ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 

পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে ‘বাংলাওয়াশ’

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 37
ডেইলি আর্থ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

একবারই মাত্র নিজেদের মাটিতে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের কাছে। এবার দ্বিতীয়বারের মত সেই লজ্জার মুখোমুখি হলো তারা। এবার তারা হলো ‘বাংলাওয়াশ’।

টেস্ট ক্রিকেটে সব সময়ই শক্তিশালী পাকিস্তান। ঘরের মাঠে তো দুর্বোধ্যই। কিন্তু সেই দলটি নিজেদের মাঠে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের কাছে হারলো ২-০ ব্যবধানে।

ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে – বাংলাদেশের কাছে একরকম অসহায় আত্মসমর্পন করেছে শান মাসুদের দল। ঘরের মাঠে সর্বশেষ করে এতটা অসহায় হয়েছিলো তারা, পরিসংখ্যান ঘেঁটে বের করতে হবে। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে হারলো ৬ উইকেটের ব্যাবধানে।

পাকিস্তানি বোলিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল বৃষ্টির চোখ রাঙানিও। কিন্তু কোনো কিছুই দমাতে পারেনি অদম্য টাইগারদের। পূর্ণ শক্তির পাকিস্তান দলকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে সিরিজ জয় করে নিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

মাত্র ১৮৪ রানের পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশকে আটকানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের। স্বাগতিক দলের কোচ জেসন গিলেস্পি বলেছিলেন, শেষ বল পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তারা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মরণপণ লড়াইও করে পাকিস্তানের বোলাররা। তবে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দৃঢ়তায় স্বাগতিকদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। হাসিতে মুখ উজ্জ্বল হয় বাংলাদেশেরই।

রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এতে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবায় টাইগাররা। এই জয়ে পাকিস্তানিদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

এ নিয়ে বিদেশের মাটিতে তৃতীয়বার টেস্ট সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এটিই ছিল দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়। এরপর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জিতে দ্বিতীয় সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

সদ্যসমাপ্ত সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও ৬টি সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে সিরিজ তো দূরের কথা, একটি ম্যাচও জেতেনি বাংলাদেশিরা। এসব সিরিজের আওতায় ১৩টি ম্যাচ খেলে কেবল একটিতে ড্র, বাকি ১২টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

আজ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তখন জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৪৩ রান।

নতুন দিনে ৫ ওভার ব্যাট করে ১৬ রান যোগ করেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। এরপর ১২তম ওভারে মীর হামজার বলে বোল্ড হয়ে যান জাকির। ৩৯ বলে ৪০ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটার। এতে ৫৮ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশের।

কিছুক্ষণ পরই উইকেট বিলিয়ে দেন আরেক ওপেনার সাদমান। ৫১ বলে ২৪ রান করে খুররম শেহজাদের বলে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ৭০ রানে পতন হয় দ্বিতীয় উইকেটের।

মুমিনুল হকের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি করে মধ্যাহ্নবিরতিতে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু বিরতি থেকে এসেই পাকিস্তান স্পিনার সালমান আলি আগার বলে আব্দুল্লাহ শফিকের হাতে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ৮২ বলে ৩৮ রান করে ফেরত যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় মিডঅনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন মুমিনুল। আবরার আহমেদের বলে মিডঅনে থাকা ফিল্ডার সাইম আইয়ুবের কাছে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ৭১ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩০ রানের।

বাকি ৩০ রান বেশভাবেই কুড়িয়ে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ২২ আর সাকিব ২১ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে রাওয়ালপিন্ডির মাঠ ছাড়েন।

এর আগে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার তাণ্ডবে গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে বাংলাদেশ লক্ষ্য পায় ১৮৫ রানের। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফার পূর্ণ করেন হাসান। আর ৪ উইকেট নেন দ্রুতগতির পেসার নাহিদ। বাকি এক উইকেট যায় তাসকিন আহমেদের পকেটে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

 

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

 

ট্যাগস :

 

 

পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে ‘বাংলাওয়াশ’

আপডেট সময় : ০৪:৪২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

একবারই মাত্র নিজেদের মাটিতে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের কাছে। এবার দ্বিতীয়বারের মত সেই লজ্জার মুখোমুখি হলো তারা। এবার তারা হলো ‘বাংলাওয়াশ’।

টেস্ট ক্রিকেটে সব সময়ই শক্তিশালী পাকিস্তান। ঘরের মাঠে তো দুর্বোধ্যই। কিন্তু সেই দলটি নিজেদের মাঠে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের কাছে হারলো ২-০ ব্যবধানে।

ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে – বাংলাদেশের কাছে একরকম অসহায় আত্মসমর্পন করেছে শান মাসুদের দল। ঘরের মাঠে সর্বশেষ করে এতটা অসহায় হয়েছিলো তারা, পরিসংখ্যান ঘেঁটে বের করতে হবে। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে হারলো ৬ উইকেটের ব্যাবধানে।

পাকিস্তানি বোলিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল বৃষ্টির চোখ রাঙানিও। কিন্তু কোনো কিছুই দমাতে পারেনি অদম্য টাইগারদের। পূর্ণ শক্তির পাকিস্তান দলকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে সিরিজ জয় করে নিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

মাত্র ১৮৪ রানের পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশকে আটকানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের। স্বাগতিক দলের কোচ জেসন গিলেস্পি বলেছিলেন, শেষ বল পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তারা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মরণপণ লড়াইও করে পাকিস্তানের বোলাররা। তবে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দৃঢ়তায় স্বাগতিকদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। হাসিতে মুখ উজ্জ্বল হয় বাংলাদেশেরই।

রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এতে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবায় টাইগাররা। এই জয়ে পাকিস্তানিদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

এ নিয়ে বিদেশের মাটিতে তৃতীয়বার টেস্ট সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এটিই ছিল দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়। এরপর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জিতে দ্বিতীয় সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

সদ্যসমাপ্ত সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও ৬টি সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে সিরিজ তো দূরের কথা, একটি ম্যাচও জেতেনি বাংলাদেশিরা। এসব সিরিজের আওতায় ১৩টি ম্যাচ খেলে কেবল একটিতে ড্র, বাকি ১২টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

আজ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তখন জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৪৩ রান।

নতুন দিনে ৫ ওভার ব্যাট করে ১৬ রান যোগ করেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। এরপর ১২তম ওভারে মীর হামজার বলে বোল্ড হয়ে যান জাকির। ৩৯ বলে ৪০ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটার। এতে ৫৮ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশের।

কিছুক্ষণ পরই উইকেট বিলিয়ে দেন আরেক ওপেনার সাদমান। ৫১ বলে ২৪ রান করে খুররম শেহজাদের বলে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ৭০ রানে পতন হয় দ্বিতীয় উইকেটের।

মুমিনুল হকের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি করে মধ্যাহ্নবিরতিতে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু বিরতি থেকে এসেই পাকিস্তান স্পিনার সালমান আলি আগার বলে আব্দুল্লাহ শফিকের হাতে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ৮২ বলে ৩৮ রান করে ফেরত যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় মিডঅনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন মুমিনুল। আবরার আহমেদের বলে মিডঅনে থাকা ফিল্ডার সাইম আইয়ুবের কাছে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ৭১ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩০ রানের।

বাকি ৩০ রান বেশভাবেই কুড়িয়ে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ২২ আর সাকিব ২১ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে রাওয়ালপিন্ডির মাঠ ছাড়েন।

এর আগে হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার তাণ্ডবে গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে বাংলাদেশ লক্ষ্য পায় ১৮৫ রানের। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফার পূর্ণ করেন হাসান। আর ৪ উইকেট নেন দ্রুতগতির পেসার নাহিদ। বাকি এক উইকেট যায় তাসকিন আহমেদের পকেটে।