মুস্তাফিজের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ০৯:৪৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
- / 60
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ ছিল হতাশায় মোড়ানো। শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে অস্তিত্ব রক্ষার। কারণ, হারলেই আনকোরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পাবে বাংলাদেশ। এমন ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নামা যুক্তরাষ্ট্রকে বেশিদূর যেতে দেয়নি বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অল্প রানে থামিয়েছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রকে আটকে দিয়েছিলেন মাত্র ১০৪ রানে। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় এবার আর ভেঙে পড়েনি টপ অর্ডার। বারবার হতাশায় ডোবানো ওপেনাররাই নেন দায়িত্ব। সৌম্য-তানজিদের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশও পেয়ে যায় জয়ের সীমানা। যুক্তরাষ্ট্রকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ১০ উইকেটে। যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়া জয়। এর আগে কখনও এই ফরম্যাটে ১০ উইকেটে জেতেনি লাল-সবুজের দল। বাংলাদেশের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ২-১ ব্যবধানে। যার মধ্যে প্রথম দুটিতে জিতে সিরিজ পকেটে পুরেছে স্বাগতিকরা।
বিশ্বকাপের আগে স্রেফ প্রস্তুতির জন্য সিরিজটি খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে প্রস্তুতির বদলে শুধুই মেলে হতাশা। টানা দুই হারের পর অবশেষে শেষটিতে মিলল স্বস্তির সুবাতাস। ঠিক যেমনটা চেয়েছিল তারই প্রতিফলন হলো শেষ ম্যাচে।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ওপেনাররাই নেন দায়িত্ব। ভেঙে না পড়ে শুরু থেকেই দারুণভাবে। তানজিদ তামিম ও সৌম সরকার দুজনেই খেলেছেন টি-টোয়েন্টি সুলভ। তাতে বাংলাদেশ ৫০ বল হাতে রেখেই পেয়ে গেল জয়ের দেখা। ইনিংস শেষ করার পথে ব্যাট হাতে ৫৮ রান করেন তামিম। ৪২ বলে যা সাজানো ৩টি ছক্কা ও ৫টি চারে। আর দুই ছক্কা ও ৪ চারে ২৮ বলে ৪৩ রান করে সৌম্য। এই জয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে বাংলাদেশ।
এর আগে টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রায়ারে স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১০৪ রান তোলে যুক্তরাষ্ট্র। বল হাতে মুস্তাফিজ ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে এটাই বাঁহাতি পেসারের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। আগেরটি ছিল ২২ রানে পাঁচ উইকেট।
এদিন টস জিতে বোলিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতে বোলিংটা মনমতো হয়নি। বরং ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ান্ত শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। দুই ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গির ও অ্যান্ড্রিস গিউস মিলে শুরুর জুটিতেই তোলেন ৪৬ রান। পঞ্চম ওভারে গিউসের আউটে ভাঙে এই জুটি।
সৌম্য সরকারের হাতে লং অনে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। আর গিউস ফেরেন ১৫ বলে ২৭ রান করে।
সাকিবের পর স্বাগতিক শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারের শর্ট পিচ বল হাওয়ায় উড়াতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন আরেক ওপেনার শায়ান (১৮)।
ওয়ানডাউনে নামা নিতিশ কুমারকেও টিকতে দেননি মুস্তাফিজ। বাংলাদেশি পেসারের অফ কাটারে উইকেটকিপার লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিতিশ। এরপর নামা অ্যারন জোন্সকে আউট করেন তানজিম সাকিব।
দ্রুত উইকেট হারিয়ে রানের গতি কমে যুক্তরাষ্ট্রের। সেই ধাক্কা সামলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কোরে অ্যান্ডারসন। তবে,পারেননি ইনিংস বড় করতে। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে অ্যান্ডারসন সহ জোড়া উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসারের বোলিং দাপটের দিনে বেশিদূর যেতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। নির্ধারিত ওভারে থমকে যায় ১০৪ রানে।
বল হাতে মুস্তাফিজ ছাড়াও চার ওভারে সাত রান দিয়ে রিশাদ নেন একটি। সাকিবের শিকারও একটি। বেশি রান খরচ করা তানজিম সাকিব ৩২ রানের বিপরীতে নেন সমান একটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
যুক্তরাষ্ট্র: ২০ ওভারে ১০৪/৯ (জাহাঙ্গির ১৮, গাউস ২৭, নিতিশ ৩, মিলিন্দ ৭, জোন্স ২, অ্যান্ডারসন ১৮, স্কালকয়েক ১২, জাসদিপ ৬, নিসার্গ ২, কেজিগে ১*; তানজিম ৪-১-৩২-১, হাসান ৩-০-১৯-০, সাকিব ৩-০-২৩-১, মুস্তাফিজ ৪-১-১০-৬, রিশাদ ৪-১-৭-১, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১১-০)।
বাংলাদেশ: ১১.৪ ওভারে ১০৮/০ (তানজিদ ৫৮*, সৌম্য ৪৩*; নেত্রাভাল্কার ২-০-২৫-০, জাসদিপ ২-০-১০-০, স্কালকয়েক ১-০-১৪-০, মিলিন্দ ৪-০-২৫-০, নিতিশ ১-০-১১-০, কেজিগে ১-০-১০-০, নিসার্গ ০.৪-০-৬-০)।
ফল: বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজ যুক্তরাষ্ট্র ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
নিউজটি শেয়ার করুন