ঢাকা ০৯:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

ইংল্যান্ডের আক্ষেপ বাড়িয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
  • / 52
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

২০০৮ সালের ইউরোর পর ২০১০ সালের বিশ্বকাপ। ২০১২ সালে ফের ইউরো।স্পেনের সোনালি প্রজন্ম টানা দুই ইউরো ও বিশ্বকাপ জেতার পর মাঝে এক যুগ শিরোপা খরায় ছিল দলটি।তবে তরুণদের নিয়ে গড়া লুইস দে ফুয়েন্তের দল সে প্রতীক্ষার অবসান ঘটাল।

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রোববার রাতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে স্পেন।স্পেনের নিকো উলিয়ামস ও মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলের মাঝে ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটা কোল পালমারের।তিনটিই গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে।

ফলে টানা দ্বিতীয়াবার ফাইনালে হারের বেদনায় নীল হতে হল ইংল্যান্ডকে।আরও বাড়ল প্রথম ইউরো ট্রফি জয়ের প্রতীক্ষা।বাড়ল কিংবদন্তী ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের শূন্য হাতে ক্যারিয়ার শেষের সম্ভাবনাও।অন্যদিকে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে চতুর্থবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলো স্প্যানিশরা।ফ্রান্স ও জার্মানি তিনবার করে শিরোপা জিতেলও চারবার মহাদেশের সেরা হওয়ার কীর্তি নেই ইউরোপের আর কোনো দলেরই।

জার্মানির বার্লিনে এদিন স্পেন কোচ লুইস ডে লা ফুয়েন্তে চতুর্থ ইউরোর মিশনে লাইনআপ সাজিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ ফরম্যাশনে। অন্যদিকে প্রথমবার শিরোপা জিততে ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের আস্থা ৩-৪-২-১ ফরম্যাশনে।

তবে মাঠের দাপটে এদিন একচেটিয়াভাবে এগিয়ে ছিল স্পেন।প্রথমার্ধে প্রায় ৭০ শতাংশ বল এ দখলে রেখেছিল স্পেন। বিপরীতে ৩০ শতাংশ বল দখলে রাখতে পেরেছে ইংল্যান্ড।

টানা ছয় জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফাইনালে নামা ইয়ামাল-উইলিয়ামসরা ক্ষণে ক্ষণে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন ইংলিশ রক্ষণভাগের।তবে প্রথমার্ধে আসেনি সফলতা।দশম মিনিটে লেফট উইংয়ে নিকো উইলিয়ামস গতি দিয়ে সুযোগ তৈরীর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু জোন স্টোন্স দারুণ টেকেল ঠেকিয়ে দেন তাকে।

চাপে শুরু করার পর ইংল্যান্ডের খেলায় কিছুটা গতি আসে ১৫তম মিনিটের পর। তবে বড় সুযোগ তৈরী করতে পারছিলা সাউথগেটের দল।২৮ মিনিটে স্পেনের হয়ে একটা সুযোগ নিয়েছিলেন ফ্যাবিয়ান রুইজ। কিন্তু তাঁর শট ইংলিশ ডিফেন্ডার মার্ক গুয়েহির গায়ে লেগে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় অনায়াসে তালুবন্দী করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড।

প্রথমার্ধে বিবর্ণ ফুটবলের মাঝেও গোলের সেরা সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডই। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে এসে ডি বক্সের ভেতর রাখা ফ্রি কিক শটটা এসে পড়েছিল ফিল ফোডেনের পায়ে। তবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জল কাঁপাতে পারেননি তিনি। তার নেওয়া দুর্বল শট সহজেই ঠেকিয়ে দিয়েছে স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাঝমাঠের ভরসা রদ্রিকে উঠিয়ে আরেক মিডফিল্ডার মার্তিন জুবিমেন্দিকে মাঠে নামান স্পেন কোচ।তাতে বাড়ল গতি ফল এল দ্রুত।যদিও গোলের পুরো কৃতিত্ব আসর জুড়ে নজর কাড়া ইয়ামাল-উইলিয়ামস জুটির। ডান দিক থেকে ১৭ বছর বয়সী ইয়ামালের পাঠানো দুর্দান্ত পাস থেকে নিকো উইলিয়ামস খুঁজে নেন জাল।

ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত পারত দুই মিনিট পরেই। উইলিয়ামসের পাস পেয়ে বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে শট নেন দানি ওলমো। কিন্তু সেটা চলে যায় বাইরে দিয়ে।

খেলার বিপরীতে ইংল্যান্ড সমতা ফেরায় ৭৩ তম মিনিটে। টানেন তিন মিনিট আগেই বদলি নামা পালমার। বুকায়ো সাকার পাস বক্সে ধরে শট নেওয়ার মতো জায়গা না পেয়ে ব্যাকপাস করেন বেলিংহ্যাম, আর ২২ গজ দূর থেকে জোরাল শটে সমতা ফেরান মাত্র তিন মিনিট আগে মাঠে নামা পালমার।সেমিতে তার এসিস্টেই শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ওয়াটকিন্স।

৮২তম মিনিটে ইংল্যান্ডকে ছিটকে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ইয়ামাল। তার জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। বেশিক্ষণ অবশ্য অপেক্ষায় থাকতে হয়নি স্পেনকে।

মোরাতার বদলি নামা মিকেল ওইয়ারসাবাল। ৮৬ মিনিটে কুকুরেয়ার সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে নেওয়া দুর্দান্ত এক শটে তিনি স্তব্দ করে দেন বার্লিনের ইংলিশ সমর্থকদের।

ইংল্যান্ড আবার ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ দিকে। পালমারের কর্নার থেকে আসা বলে ডেক্লান রাইসের দারুণ হেড ফিরিয়ে দেন উনাই সিমন। ফিরতি বলে হেড করেন মার্ক গুয়েহি। এবার একেবারে গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন দানি ওলমো।সেখানেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ,নির্ধারিত হয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন।

আর তাতে আশায় বুকবাঁধা ইংলিশদের ‘ইটস কামিং হোম’ স্লোগান আরও একবার মিইয়ে গেল হতাশায়।আরও বাড়ল ৫৮ বছরের শিরোপা খরার আক্ষেপ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

ইংল্যান্ডের আক্ষেপ বাড়িয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেন

আপডেট সময় : ০৯:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

 

২০০৮ সালের ইউরোর পর ২০১০ সালের বিশ্বকাপ। ২০১২ সালে ফের ইউরো।স্পেনের সোনালি প্রজন্ম টানা দুই ইউরো ও বিশ্বকাপ জেতার পর মাঝে এক যুগ শিরোপা খরায় ছিল দলটি।তবে তরুণদের নিয়ে গড়া লুইস দে ফুয়েন্তের দল সে প্রতীক্ষার অবসান ঘটাল।

বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রোববার রাতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে স্পেন।স্পেনের নিকো উলিয়ামস ও মিকেল ওইয়ারসাবালের গোলের মাঝে ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটা কোল পালমারের।তিনটিই গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে।

ফলে টানা দ্বিতীয়াবার ফাইনালে হারের বেদনায় নীল হতে হল ইংল্যান্ডকে।আরও বাড়ল প্রথম ইউরো ট্রফি জয়ের প্রতীক্ষা।বাড়ল কিংবদন্তী ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনের শূন্য হাতে ক্যারিয়ার শেষের সম্ভাবনাও।অন্যদিকে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে চতুর্থবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলো স্প্যানিশরা।ফ্রান্স ও জার্মানি তিনবার করে শিরোপা জিতেলও চারবার মহাদেশের সেরা হওয়ার কীর্তি নেই ইউরোপের আর কোনো দলেরই।

জার্মানির বার্লিনে এদিন স্পেন কোচ লুইস ডে লা ফুয়েন্তে চতুর্থ ইউরোর মিশনে লাইনআপ সাজিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ ফরম্যাশনে। অন্যদিকে প্রথমবার শিরোপা জিততে ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের আস্থা ৩-৪-২-১ ফরম্যাশনে।

তবে মাঠের দাপটে এদিন একচেটিয়াভাবে এগিয়ে ছিল স্পেন।প্রথমার্ধে প্রায় ৭০ শতাংশ বল এ দখলে রেখেছিল স্পেন। বিপরীতে ৩০ শতাংশ বল দখলে রাখতে পেরেছে ইংল্যান্ড।

টানা ছয় জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফাইনালে নামা ইয়ামাল-উইলিয়ামসরা ক্ষণে ক্ষণে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন ইংলিশ রক্ষণভাগের।তবে প্রথমার্ধে আসেনি সফলতা।দশম মিনিটে লেফট উইংয়ে নিকো উইলিয়ামস গতি দিয়ে সুযোগ তৈরীর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু জোন স্টোন্স দারুণ টেকেল ঠেকিয়ে দেন তাকে।

চাপে শুরু করার পর ইংল্যান্ডের খেলায় কিছুটা গতি আসে ১৫তম মিনিটের পর। তবে বড় সুযোগ তৈরী করতে পারছিলা সাউথগেটের দল।২৮ মিনিটে স্পেনের হয়ে একটা সুযোগ নিয়েছিলেন ফ্যাবিয়ান রুইজ। কিন্তু তাঁর শট ইংলিশ ডিফেন্ডার মার্ক গুয়েহির গায়ে লেগে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় অনায়াসে তালুবন্দী করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড।

প্রথমার্ধে বিবর্ণ ফুটবলের মাঝেও গোলের সেরা সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডই। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে এসে ডি বক্সের ভেতর রাখা ফ্রি কিক শটটা এসে পড়েছিল ফিল ফোডেনের পায়ে। তবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জল কাঁপাতে পারেননি তিনি। তার নেওয়া দুর্বল শট সহজেই ঠেকিয়ে দিয়েছে স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাঝমাঠের ভরসা রদ্রিকে উঠিয়ে আরেক মিডফিল্ডার মার্তিন জুবিমেন্দিকে মাঠে নামান স্পেন কোচ।তাতে বাড়ল গতি ফল এল দ্রুত।যদিও গোলের পুরো কৃতিত্ব আসর জুড়ে নজর কাড়া ইয়ামাল-উইলিয়ামস জুটির। ডান দিক থেকে ১৭ বছর বয়সী ইয়ামালের পাঠানো দুর্দান্ত পাস থেকে নিকো উইলিয়ামস খুঁজে নেন জাল।

ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত পারত দুই মিনিট পরেই। উইলিয়ামসের পাস পেয়ে বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে শট নেন দানি ওলমো। কিন্তু সেটা চলে যায় বাইরে দিয়ে।

খেলার বিপরীতে ইংল্যান্ড সমতা ফেরায় ৭৩ তম মিনিটে। টানেন তিন মিনিট আগেই বদলি নামা পালমার। বুকায়ো সাকার পাস বক্সে ধরে শট নেওয়ার মতো জায়গা না পেয়ে ব্যাকপাস করেন বেলিংহ্যাম, আর ২২ গজ দূর থেকে জোরাল শটে সমতা ফেরান মাত্র তিন মিনিট আগে মাঠে নামা পালমার।সেমিতে তার এসিস্টেই শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ওয়াটকিন্স।

৮২তম মিনিটে ইংল্যান্ডকে ছিটকে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ইয়ামাল। তার জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। বেশিক্ষণ অবশ্য অপেক্ষায় থাকতে হয়নি স্পেনকে।

মোরাতার বদলি নামা মিকেল ওইয়ারসাবাল। ৮৬ মিনিটে কুকুরেয়ার সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে নেওয়া দুর্দান্ত এক শটে তিনি স্তব্দ করে দেন বার্লিনের ইংলিশ সমর্থকদের।

ইংল্যান্ড আবার ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ দিকে। পালমারের কর্নার থেকে আসা বলে ডেক্লান রাইসের দারুণ হেড ফিরিয়ে দেন উনাই সিমন। ফিরতি বলে হেড করেন মার্ক গুয়েহি। এবার একেবারে গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন দানি ওলমো।সেখানেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ,নির্ধারিত হয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন।

আর তাতে আশায় বুকবাঁধা ইংলিশদের ‘ইটস কামিং হোম’ স্লোগান আরও একবার মিইয়ে গেল হতাশায়।আরও বাড়ল ৫৮ বছরের শিরোপা খরার আক্ষেপ।