ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

আইপিএলে প্লে-অফের লড়াই জমিয়ে তুলল দিল্লি

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪
  • / 70
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

চলতি আইপিএলে গ্রুপ পর্বের লড়াই প্রায় শেষের দিকে। প্রথম পর্বে আরও ১৬টি ম্যাচ বাকি। এখন পর্যন্ত কোনো দলই প্লে-অফ নিশ্চিত করতে পারেনি। প্লে-অফ খেলার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়নি কোনো দলের। তবে কোনো কোনো দলের জন্য সমীকরণটা খুবই সহজ, আর কিছু দলের জন্য প্রায় অসম্ভবই।

সর্বশেষ গতকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচে আসরের অন্যতম সফল দল রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে সেই লড়াই আরও জমিয়ে তুলল দিল্লি ক্যাপিটালস। ঋষভ পান্তদের দেওয়া ২২২ রানের লক্ষ্য প্রায় ধরে ফেলেছিল সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান। শেষ পর্যন্ত সেটি আর হতে দেননি কুলদীপ যাদব। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিল্লি ২০ রানের জয় পেয়েছে।

ঘরের মাঠ কোটলার অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এদিন আগে ব্যাট করে স্বাগতিক দিল্লি ৮ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন অভিষেক পোড়েল, মাত্র ১৯ বলে ঝোড়ো ফিফটি করেন জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক। সেই রান তাড়ায় পাল্টা বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন। তবে তার ৪৬ বলে ৮৬ রানের ইনিংস শেষ পর্যন্ত বৃথা গেল। আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারায় রাজস্থান ২০১ রানে থামে।

ফলে চলতি আইপিএলে ষষ্ঠ জয় তুলে নিলো দিল্লি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট চার দল জিতেছে ছয়টি করে। এছাড়া শীর্ষ দুইয়ে থাকা কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রাজস্থান আটটি করে জিতেছে, তাদের প্লে-অফে ওঠা প্রায় নিশ্চিত। বাকি চারদল ছয়টি করে জেতায় মূলত এই লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য দিল্লি কিছুটা পিছিয়ে, ইতোমধ্যে তারা ১২ ম্যাচ খেলে ফেলেছে, আর বাকি দুই ম্যাচ। তাদের সমান ম্যাচ জেতা দলগুলোর সামনে আরও তিনটি করে খেলা রয়েছে।

এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল দিল্লি। অস্ট্রেলিয়ান তরুণ ম্যাকগার্কের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরিই তাদের শক্ত ভিত গড়ে দেয়। পরে ম্যাকগার্ককে যোগ্য সঙ্গ দেন অভিষেক পোড়েল। ম্যাকগার্ক তো প্রথম চার ওভারেই পিটিয়ে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন। বিশেষ করে চতুর্থ ওভারে আভেশ খান বল করতে এলে, চারটি চার ও দুই ছক্কায় ওই ওভারেই নেন ২৮ রান। পরে চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ফের ছয় হাঁকিয়ে ম্যাকগার্ক নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ১৯ বলে এদিন অর্ধশতরান করেন তিনি। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৭টি চার ও তিনটি ছক্কায়। তবে ফিফটি পূর্ণ করার পরের বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ফুলটস মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন ম্যাকগার্ক।

তবে তিনি যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখন দিল্লির রান দাঁড়ায় ৪.২ ওভারে ৬০ রান। তবে যেভাবে ভাবা হচ্ছিল সেভাবে এগোয়নি দিল্লির ইনিংস। এরপর দ্রুত তিন উইকেট পড়ায় তাদের রানের গতি কিছুটা কমে যায়। তবে হাল ধরে রেখেছিলেন অভিষেক। তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন ২৮ বলে। পরে তাকেও ফেরান সেই অশ্বিন, মূলত অভিজ্ঞ এই স্পিনারের বদৌলতে ম্যাচে ফেরার ব্রেকথ্রু পায় রাজস্থান। ৭টি চার, তিনটি ছক্কার সৌজন্যে ৩৬ বলে ৬৫ রান করেন অভিষেক।

মাঝে ব্যাট হাতে ব্যর্থ শাই হোপ (১ বলে ১) এবং অক্ষর প্যাটেলের (১০ বলে ১৫) পর হতাশ করেছেন দিল্লির অধিনায়ক পান্তও। পাঁচে নেমে তিনি ১৫ রান (১৩ বল) করে ফেরেন। তবে শেষদিকে তাদের সেই অবস্থান থেকে টেনে তোলেন ত্রিস্তান স্টাবস। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটার ৩টি করে চার এবং ছক্কায় ২০ বলে ৪১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। তাতেই বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় দিল্লি। রাজস্থানের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন অশ্বিন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট, সন্দ্বীপ শর্মা এবং যুজবেন্দ্র চাহাল।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে রাজস্থান মুখ থুবড়ে পড়ে। অধিনায়ক স্যামসন ছাড়া বাকিরা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেননি। দ্রুত ফিরেছেন ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (২ বলে ৪) ও জস বাটলার (১৭ বলে ১৯)। তিনে নেমে স্যামসন রায়ান পরাগের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে পরাগ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩টি ছক্কা, একটি চারে তিনি ২২ বলে ২৭ করে ফেরেন। একা লড়াই চালিয়ে চান স্যামসন। ২৮ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতরান। প্রতি ওভারে ১০ রানের বেশি হওয়ায় জয়ের পথেই এগোচ্ছিল রাজস্থান।

স্যামসনকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন শুভম দুবে। তবে ২টি করে ছয় এবং চারের সৌজন্যে ১২ বলে ২৫ রান করে তিনি আউট হয়ে যান। অবশ্য তার আগেই সাজঘরে ফেরেন স্যামসনও। ৬টি ছক্কা এবং ৮টি চারের মারে ৪৬ বলে ৮৬ রান করে আউট রাজস্থান অধিনায়ক। স্যামসন-দুবের পর রভম্যান পাওয়েলের (১০ বলে ১৩) বিদায়ে দলটির আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তারা ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে।

দিল্লির হয়ে মুকেশ কুমার, খলিল আহমেদ এবং কুলদীপ যাদব ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট শিকার করেন অক্ষর প্যাটেল এবং রাশিখ সালাম।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

আইপিএলে প্লে-অফের লড়াই জমিয়ে তুলল দিল্লি

আপডেট সময় : ০৯:১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪

 

চলতি আইপিএলে গ্রুপ পর্বের লড়াই প্রায় শেষের দিকে। প্রথম পর্বে আরও ১৬টি ম্যাচ বাকি। এখন পর্যন্ত কোনো দলই প্লে-অফ নিশ্চিত করতে পারেনি। প্লে-অফ খেলার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়নি কোনো দলের। তবে কোনো কোনো দলের জন্য সমীকরণটা খুবই সহজ, আর কিছু দলের জন্য প্রায় অসম্ভবই।

সর্বশেষ গতকালের (মঙ্গলবার) ম্যাচে আসরের অন্যতম সফল দল রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে সেই লড়াই আরও জমিয়ে তুলল দিল্লি ক্যাপিটালস। ঋষভ পান্তদের দেওয়া ২২২ রানের লক্ষ্য প্রায় ধরে ফেলেছিল সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থান। শেষ পর্যন্ত সেটি আর হতে দেননি কুলদীপ যাদব। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিল্লি ২০ রানের জয় পেয়েছে।

ঘরের মাঠ কোটলার অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এদিন আগে ব্যাট করে স্বাগতিক দিল্লি ৮ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন অভিষেক পোড়েল, মাত্র ১৯ বলে ঝোড়ো ফিফটি করেন জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক। সেই রান তাড়ায় পাল্টা বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন রাজস্থান অধিনায়ক স্যামসন। তবে তার ৪৬ বলে ৮৬ রানের ইনিংস শেষ পর্যন্ত বৃথা গেল। আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে না পারায় রাজস্থান ২০১ রানে থামে।

ফলে চলতি আইপিএলে ষষ্ঠ জয় তুলে নিলো দিল্লি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট চার দল জিতেছে ছয়টি করে। এছাড়া শীর্ষ দুইয়ে থাকা কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রাজস্থান আটটি করে জিতেছে, তাদের প্লে-অফে ওঠা প্রায় নিশ্চিত। বাকি চারদল ছয়টি করে জেতায় মূলত এই লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য দিল্লি কিছুটা পিছিয়ে, ইতোমধ্যে তারা ১২ ম্যাচ খেলে ফেলেছে, আর বাকি দুই ম্যাচ। তাদের সমান ম্যাচ জেতা দলগুলোর সামনে আরও তিনটি করে খেলা রয়েছে।

এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল দিল্লি। অস্ট্রেলিয়ান তরুণ ম্যাকগার্কের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরিই তাদের শক্ত ভিত গড়ে দেয়। পরে ম্যাকগার্ককে যোগ্য সঙ্গ দেন অভিষেক পোড়েল। ম্যাকগার্ক তো প্রথম চার ওভারেই পিটিয়ে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন। বিশেষ করে চতুর্থ ওভারে আভেশ খান বল করতে এলে, চারটি চার ও দুই ছক্কায় ওই ওভারেই নেন ২৮ রান। পরে চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ফের ছয় হাঁকিয়ে ম্যাকগার্ক নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ১৯ বলে এদিন অর্ধশতরান করেন তিনি। তার ইনিংস সাজানো ছিল ৭টি চার ও তিনটি ছক্কায়। তবে ফিফটি পূর্ণ করার পরের বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ফুলটস মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন ম্যাকগার্ক।

তবে তিনি যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখন দিল্লির রান দাঁড়ায় ৪.২ ওভারে ৬০ রান। তবে যেভাবে ভাবা হচ্ছিল সেভাবে এগোয়নি দিল্লির ইনিংস। এরপর দ্রুত তিন উইকেট পড়ায় তাদের রানের গতি কিছুটা কমে যায়। তবে হাল ধরে রেখেছিলেন অভিষেক। তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন ২৮ বলে। পরে তাকেও ফেরান সেই অশ্বিন, মূলত অভিজ্ঞ এই স্পিনারের বদৌলতে ম্যাচে ফেরার ব্রেকথ্রু পায় রাজস্থান। ৭টি চার, তিনটি ছক্কার সৌজন্যে ৩৬ বলে ৬৫ রান করেন অভিষেক।

মাঝে ব্যাট হাতে ব্যর্থ শাই হোপ (১ বলে ১) এবং অক্ষর প্যাটেলের (১০ বলে ১৫) পর হতাশ করেছেন দিল্লির অধিনায়ক পান্তও। পাঁচে নেমে তিনি ১৫ রান (১৩ বল) করে ফেরেন। তবে শেষদিকে তাদের সেই অবস্থান থেকে টেনে তোলেন ত্রিস্তান স্টাবস। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটার ৩টি করে চার এবং ছক্কায় ২০ বলে ৪১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন। তাতেই বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় দিল্লি। রাজস্থানের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন অশ্বিন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট, সন্দ্বীপ শর্মা এবং যুজবেন্দ্র চাহাল।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে রাজস্থান মুখ থুবড়ে পড়ে। অধিনায়ক স্যামসন ছাড়া বাকিরা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেননি। দ্রুত ফিরেছেন ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (২ বলে ৪) ও জস বাটলার (১৭ বলে ১৯)। তিনে নেমে স্যামসন রায়ান পরাগের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে পরাগ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩টি ছক্কা, একটি চারে তিনি ২২ বলে ২৭ করে ফেরেন। একা লড়াই চালিয়ে চান স্যামসন। ২৮ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতরান। প্রতি ওভারে ১০ রানের বেশি হওয়ায় জয়ের পথেই এগোচ্ছিল রাজস্থান।

স্যামসনকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন শুভম দুবে। তবে ২টি করে ছয় এবং চারের সৌজন্যে ১২ বলে ২৫ রান করে তিনি আউট হয়ে যান। অবশ্য তার আগেই সাজঘরে ফেরেন স্যামসনও। ৬টি ছক্কা এবং ৮টি চারের মারে ৪৬ বলে ৮৬ রান করে আউট রাজস্থান অধিনায়ক। স্যামসন-দুবের পর রভম্যান পাওয়েলের (১০ বলে ১৩) বিদায়ে দলটির আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তারা ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে।

দিল্লির হয়ে মুকেশ কুমার, খলিল আহমেদ এবং কুলদীপ যাদব ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট শিকার করেন অক্ষর প্যাটেল এবং রাশিখ সালাম।