও পুরোপুরি ঠিক নয়। এক্ষেত্রে যদি ফোন রিসিভ করার পর অপর প্রান্ত থেকে কোনো কথা না বলে চুপ চাপ থাকে তাহলে ফোনটি কেটে দিন। ফোন দিয়ে যদি অফার বা বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করে তাহলেও কেটে দিন। ফোন দিয়ে যদি কোন প্রলোভন, অ্যাপস ইন্সটল বা গেম খেলে বিজয়ী হওয়ার আমন্ত্রণ জানালেও লাইনটি কেটে দিন।

সন্দেহজনক কল দীর্ঘায়িত করবেন না। আপনাকে ফোন কলে রেখে কেউ যদি এক্সপ্লয়েট চালিয়ে আপনার ডিভাইসে প্রবেশের চেষ্টা করে তবে সংযোগ দীর্ঘায়িত না করলে প্রক্রিয়াটি ভেস্তে যাবে।

অপরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ফোন কলগুলোতে সতর্ক থাকুন এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করবেন না।

সন্দেহজনক ওয়েবলিংকে ক্লিক করবেন না এবং অপরিচিত উৎস থেকে অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করবেন না। এছাড়া আপনার মোবাইল ফোনের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।